১৫৮ বছর আগে মাত্র ৭২ লাখ ডলারের বিনিময়ে আলাস্কাকে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে বিক্রি করে রাশিয়া। তবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট সম্ভবত বেমালুম ভুলে গেছেন সে কথা। তাই দুইবার পুতিনের সঙ্গে বৈঠকের জন্য আলাস্কার বদলে রাশিয়ার কথা উচ্চারণ করেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।
স্থানের নাম ভুল করলেও আলোচনার বিষয়বস্তু ছিল পরিষ্কার। হোয়াইট হাউজের সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প জানান, আগামী ১৫ আগস্ট আলাস্কায় যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার সরকার প্রধানের মধ্যে অনুষ্ঠিত হচ্ছে বহুল প্রতীক্ষিত বৈঠক। এই বৈঠকে মস্কোর কাছে কিয়েভের জন্য কিছু অঞ্চল পুনরুদ্ধারের চেষ্টা চালাবেন তিনি। বৈঠক শেষে সবার আগে ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্টের সঙ্গে কথা বলা হবে বলে জানান মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘পুতিনের সঙ্গে দেখা করার পর তার মানসিকতা বোঝার চেষ্টা করবো। ন্যায্য প্রস্তাব দিলে ইইউ, ন্যাটো ও প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কিকে এ বিষয়ে অবহিত করবো। তবে সম্মান দেখিয়ে সবার আগে জেলেনস্কিকে জানানো হবে। হয় লড়াই চলবে। না হয় আমরা চুক্তি করতে পারবো।’
আরও পড়ুন:
যদিও শক্তিধর দুই নেতার বৈঠক নিয়ে আশাবাদী নন জেলেনস্কি। ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্টের দাবি, শান্তির জন্য নয় বরং ইউক্রেনে নতুন করে আক্রমণের প্রস্তুতি নিচ্ছে রাশিয়া। যুদ্ধ শেষ করার জন্য রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা ও চাপ প্রয়োগ জরুরি বলে মন্তব্য করেন তিনি।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, ‘গোয়েন্দা তথ্যে আমরা জানতে পেরেছি, পুতিনের যুদ্ধ শেষ করার কোনো আগ্রহ নেই। বরং সে সেনাদের পাল্টা আক্রমণের জন্য প্রস্তুত করছে। যুদ্ধ শেষ করতে নিষেধাজ্ঞা, চাপ ও শক্তি প্রয়োগের বিকল্প নেই। রাশিয়া শান্তির জন্য প্রস্তুত না হলে তাদের অর্থনীতিতে ধস নামাতে হবে।’
এদিকে শুক্রবারের বৈঠক নিয়ে পোলিশ প্রধানমন্ত্রীর মনে শঙ্কার পাশাপাশি জেগেছে আশা। ডোনাল্ড টাস্কের দাবি, ইউক্রেন ও ইউরোপীয়দের অবস্থান ধীরে ধীরে বুঝতে শুরু করেছেন ট্রাম্প। তবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট কতদিন নিজেদের অবস্থান ধরে রাখতে পারেন তা নিয়ে শঙ্কা রয়েছে।
পোল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ডোনাল্ড টাস্ক বলেন, ‘আমাদের সংহতির সঙ্গে ইউক্রেনের অখণ্ডতা ও সার্বভৌমত্ব নির্ভরশীল নয়। বরং ইউক্রেনের সঙ্গে আমাদের নিরাপত্তা জড়িয়ে আছে। বৈঠক নিয়ে যেমন আশাবাদী, তেমনি শঙ্কাও রয়েছে। ট্রাম্প তার অবস্থান ধরে রাখতে পারেন কি না এখন তাই দেখার বিষয়।’
ট্রাম্প-পুতিন বৈঠক ঘিরে জরুরি ভিডিও কনফারেন্স করেছে ইইউ। যেখান থেকে রাশিয়ার বিরুদ্ধে ১৯তম দফায় নিষেধাজ্ঞা আরোপের খসড়া প্রস্তুতের কথা জানান জোটের পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক প্রধান।
এদিকে সীমান্তবর্তী দোনেৎস্কের একটি অঞ্চল দখলের দাবি করেছে রাশিয়া। বিপরীতে মস্কোর একটি ক্রুজ মিসাইল কারখানায় সফল হামলার দাবি করেছে ইউক্রেন।