ট্রাম্পের ডিসি পুলিশ নিয়ন্ত্রণ: মেয়র বাউজারের সতর্কবার্তা

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প | ছবি : সংগৃহীত
0

প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে ওয়াশিংটন ডিসির মেট্রোপলিটন পুলিশ বিভাগকে ফেডারেল নিয়ন্ত্রণে নেয়া হচ্ছে। অপরাধ দমন কার্যক্রমে ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েনের ঘোষণার পর ডিসির মেয়র মুরিয়েল বাউজার এ পদক্ষেপকে ‘অপ্রত্যাশিত, নজিরবিহীন এবং উদ্বেগজনক’ হিসেবে অভিহিত করেছেন।

মেয়র বাউজার সতর্ক করে বলেছেন, ‘যদি আমাদের সম্প্রদায়ের আস্থা পুলিশ ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর প্রতি কমে যায়, তাহলে সেটা হতে পারে বড় ধরনের বিপর্যয়ের কারণ। যারা অপরাধের শিকার, তারা যদি পুলিশের কাছে অভিযোগ জানাতে ভয় পায়, কিংবা অপরাধীরা যদি আরও উৎসাহ পায়, সেটি আমাদের সমাজের জন্য বড় ঝুঁকি।’

ডিসি পুলিশ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান গ্রেগোরি পেম্বার্টনও ট্রাম্পের এই উদ্যোগের সঙ্গে একমত পোষণ করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, ডিসির পুলিশ বিভাগের ৮০০-এর বেশি পদ শূন্য রয়েছে এবং অপরাধ দমনে ফেডারেল সাহায্য প্রয়োজন। তার মতে, স্থানীয় সরকারে থাকা চরমপন্থী নীতিমালাই অপরাধ ব্যবস্থার ব্যর্থতার মূল কারণ।

নাগরিকদের বিভ্রান্তি এড়াতে বাউজার জানিয়েছেন, ডিসিতে মোতায়েন ফেডারেল আইন প্রয়োগকারীরা স্পষ্টভাবে ইউনিফর্ম, ব্যাজ বা জ্যাকেটের মাধ্যমে পরিচিত হবেন। এছাড়া, ন্যাশনাল গার্ডের সৈন্যরা রাস্তায় রাইফেল খোলা হাতে বহন করবেন না, প্রয়োজনে অস্ত্র ব্যবহার করা হবে।

মেয়র বাউজার বলেন, ‘আমাদের অফিস সব সরকারি কর্মকর্তার সঙ্গে, যার মধ্যে প্রেসিডেন্টও আছেন, নিয়মিত যোগাযোগ রাখে। তাই এই পরিস্থিতিতে আমাদের কাজের স্বর এবং পন্থা একান্তই ডিসির মানুষের কল্যাণ ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।’

তিনি আবারও ডিসিকে পূর্ণ রাজ্য মর্যাদা দেওয়ার দাবি তোলেন, যা গেলে এ ধরনের ফেডারেল হস্তক্ষেপ বন্ধ হবে।

অপরদিকে ডিসির অ্যাটর্নি জেনারেল ব্রায়ান শওয়ালব প্রেসিডেন্টের এ পদক্ষেপকে ‘অবৈধ এবং অপ্রয়োজনীয়’ বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি উল্লেখ করেছেন, ডিসিতে কোনো জরুরি অপরাধ পরিস্থিতি নেই বরং সহিংস অপরাধের হার গত বছর ৩০ বছরের সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমেছে এবং এ বছর আরও কমে এসেছে।

ন্যাশনাল গার্ডের মোতায়েন সম্পর্কে সামরিক কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মোট ৮০০ জন সৈন্য মোতায়েন করা হবে, যাদের মধ্যে ১০০ থেকে ২০০ জনই এক সময়ে সরাসরি আইন প্রয়োগে নিযুক্ত থাকবেন। তাদের মূল কাজ হবে প্রশাসনিক, লজিস্টিক ও শারীরিক সহায়তা প্রদান।

মেট্রোপলিটন পুলিশ প্রধান পামেলা স্মিথ বলেন, ‘স্থানীয় পুলিশ ও ফেডারেল সংস্থাগুলো একসঙ্গে কাজ করছে এবং পুলিশ সদস্যরা নিজেদের সম্প্রদায়ের সঙ্গে নিবিড় সংযোগ রক্ষা করবেন।’

ট্রাম্প প্রশাসন নিযুক্ত কর্মকর্তারা ডিসির অ্যাটর্নি জেনারেল পাম বন্ডির অধীনে কাজ করবেন। বাউজার স্পষ্ট করেছেন, ডিসি পুলিশের প্রধান তাঁর অধীনে থাকবেন এবং পুলিশ বিভাগের কার্যক্রমে কোনো বড় পরিবর্তন আসেনি।

এই পরিস্থিতিতে ডিসির স্বায়ত্তশাসন এবং জনগণের নিরাপত্তা কতটা বজায় থাকবে তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। তবে মেয়র বাউজার দৃঢ় অঙ্গীকার করেছেন, তিনি সর্বোচ্চ আন্তরিকতা ও দায়বদ্ধতা নিয়ে ডিসির মানুষকে নিরাপদ রাখতে কাজ করবেন।

এসএস