ঝালকাঠিতে আদালত চত্বরেই সাক্ষীর ওপর হামলা

আহত আবদুল মন্নান মৃধা ওরফে চুন্নু
আহত আবদুল মন্নান মৃধা ওরফে চুন্নু | ছবি: এখন টিভি
0

ঝালকাঠিতে আলোচিত হত্যা মামলায় সাক্ষ্য দিয়ে ফেরার পথে আদালতের প্রধান ফটকের সামনে সাবেক এক ইউপি সদস্যকে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর জখম করার অভিযোগ উঠেছে। আজ (রোববার, ২৭ জুলাই) দুপুরে জেলা ও দায়রা জজ আদালত চত্বরে এ ঘটনা ঘটে।

আহত ব্যক্তি হলেন নলছিটি উপজেলার দপদপিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য আবদুল মন্নান মৃধা ওরফে চুন্নু (৫২)। তিনি ওই উপজেলার কয়া গ্রামের মৃত হাতেম মৃধার ছেলে।

ঘটনার পরপরই জেলা ও দায়রা জজ মো. রহিবুল ইসলাম এজলাস কক্ষে আহত মন্নান মৃধার জবানবন্দি গ্রহণ করেন এবং ঝালকাঠি সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুজ্জামানকে দ্রুত মামলা গ্রহণের নির্দেশ দেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মাহেব হোসেন।

আদালত সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ২০২৩ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর নলছিটির কয়া গ্রামের একটি ব্রিকফিল্ডের সামনে দুর্বৃত্তদের হামলায় রুবেল গাজী (২২) গুরুতর আহত হন। ২১ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর ৪ অক্টোবর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। নিহত রুবেলের বাবা জসিম গাজী ওই ঘটনায় ১৮ জনকে আসামি করে নলছিটি থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।

রোববার ছিল মামলার সাক্ষ্য গ্রহণের তারিখ। আদালতে সাক্ষ্য দিতে এসে সাবেক ইউপি সদস্য মন্নান মৃধা অভিযুক্তদের চিহ্নিত করেন। এরপর আদালত থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় প্রধান ফটকের সামনে আসামিরা তার ওপর হামলা চালায় বলে অভিযোগ ওঠে। হামলাকারীরা হাতুড়ি দিয়ে মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে তাকে রক্তাক্ত জখম করে এবং তার মোটরসাইকেলও ভাঙচুর করে।

আহত অবস্থায় স্থানীয় বিচার প্রার্থীরা তাকে উদ্ধার করে আদালতের এজলাসে নিয়ে যান। ঘটনার পর অভিযুক্তরা পালিয়ে যায়।

রুবেল হত্যা মামলায় ১২ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দিয়েছে পুলিশ। তারা হলেন- অহিদুল ইসলাম মৃধা, রফিক মৃধা, সোহেল মাঝি, সাইদুল ফকির, সালাম ফকির, এনায়েতুর রহমান, কালাম খান, নাসির খান, এরশাদ হাওলাদার, রবিউল হাওলাদার, বাবুল মৃধা ও সোহরাব মৃধা।

আহত মন্নান মৃধা বলেন, ‘আদালতে সাক্ষী দিয়ে বের হওয়ার পর আমাকে হত্যার উদ্দেশে আঘাত করা হয়েছে। এতে আমি রক্তাক্ত আহত হয়েছি। নিরাপত্তার অভাবেই এমন ঘটনা ঘটেছে। আমি বিচার চাই।’

মামলার বাদী জসিম গাজী বলেন, ‘আমার ছেলেকে হত্যা করেই তারা ক্ষান্ত হয়নি, এখন মামলার সাক্ষীকেও হত্যার চেষ্টা করছে। এতে প্রমাণিত হয়, তারা মামলাটি ভিন্নখাতে নিতে চায়।’

পাবলিক প্রসিকিউটর মাহেব হোসেন বলেন, ‘ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক ও ন্যাক্কারজনক। আদালতের নির্দেশে দ্রুত মামলা গ্রহণের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।’

ঝালকাঠি সদর থানার ওসি মো. মনিরুজ্জামান বলেন, ‘আদালতের নির্দেশ পেয়েছি। আইনগত ব্যবস্থা নিয়ে দ্রুত অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করা হবে।’

এসএস