কোমলমতি ছোট্ট এ শিশুদের মুখে খাবার তুলে দিতে ফিলিস্তিনি এ বাবা আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে কোন কিছুতেই যেন উপায় মিলছে না তার। আকাশ থেকে ত্রাণ পড়বে সেই খবর পেয়ে গাজার দেইর আল-বালাতে যান তাইসির ওবায়েদ নামের ৩৭ বছর বয়সী এই ফিলিস্তিনি। তবে দিনশেষে ভাগ্যে জুটেছে কেবল আধখণ্ড রুটি।
বাসিন্দারা বলেন, ‘সহায়তা যেখানে ফেলে সেখানেই ছিলাম আমি। তবে কেবল কয়েকটি রুটি ছাড়া কিছুই পাইনি। নিজেকে খুবই অভাগা মনে হচ্ছে।’
তাইসিরের মতো ফিলিস্তিনের অনেক বাবাকেই সন্তানের ক্ষুধার্ত মুখ দেখেও কিছুই করার থাকে না। কারণ মাসখানেক ধরে বিমান থেকে গাজায় ত্রাণ সহায়তা দেয়া হলেও তা পর্যাপ্ত নয় বলে দাবি করে আসছে ফিলিস্তিনিরা। এছাড়াও এই ত্রাণের বেশিরভাগই লুটের অভিযোগ ওঠেছে। সেক্ষেত্রে অসহায় ফিলিস্তিনিরা তাদের প্রাপ্য খাবারটুকু থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, ‘বাধ্য হয়ে ত্রাণ আনতে যেতে হয়। কারণ আমরা যদি ত্রাণ সংগ্রহ না করি না খেয়ে মারা যাবো। তবে যেভাবে ত্রাণ বিতরণ করা হয় তা খুবই ভয়াবহ।’
গাজায় দিনের পর দিন না খেয়ে প্রতিদিনই মৃত্যু হচ্ছে ফিলিস্তিনিদের। যার মধ্যে শিশুরাও রয়েছে। এমনকি ত্রাণ আনতে গিয়ে প্রাণ হারাচ্ছেন তারা। জাতিসংঘের দেয়া তথ্যমতে, গত মে মাস থেকে ত্রাণ আনতে গিয়ে ১ হাজার ৭ শ'৬০ ফিলিস্তিনি নিহত হন।
আরও পড়ুন:
ক্ষুধার যন্ত্রণায় মৃত্যুকে বরণ করার পাশাপাশি ইসরাইলি হামলাতেও অনেক শিশু নিহত হচ্ছে গাজা উপত্যকার। শুক্রবার ইসরাইলের হামলায় দেড় বছরের এই শিশুটি নিহত হন।
গাজার চিকিৎসক ইসাম আবু আজোয়া বলেন, ‘তাবু লক্ষ্য করে হামলা চালায় ইসরাইলিরা। তাদের এ হামলায় দেড় বছরের এক শিশু গুরুতর আহত হন। একইসঙ্গে তার পিতাও আহত হন। বাবা বাঁচলেও কিছুক্ষণ পরই শিশুটি নিহত হন।’
যেসব ফিলিস্তিনিরা আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন তাদের জন্য মরার ওপর খাঁড়ার ঘা হয়ে উঠছে তীব্র গরম। হাসপাতালে এমনিতেই প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সরঞ্জাম নেই, তার ওপর গরমের যন্ত্রণায় দিশেহারা হয়ে হাসপাতালের বেডে কাতরাচ্ছেন তারা।
এদিকে গাজাকে ঘিরে ইসরাইলের গ্রেটার ভিশনের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে কাতারসহ ৩১টি আরব দেশ। এছাড়াও আরবলীগ ও ওআইসিও নিন্দা জানিয়েছে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রীর বেনইয়ামিন নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে।
শুক্রবার (১৫ আগস্ট) ইসরাইল বিরোধী ব্যাপক বিক্ষোভ হয়েছে ইয়েমেনের রাজধানী সানায়। যেখানে হাজার হাজার মুসলিম ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি জানিয়ে স্লোগান দেন। দাবি জানান ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার।