জ্বালানি তেলের উত্তোলন বাড়ানোর পরিকল্পনা ওপেক জোটের

তেল অনুসন্ধানের পরিকল্পনা আমাজন বনে

জ্বালানি তেলের উত্তোলন | ছবি: সংগৃহীত
0

আগস্ট থেকে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দৈনিক উত্তোলন এক লাখ ৩৭ হাজার ব্যারেল বাড়ানোর পরিকল্পনা নিয়েছে ওপেক প্লাস জোট। বৈশ্বিক অর্থনীতিকে স্থিতিশীল রাখতে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে গ্রুপটি। এদিকে তেলের উৎপাদন বাড়াতে আমাজন বনে তেল অনুসন্ধানের পরিকল্পনা সম্প্রসারণ করেছে ব্রাজিল সরকার। এর প্রতিবাদে পরিবেশগত ঝুকির কথা তুলে ধরে ভিন্নধর্মী বিক্ষোভ করেছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল।

ইরান-ইসরাইল সংঘাতের জেরে হরমুজ প্রণালি বন্ধের হুমকি দেয় ইরান। এতেই অস্থির হয়ে উঠে জ্বালানি তেলের বাজার। যার বিরূপ প্রভাব পড়তে শুরু করে বিশ্ব অর্থনীতিতে। দুই পক্ষের সংঘাতে জ্বালানি তেলের দাম এক সপ্তাহের ব্যবধানে ব্যারেল প্রতি ৮০ ডলারে পৌঁছায়। যদিও যুদ্ধবিরতি ঘোষণার পর তা আবার ৬৭ ডলারে নেমে আসে।

এবার একটি বৈশ্বিক অর্থনীতিকে স্থিতিশীল ও সুস্থ বাজার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠায় তেল উত্তোলন বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ওপেকভূক্ত এবং রাশিয়াসহ অন্যান্য সহযোগী দেশ নিয়ে গঠিত ওপেক প্লাস। যদিও ২০২২ সাল থেকে তেলের দাম বাড়াতে উত্তোলন কমানোর নীতি গ্রহণ করেছিল ওপেক প্লাস। তবে ২০২৫ সালের মে মাস থেকে উল্টো পথে হাঁটছে জোটটি।

আগস্ট মাস থেকে অপরিশোধিত জ্বালানি তেল দৈনিক পাঁচ লাখ ৪৮ হাজার ব্যারেল উত্তোলনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ওপেক প্লাস। গত তিন মাস ধরে দৈনিক চার লাখ ১১ হাজার ব্যারেল তেল উত্তোলনের অনুমতি দেয়া হয়েছিল। বাজারের অবস্থার ওপর নির্ভর করে উত্তোলনের হার নির্ধারণ করা হবে বলে জানায় জোটটি।

বিশ্বে মোট তেলের প্রায় অর্ধেক সরবরাহ করে এই জোট। যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কনীতি, মধ্যপ্রাচ্য সংকট এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে বাড়ছে অর্থনৈতিক অস্থিরতা। তাই উৎপাদন বাড়িয়ে তেলে বাজার স্থিতিশীল রাখতে এ নিয়ে পাঁচ দফা উত্তোলন বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ওপেক প্লাস।

এদিকে তেলের উৎপাদন বৃদ্ধিতে আমাজন বনে তেল অনুসন্ধান সম্প্রসারণের পরিকল্পনা নিয়েছে ব্রাজিল সরকার। প্রতিবাদে কোপাকাবানা সমুদ্র সৈকতে অভিনব এক বিক্ষোভের আয়োজন করেছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। পরিবেশগত ঝুঁকির বিষয়টি তুলে ধরে সংগঠনটি।

সৈকতের বালিতে ডামি ডলফিনের ওপর গাছপালা ও তেলের মতো কালো তরল পদার্থ দিয়ে ঢেকে দেয়া হয়। সম্পূর্ণ অঞ্চলটিকে সতর্কতামূলক টেপ দিয়ে ঘিরে করে রাখা হয়েছে। সাইনবোর্ড লেখা ‘সবকিছু তেল দিয়ে শুরু এবং তেল দিয়েই শেষ’।

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ব্রাজিলের প্রোগ্রাম ডিরেক্টর আলেকজান্দ্রা মন্টগোমেরি বলেন, ‘বিশ্ব নেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য অভিনব এই বিক্ষোভের আয়োজন করা হয়েছে। আমাজন নদীর ডলফিনগুলো হুমকির মুখে আছে সেগুলো তুলে ধরা হয়েছে। জীবাশ্ম জ্বালানিতে বিনিয়োগ গোটা বিশ্বকে ঝুঁকিতে ফেলে দিচ্ছে।’

এক বিবৃতিতে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল জানায়, আমাজনে তেল অনুসন্ধানের জন্য মনোনীত কিছু অঞ্চলে পরিবেশগত প্রভাব মূল্যায়ন করা হয়নি। এতে ঝুঁকির মুখে আছে সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্য।

সংগঠনটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ‘এ ধরনের আয়োজন পরিবেশ সম্পর্কে সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করবে। এভাবে তেল উত্তোলন পরিবেশ ধ্বংস করে দিতে পারে

পরিবেশবাদী বিভিন্ন সংগঠনের অভিযোগ, কোনো ধরনের আপত্তি কানেই তুলছে না ব্রাজিল সরকার।

এসএস