গতকাল (শনিবার, ৬ ডিসেম্বর) রাজধানীর কারওয়ান বাজারে দেখা গেছে, পাইকারিতে ছোট বড় আকারের পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১৩৫ থেকে ১৪৪ টাকায়, যা খুচরায় কিনতে ক্রেতাকে গুনতে হচ্ছে ১৬০ টাকা পর্যন্ত। বেশি দামের কারণে কেউ কেউ তো পেঁয়াজ না কিনেই বাসায় ফিরছেন।
ক্রেতারা জানান, গত সপ্তাহেও পেঁয়াজ কিনেছেন তারা। কিন্তু এ সপ্তাহে দামের এত বাড়তি দেখে পেঁয়াজ না কিনেই বাড়ি ফিরতে হচ্ছে তাদের।
কেজিতে ৫০ থেকে ৬০ টাকা দাম বাড়ার পর বাজারে কিছুটা বিক্রি কমেছে পেঁয়াজের। যদিও বিক্রেতাদের দাবি দাম তেমন বাড়েনি। আবার কোনো কোনো বিক্রেতা বাড়তি দামের দায় চাপালেন কৃষক ও আড়তদারদের ঘাড়ে।
বিক্রেতারা জানান, আমদানি কমে যাওয়ায় দাম বেড়ে গেছে। আবার নতুন পেঁয়াজ আমদানি হলে দাম কমে যাবে।
এদিকে হঠাৎ করে পেঁয়াজের দাম বাড়ার পেছনে বর্তমান সরকারের উদাসীনতা আছে বলে মনে করছেন বাজার বিশ্লেষক ও সাবেক কৃষি সচিব আনোয়ার ফারুক। তিনি বলেন, আগেভাগে ব্যবস্থা নিলে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো না।
আরও পড়ুন:
বাজার বিশ্লেষক আনোয়ার ফারুক বলেন, ‘এই যে গত এক মাস কনজ্যুমাররা সাফার করলো পেঁয়াজের দামে, ৫৫-৬০ টাকা থেকে আজকে ১৫০-১৬০ টাকা হয়ে গেলো। এই যে মাঝে একটা ব্যবসায়ী গ্রুপ ব্যবসা করে গেলো এটা হল সরকারের ব্যর্থতা। সরকার জেনে হোক না বুঝে হোক কাজটা করেছে। এটা নভেম্বরের শেষে যদি কিছু পেঁয়াজ আমদানির এলসিটা ওপেন করে দিতেন, আইপি ইস্যুটা করতেন তাহলে কিন্তু আজকে এ পরিস্থিতি হয় না।’
অন্যদিকে, সরকারের কাছে পেঁয়াজ উৎপাদনের যে তথ্য আছে তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন কনজিউমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সভাপতি এ এইচ এম সফিকুজ্জামান। তিনি বলেন, ভোক্তার পকেট কাটার দায় নিতে হবে সরকারকে।
ক্যাবের সভাপতি এ এইচ এম সফিকুজ্জামান বলেন, ‘প্রতিদিন আমার যে ৭০ থেকে ৮০ টাকা ভোক্তারা অতিরিক্ত দামে কিনছেন। প্রতিদিন ৫ হাজার টন পেঁয়াজ লাগে। প্রতিদিন ৫ হাজার টন পেঁয়াজ যদি অতিরিক্ত ৮০ টাকা দামে কিনে তাহলে ভোক্তার সাথে এটা এক ধরনের প্রতারণা। ভোক্তার পকেট থেকে এ টাকাটা চলে যাচ্ছে। এজন্য আমি দায়ী করবো সরকারের সিদ্ধান্তহীনতা। আমি কিন্তু অনেকদিন ধরেই বলছিলাম এবারে উৎপাদনের যে তথ্য দেয়া হচ্ছে তা সঠিক নয়।’
প্রতিবছর ডিসেম্বর মাসের দিকে বাজারে মুড়িকাটা পেঁয়াজ উঠলেও, এবার এখনও আসেনি। এসব কারণের সঙ্গে সঠিক সময়ে আমদানি না করায় পাইকারি ও খুচরা বাজারে পেঁয়াজের দাম বাড়ছে বলে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্টরা।





