অক্টোবর মাসেও হঠাৎ এমন দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া অপ্রত্যাশিতই। তাই চীনে আটদিনের সরকারি ছুটিতে তিব্বতের কারমা ভ্যালিতে ছুটে যাচ্ছিলেন পর্বতপ্রেমীরা। বিশ্বের সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ এভারেস্টের পূর্ব প্রান্তের দেখা মেলে এই কারমা থেকে।
তুলনামূলক সহনশীল তাপমাত্রা আর আকাশ পরিষ্কার থাকে বলে, এভারেস্টে ওঠার অন্যতম অনুকূল মৌসুম অক্টোবরেই। এমন সময়ে হঠাৎ অস্বাভাবিক ভারী তুষারপাতে বিস্মিত পাহাড়ের পেশাদার অভিজ্ঞ গাইডরাও।
শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে মাউন্ট এভারেস্টের পূর্বের গিরিখাত অংশে শুরু হয় ভারী তুষারপাত। সোমবার পর্যন্ত তুষারপাত তীব্রতর হতে থাকায় আটকা পড়েন কয়েক শ’ পর্বতারোহী। দু’দিনে অর্ধেকের বেশি মানুষকে সম্মিলিত চেষ্টায় উদ্ধার করেন স্থানীয় বাসিন্দা আর উদ্ধারকর্মীরা। দুর্গম পাহাড়ের যেসব এলাকায় পর্বতারোহীরা আটকা পড়েছেন, পুরু তুষার পরিষ্কার করে সেসব এলাকায় যেতেই বেগ পোহাতে হচ্ছে উদ্ধারকর্মীদের।
নিরাপদে পর্বতারোহীদের ফিরিয়ে আনতে কারমায় জনবল ও ভারী যানবাহন পাঠিয়েছে তিব্বতের ফায়ার ফাইটিং ডিপার্টমেন্ট। চরম প্রতিকূলতা আর দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার মধ্যেই রাতভর বরফের রাস্তা পেরিয়ে নামিয়ে আনা হয় অনেক পর্বতারোহীকে।
আরও পড়ুন:
ফিরে যারা এসেছেন, বিবিসিকে তারা জানান, প্রতি ১০ মিনিটে অন্তত একবার তাঁবুর বাইরের বরফ সরাতে হয়েছে তাদের। তাঁবু আর পর্বতারোহীদের গভীর তুষারে ডুবে যাওয়া থেকে বাঁচাতে রাতের অন্ধকারেই সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বরফ খুঁড়ছেন গাইডরা।
পর্বত থেকে নিচে নামার পথ তুষারে ঢেকে অচেনা হয়ে পড়ায় রাস্তা চেনাতে এগিয়ে গেছেন স্থানীয়রা। উদ্ধার সরঞ্জাম বহনে নিজেদের গরু আর ঘোড়া দিচ্ছেন, উদ্ধার হওয়া পর্বতারোহীরা নিকটতম গ্রামে পৌঁছানোর পর তাদের গরম খাবারও বিতরণ করছেন অনেক গ্রামবাসী।
বিশ্বের সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ এক ঝলক দেখতে হাজার হাজার ডলার খরচ করেন দর্শনার্থীরা। তার ওপর চীনের দিকের পর্বতারোহণ পথগুলো কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করে বেইজিং। কিন্তু সমস্ত প্রস্তুতি সত্ত্বেও হিমালয়ের অপ্রত্যাশিত ও বিপজ্জনক আবহাওয়ায় বিপাকে প্রশাসন।
আকস্মিক এ দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার প্রভাবে প্রতিবেশি নেপালেও চলছে প্রাণঘাতী বৃষ্টি-বন্যা-ভূমিধস।





