ডাকসু নির্বাচনে ছাত্র সংগঠনগুলো কি দায়িত্বশীল আচরণ ও ঐক্য ধরে রাখতে পারবে?

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও ডাকসু ভবন
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও ডাকসু ভবন | ছবি: এখন টিভি
0

আসন্ন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ ডাকসু নির্বাচন উপলক্ষে ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠনগুলোকে দায়িত্বশীল আচরণ এবং নিজেদের মধ্যে ঐক্য ধরে রাখার আহ্বান জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান। ঐক্য বিনষ্ট হলে তৃতীয় পক্ষ সুযোগ নিবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

দীর্ঘ ছয় বছর পর, আবারও ভোটের দামামা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ৯ সেপ্টেম্বর নির্বাচিত হবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ ডাকসুর নেতৃত্ব।

ডাকসু নির্বাচন ঘিরে এরই মধ্যে তৎপরতা বাড়িয়েছে ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠনগুলো। চলছে প্যানেল তৈরির কাজ। তবে, এ ভোট ঘিরে আছে ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা ইস্যুটিও।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ জানান, ইতিমধ্যে ক্যাম্পাসের নিরাপত্তার স্বার্থে ১৮৬ টি সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। প্রক্টরিয়াল টিমকে সহযোগিতা করতে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে স্বেচ্ছাসেবক। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬টি স্থানে এরইমধ্যে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে বলেও জানান তিনি। বলেন, কেউ বাধা দিতে চাইলে সেটিও সবার সামনে তুলে ধরা হবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খান বলেন, ‘লাইটিং এর কাজ যতদূর সম্ভব বাড়ানো হয়েছে। সীমিত সামর্থ্যে আমরা বিভিন্নভাবে মানুষের সচেতনটা বাড়াতে বিভিন্ন পরিসরে আলোচনা করেছি। এখন ডাকসুকে কেন্দ্র করে কোনো মহল যদি বাঁধা দেয়ার চেষ্টা করে, ডাকসুকে কেন্দ্র করে কোনো জায়গায় যদি আমাদের সহযোগিতার কমতি হয় সেটা যেমন সবাই দেখবে তেমনিভাবে ডাকসুকে কেন্দ্র করে যারা সহযোগিতা করছেন তাদেরও সাধুবাদ।’

আরও পড়ুন:

ভোটের এই আয়োজনের মাঝেই গত কয়েকদিন আগে টিএসসিতে ছবি প্রদর্শন নিয়ে বিরোধে জড়ায় ছাত্র সংগঠনগুলো। এ বিষয়ে উপাচার্য বলেন, বিষয়টি জানা মাত্রই ব্যবস্থা নেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। আসন্ন ডাকসু নির্বাচন উপলক্ষে ছাত্র সংগঠনগুলোকে নিজেদের স্বার্থে ঐক্য বজায় রাখার আহ্বান তার।

অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খান বলেন, ‘ঘটনা জানার ৪৫ মিনিটের মধ্যে প্রক্টরিয়াল টিম সেখানে গিয়েছে। সংশ্লিষ্ট ছাত্র সংগঠনের সাথে মিলে ছবিগুলো সরিয়ে নেয়া হয়েছে৷ সংগঠনগুলো তাদের নিজের স্বার্থেই এখন অত্যন্ত সচেতন ও সংবেদনশীল থাকা প্রয়োজন। যাতে পরমতের প্রতি আমরা সহিষ্ণু থাকি। আমরা একটা বৃহৎ লক্ষ্যকে সামনে রেকে এগিয়ে যাচ্ছি। এ সময় যেন আমাদের ফাটলের কারণে তৃতীয় পক্ষ সুযোগ নিতে না পরে। এটা খুব গুরুত্বপূর্ণ।’

ঐক্য বিনষ্ট হলে তৃতীয় পক্ষ সুযোগ নিবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। এসময় ছাত্র সংগঠনগুলোকে দায়িত্বশীল আচরণ করার আহবান জানান তিনি।

সাম্প্রতিক সময়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের একজন শিক্ষকের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরকার বিরোধী পোস্ট দেওয়ার অভিযোগ ওঠলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন তাকে অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি দেয়। এতে, মত প্রকাশের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপের অভিযোগ ওঠে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের বিরুদ্ধে। তবে, উপাচার্যের দাবি, লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে এবং ছাত্রদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটির রিপোর্টের অনুযায়ী তাকে অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম থেকে সাময়িক অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। তবে তাকে চাকরিচ্যুত বা তার বেতন কর্তন এমন কিছুই করেনি প্রশাসন।

উপাচার্য বলেন, ‘ব্যাপক আলোচনা হয়েছে। সেই আলোচনার ভিত্তিতে লিখিতভাবে তাকে একটি ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটি করে দেয়া হয়েছে। এবং তাকে অ্যাকাডেমিক কাজ থেকে বিরত রাখা হয়েছে৷ তিনি যদি নির্দোষ প্রমাণিত হোন তিনি ফেরত আসবেন। তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়নি, বেতনও বন্ধ করা হয়নি।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সাম্য ও তোফাজ্জল হত্যার ঘটনায় তাৎক্ষনিক ব্যবস্থা নিয়েছে প্রশাসন, এমন দাবি করে উপাচার্য বললেন, যেকোনো সহিংস ও বিশৃঙ্খলার ঘটনা রোধে তৎপর তারা।

ইএ