ঝুট দিয়ে তৈরি পোশাক যাচ্ছে ভারতসহ মধ্যপ্রাচ্যে

ঝুট কাপড় কারখানা | ছবি: এখন টিভি
0

নীলফামারীর সৈয়দপুরে ঝুট কাপড় দিয়ে তৈরি নানা ধরনের পোশাক স্থানীয় বাজারের গণ্ডি ছাড়িয়ে এখন বিশ্ববাজারে। দামে কম ও মানে ভালো হওয়ায় এখানকার পোশাকের চাহিদা বাড়ছে। আর এই শিল্পকে ঘিরে কর্মসংস্থান হয়েছে অন্তত লক্ষাধিক মানুষের।

সৈয়দপুরের প্রায় প্রতিটি বাড়িই যেন ছোট ছোট পোশাক কারখানা। শহরটির বিভিন্ন পাড়া, মহল্লার রাস্তা দিয়ে হেঁটে গেলে কানে আসবে মেশিনের ঘটঘট শব্দ। এসব কারখানায় তৈরি হচ্ছে জ্যাকেট, ট্রাউজার, টি-শার্ট, থ্রি কোয়ার্টার প্যান্ট। তবে শীত ঘিরে এখন ব্যস্ততা বছরের অন্যান্য সময়ের চেয়ে বেশি।

বছর জুড়েই নানা ধরনের পোশাক তৈরি করেন কারিগররা। সৈয়দপুরে ছোট বড় মিলিয়ে গড়ে উঠেছে অন্তত ৪০০ থেকে ৫০০ পোশাক কারখানা। আর এসব কারখানায় কর্মসংস্থান হয়েছে প্রায় ১ লাখ শ্রমিক-কারিগরের। ঢাকা থেকে ঝুট কাপড়সহ নানা উপকরণ সংগ্রহ করেন গার্মেন্টস মালিকরা। এরপর চাহিদা অনুযায়ী তৈরি করেন পোশাক।

প্রতি কেজি ব্লেজারের ঝুট ৪০ থেকে ১৮০, জ্যাকেটের ৭০ থেকে ১৮০, গ্যাভার্ডিন প্যান্টের ৫০ থেকে ১৩০, জিন্সের ৫০ থেকে ১১০, জিপার ২৫ থেকে ৬০, সুতা ১৫০ থেকে ২৪০ টাকায় কিনে নিয়ে আসেন তারা।

সৈয়দপুর তৈরি শীতের এসব জ্যাকেট পাইকারি দামে বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ১১০০ টাকা পর্যন্ত।

জ্যাকেট ছাড়াও তৈরি হচ্ছে টি-শার্ট, হুডি ও প্যান্ট। দেশের বাজার ছাড়াও এখানকার তৈরি পোশাক রপ্তানি হচ্ছে ভারত, নেপাল ও ভুটানে। এমনকি হাতবদল হয়ে ভারত থেকে এসব পণ্য রপ্তানি হচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যেও। প্রতিবছর শুধু তৈরি পোশাক থেকেই সৈয়দপুরের রপ্তানি বাজার প্রায় ২৩ লাখ ডলার আর দেশের বাজার অন্তত ২০০ কোটি টাকা।

সৈয়দপুর ভাই ভাই গার্মেন্টস এর কর্ণধার মো. হানিফ বলেন, ' বিভিন্ন দেশের চাহিদা অনুযায়ী কপড় দিয়ে থাকি। যেমন, ভারতের কলকাতায় থ্রি কোয়ার্টার এর চাহিদা বেশি, আসামে ডোগাস প্যান্ট এর চাহিদা বেশি। আবার আমাদের দেশেও বাজারজাত করি। এতে আমাদের দেশের টাকাও আসছে আবার বিদেশ থেকে ডলারও আসছে।'

সৈয়দপুর ইনভেন্ট ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল এর একজন জানান, 'শার্ট, ছোট বাচ্চাদের প্যান্ট, ওয়াশ জিন্স বানাই আমরা। আমাদের এখানে ওয়াশ এর ব্যবস্থা নেই সেজন্য ওয়াশ এর কাপড়গুলো ঢাকায় পাঠাতে হয়। এতে আমাদের খরচ অনেক বেড়ে যায়।'

ব্যবসায়ীরা জানান, 'বর্তমানে রপ্তানির ক্ষেত্রে সোনা মসজিদ, সোনাহাট ও বুড়িমারী এই তিন স্থলবন্দর ব্যবহার করছেন। তবে চিলাহাটি স্থলবন্দরের কার্যক্রম চালু করা গেলে খরচ অনেক কমে আসবে।'

তবে এই শিল্পকে ঘিরে একটি আলাদা গার্মেন্টস পল্লী করার দাবি দীর্ঘদিনের। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সরকার এমন উদ্যোগ নিলে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ শ্রমিক তৈরি করা সহজ হবে ফলে সৈয়দপুরের তৈরি পোশাক বিশ্ববাজার আরও বেশি সম্প্রসারিত করা সহজ হবে।

এসএস