১২ জুন, ২০২৫। মর্মান্তিক এক বিমান দুর্ঘটনার সাক্ষী হন ভারতীয়রা। আহমেদাবাদ বিমানবন্দর থেকে টেক অফের মাত্র ৩২ সেকেন্ডের মধ্যে ভয়াবহ দুর্ঘটনার কবলে পড়ে এয়ার ইন্ডিয়ার বোয়িং ড্রিম লাইনার বিমান। মাত্র একজন যাত্রী প্রাণে বাঁচলেও ২৪০ জন আরোহীসহ মৃত্যু হয় অন্তত ২৭০ জনের।
হৃদয়বিদারক এ দুর্ঘটনার এক মাস পর প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ভারতের এয়ারক্রাফট অ্যাক্সিডেন্ট ইনভেস্টিগেশন ব্যুরো। যেখানে বলা হচ্ছে, যে ফুয়েল সুইচ ইঞ্জিনে জ্বালানি সরবরাহ নিয়ন্ত্রণ করে, বিমানটি উড্ডয়নের পর যান্ত্রিক কোনো কারণে তা সচল অবস্থা থেকে কাট অফ পজিশনে চলে যায়। প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে এ কারণে বিমানটি উড্ডয়নের সর্বোচ্চ ৩২ থেকে ৩৬ সেকেন্ডের মধ্যে দু'টি ইঞ্জিন পরপর অচল হয়ে পড়ে।
ককপিটের ভয়েস রেকর্ডিং থেকে এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন তদন্তকারী কর্মকর্তারা। রেকর্ডেড অডিওতে শোনা যায়, পাইলট তার সহকারীকে প্রশ্ন করছেন, কেন ফুয়েল সুইচ কাট অফ বা বন্ধ করা হল। এখন প্রশ্ন উঠছে, কী কারণে জ্বালানি সরবরাহ নিয়ন্ত্রণকারী এই সুইচ সচল অবস্থা থেকে অচল অবস্থায় চলে গেল। যান্ত্রিক এই গোলযোগের সঙ্গে এয়ার ইন্ডিয়া বা বোয়িং এর সম্পৃক্ততাই কতখানি?
আরও পড়ুন:
এ বিষয়ে প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, দু'টি ইঞ্জিনে পরপর জ্বালানি সরবরাহ বন্ধ হলে সহকারী পাইলট চেষ্টা করেও তা সচল করতে পারেন নি। যদিও আধ মিনিটের বেশি সময় পাননি তারা। ইঞ্জিন এবং এয়ারক্রাফট ফ্লাইট রেকর্ডারের তথ্য পর্যালোচনার পর জানা গেছে, দুর্ঘটনার সময় জরুরি ব্যবস্থা ব়্যাম এয়ার টারবাইন সক্রিয় ছিল।
ড্রিমলাইনারের ম্যানুয়াল অনুযায়ী, উভয় ইঞ্জিন বিকল হয়ে গেলে বিমানের জরুরি ব্যবস্থা স্বয়ংক্রিয়ভাবে চালু হয়ে যায়। যদিও এসময় বিমানের ফ্ল্যাপ প্রত্যাশা অনুযায়ী ৫ ডিগ্রি অবস্থানে ছিল। নিম্নমুখী ছিল ল্যান্ডিং গিয়ারও। তাই ধরে নেয়া যায় বিমান দুর্ঘটনার দৃশ্যমান কারণ এ ফুয়েল সুইচটি অচল অবস্থায় সরে যাওয়া।
প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদনে আরও নিশ্চিত করা হয়েছে, দুর্ঘটনাটি পরিকল্পিত ছিলো কিংবা দুর্ঘটনার সময় প্রমাণ লোপাটের চেষ্টা করা হয়েছে, এমন কোনো আলামত পায়নি এয়ারক্রাফট অ্যাক্সিডেন্ট ইনভেস্টিগেশন ব্যুরো। এছাড়া মেলেনি পাখির সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে দুর্ঘটনার প্রমাণও।