ছাগল দিয়ে দাবানলের আগুন প্রতিরোধে ইইউয়ের পাইলট প্রকল্প!

ছাগল দিয়ে ঝোপঝাড় পরিষ্কার
ছাগল দিয়ে ঝোপঝাড় পরিষ্কার | ছবি: সংগৃহীত
0

ছাগল দিয়ে দাবানলের আগুন প্রতিরোধে অভিনব এক পাইলট প্রকল্প হাতে নিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। স্পেনের কাতালোনিয়া শহরের আশেপাশের ঝোপঝাড়গুলো খেয়ে পরিষ্কার রাখছে শতাধিক ছাগল। এছাড়া, ছাগল পালনের মাধ্যমে বিকল্প আয়ের উৎস খুঁজে পেয়েছেন কৃষকরা।

জলবায়ু পরিবর্তনে প্রতি গ্রীষ্মে দক্ষিণ ইউরোপের দেশগুলোতে দেখা দেয় ভয়াবহ দাবানল। তীব্র দাবদাহ ও প্রচণ্ড বাতাসের কারণে নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায় দাবানলের আগুন। গেল বছর স্পেনের কাতালোনিয়া শহর শতাব্দীর সবচেয়ে ভয়াবহ খরার মুখে পড়ে। দাবানলের আগুনে উজার হয়েছে শত শত হেক্টর বনভূমি ও বিস্তীর্ণ অঞ্চল।

দাবানলের আগুন প্রতিরোধে এবার ভিন্নপথে হাঁটছে ইউরোপ। ১৪ বছর আগে স্পেনের বার্সেলোনায় ছাগল পালনের একটি ছোট প্রকল্প চালু হয়েছিল। দাবানলের ঝুঁকি কমাতে ছাগল নিয়ে নতুন করে আরেকটি পাইলট প্রকল্প চালু করলো ইউরোপীয় ইউনিয়ন।

কাতালোনিয়ার কৃষি বিষয়ক স্থানীয় কাউন্সিলর হোসে আন্তোনিও রিসিস বলেন, ‘ইউরোপীয় ইউনিয়নের অর্থায়নে চালু হওয়া পাইলট প্রকল্পটি সফল হবে। নির্দিষ্ট একটি এলাকায় অন্তত একটি স্থায়ী ছাগলের পাল থাকবে। যেগুলো সারা বছর বনাঞ্চলে এবং পুরো অঞ্চলজুড়ে কাজ করবে। ঝোপঝাড় খেয়ে পরিষ্কার রাখবে এসব ছাগল।’

ঝনঝন ঘণ্টা ধ্বনির মাধ্যমে ৩ শতাধিক কালো, বাদামি বিভিন্ন রঙের ছাগল স্পেনের কাতালোনিয়া শহরের পাকা রাস্তা ধরে হেঁটে বেড়াচ্ছে। মাঝে মাঝে থেমে রাস্তার পাশে থাকা শুকনো ঝোপঝাড় খাচ্ছে। ক্ষুধা নিবারণের জন্য কাঁটাযুক্ত গাছ খেয়ে পরিষ্কার করছে। যেগুলো প্রাকৃতিকভাবে অগ্নিকাণ্ডের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

কৃষকদের একজন বলেন, ‘ছাগলের মাধ্যমে শহরের অনেক ঝোপঝাড় কমিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছি। এতে এই অঞ্চলে দাবানলের ঝুঁকিও অনেক কমেছে।’

আরেকজন বলেন, ‘আগে বিভিন্ন যন্ত্র দিয়ে গাছ কাটার পর অনেক আগাছা থাকত। ছাগল দিয়ে এখন যা করা হচ্ছে তা আরও সুন্দর প্রক্রিয়া।’

বনাঞ্চল ও ঝোপঝাড় পরিষ্কারে গবাদিপশু ব্যবহারের প্রথা শতাব্দী পুরোনো। অন্যদিকে, কৃষকরাও ছাগলসহ গবাদি পশু পালনে আগ্রহী হচ্ছেন। ছাগল পালনকারীদের বেতন দেয় স্থানীয় শহর কর্তৃপক্ষ। এছাড়া, এসব ছাগলের দুধ ও তৈরি পনির বিক্রি করে বিকল্প আয়ের ব্যবস্থা করছেন কৃষকরা।

কৃষকদের একজন বলেন, ‘পরিবেশগতভাবে এটি সবচেয়ে প্রাকৃতিক উপায়। এটি সত্যিই অসাধারণ প্রকল্প।’

কুকুর দিয়ে এসব যাযাবর ছাগলের পালকে রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়। শুধু অর্থ আয় নয়, জীবনযাত্রার পদ্ধতিতে পরিবর্তন ও চাষযোগ্য জমি রক্ষা করা এই প্রকল্পের অন্যতম লক্ষ্য।

সেজু