রাতভর হামলা-পাল্টা হামলার মধ্য দিয়ে দ্বিতীয় সপ্তাহে গড়ালো ইরান-ইসরাইল সংঘাত। গতকাল (বৃহস্পতিবার, ১৯ জুন) রাতভর ৬০টির বেশি যুদ্ধবিমান দিয়ে ইরানের রাজধানীতেই ১২০বার হামলা চালায় ইসরাইল। সামরিক ক্ষেপণাস্ত্র উৎপাদন ও পারমাণবিক গবেষণা কেন্দ্রসহ বিভিন্ন স্থাপনা ও অবকাঠামো লক্ষ্য করে হামলা চলে তেহরান-ইস্পাহানসহ দেশটির ১৬টি প্রদেশে চলে হামলা।
অন্যদিকে শুক্রবারও (২০ জুন) ইসরাইলের দক্ষিণাঞ্চলে ক্ষেপণাস্ত্র আক্রমণ চালিয়েছে ইরান। বলা হচ্ছে, হতাহত তেমন না হলেও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বিপুলসংখ্যক ভবনের। এমন পরিস্থিতিতে ইরানকে থামাতে সরাসরি হামলার কথা ভাবছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে তার আগে কূটনৈতিক প্রচেষ্টার মাধ্যমে সংঘাত বন্ধে দুই সপ্তাহের সময় বেঁধে দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, জানিয়েছে হোয়াইট হাউজ।
প্রতিক্রিয়ায়, ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে দেয়া সাক্ষাৎকারে ইরানের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাঈদ খতিবজাদের হুঁশিয়ারি, ইরান আক্রমণে ইসরাইলের সাথে যুক্তরাষ্ট্র যোগ দিলে তা পুরো মধ্যপ্রাচ্যকে নারকীয় পরিস্থিতির দিকে ঠেলে দেবে। তিনি বলেন, এটি যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধ নয়। তাও এ যুদ্ধে জড়ালে ইতিহাসের খলনায়ক হয়ে উঠবেন ট্রাম্প। ইরানের হুমকিতে এরইমধ্যে কাতারের একটি বড় মার্কিন ঘাঁটি থেকে হারকিউলিস সি-ওয়ান-থার্টিসহ ৪০টির বেশি সামরিক বিমান সরিয়ে নিয়েছে পেন্টাগন। স্যাটেলাইট ছবিতে উঠে এসেছে আল-উদাইদ ঘাঁটিতে পড়ে আছে মাত্র তিনটি বিমান, যে সংখ্যা চলতি মাসের শুরুতেও ছিল অর্ধশতাধিক।
এমন পরিস্থিতিতে অনড় ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী। এক সাক্ষাৎকারে জানালেন, ইরানের সব পারমাণবিক স্থাপনা ধসিয়ে দিতে যুক্তরাষ্ট্রের সবুজ সংকেতের জন্য অপেক্ষা করবে না তেল আবিব।
ইরান-ইসরাইল সংঘাতে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পৃক্ততা চান না খোদ মার্কিন নাগরিকরাও। ইকোনমিস্ট বা ইউগভ জরিপ বলছে, প্রেসিডেন্টের সিদ্ধান্তে সমর্থন নেই ৬০ শতাংশ মার্কিনির।
এদিকে ইসরাইলের সাথে সংঘাত তীব্র হতে থাকার মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রের সাথে সরাসরি আলোচনায় যুক্ত হয়েছে ইরান। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কূটনীতিকদের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, ইতোমধ্যে বেশ কয়েকবার মার্কিন বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফের সাথে ফোনালাপ হয়েছে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাকচির।
কূটনৈতিকভাবে সংঘাত বন্ধে শুক্রবারই সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় ইরানের সাথে আলোচনায় বসতে যাচ্ছে যুক্তরাজ্য ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন। শনিবার তুরস্কের ইস্তাম্বুলে মুসলিম দেশগুলোর জোট ওআইসির সাথে বৈঠক করবেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।