
টানা বৃষ্টি-উজানের ঢলে ফেনীর বন্যা পরিস্থিতির অবনতি, শতাধিক গ্রাম প্লাবিত
গত তিন দিনের টানা বৃষ্টি ও ভারতীয় উজানের ঢলে ফেনীর বন্যা পরিস্থিতি প্রকট আকার ধারণ করেছে। মুহুরী, কহুয়া, সিলোনীয়া নদী তীরের ২২ স্থানে প্লাবিত হয়েছে শতাধিক গ্রাম। পানিবন্দী হয়ে আছে দেড় লক্ষাধিক মানুষ।

ফেনীতে বন্যার পানি নামলেও কমেনি দুর্ভোগ, বাঁধ মেরামতে কাজ করছে সেনাবাহিনী
টানা বৃষ্টি ও উজানের ঢলের পর ফেনীর নিম্নাঞ্চল থেকে নামতে শুরু করেছে বন্যার পানি। তবে এখনো কমেনি দুর্ভোগ। এরই মধ্যে মুহুরী নদীর বাঁধের ভাঙা অংশে জিও ব্যাগ ফেলে মেরামত করতে শুরু করেছে সেনাবাহিনী। অন্যদিকে, কুমিল্লায় গোমতী নদীর ঝুঁকিপূর্ণ ৮ কিলোমিটার এলাকায় বাঁধ মেরামতের কাজ শুরু করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)।

ফের বন্যার আশঙ্কা, ফেনীতে বাঁধে ফাটল; পাউবোর বিরুদ্ধে অবহেলা-দুর্নীতির অভিযোগ
চব্বিশের ভয়াবহ বন্যার ৮ মাস না পেরোতেই ফের চোখ রাঙ্গাচ্ছে সীমান্তবর্তী ৩ নদী। ফেনীতে গেল বন্যায় ভেঙে যাওয়া বাঁধের বেশ কয়েকটি স্থানে দেখা দিয়েছে ফাটল। প্লাবন ও বন্যার আশঙ্কায় নির্ঘুম রাত পার করছেন নদীর তীরবর্তী লাখো মানুষ। বাঁধের কাজে অবহেলা ও দুর্নীতির অভিযোগ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বিরুদ্ধে।

ভারি বৃষ্টিপাতে সিলেটে বন্যার আশঙ্কা
ভারি বৃষ্টিপাতে সিলেটে বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা যায়, গত ২৪ ঘণ্টায় সিলেটে ১৯৩ দশমিক ৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। একই সাথে মেঘালয় রাজ্যে প্রচুর বৃষ্টিপাত এবং উজানের ঢলের কারণে পিয়াইন ও ধলাই নদেও বেড়েছে পানি।

শেরপুরে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ৩২ হাজার হেক্টর জমির ফসল
ভারি বর্ষণ ও উজানের ঢলে সৃষ্ট আকস্মিক বন্যায় শেরপুরে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৩২ হাজার ১৭৫ হেক্টর জমির ফসল। পানিতে তলিয়ে নষ্ট হয়েছে হাজারো কৃষকের স্বপ্ন। এবারের বন্যায় জেলার কৃষিখাতে ক্ষতি ৬শ' কোটি ছাড়িয়ে যাবে বলে ধারণা কৃষি বিভাগের।

কাউনিয়ার একাধিক গ্রামে ভাঙন ঝুঁকি, আতঙ্কে হাজারো মানুষ
গতকাল (রোববার) থেকে বৃষ্টি না হওয়ায় কমেছে তিস্তার পানি। পানি নামতে শুরু করায় বাড়ি ফিরতে শুরু করেছেন মানুষ। তবে কিছু জায়গায় উজানের পানির তোড়ে ভেঙেছে বসতভিটা। রংপুরের কাউনিয়ার কয়েকটি গ্রামে দেখা দিয়েছে ভাঙন ঝুঁকি। আতঙ্কে দিন কাটচ্ছেন হাজারো মানুষ। সংকট সমাধানে তিস্তা নদী খনন, শাসন ও তীর রক্ষা বাঁধ নির্মাণের দাবি স্থানীয়দের।

ভারি বৃষ্টি ও উজানের ঢলে বিপৎসীমার ওপর তিস্তার পানি
ভারি বৃষ্টি ও উজানের ঢলে বেড়েছে উত্তরাঞ্চলের বেশিরভাগ নদ-নদীর পানি। রংপুরের কাউনিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে বইছে তিস্তার পানি। এরইমধ্যে পাঁচ জেলার লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি। তলিয়ে গেছে নিম্নাঞ্চলের কয়েক লাখ হেক্টর আবাদি জমি। এদিকে কয়েকদিনের টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে সিরাজগঞ্জে বেড়েছে যমুনা নদীর পানি। যাতে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল ও চরের বাসিন্দাদের মাঝে।

কুমিল্লায় বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত বুড়িচং
স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় কুমিল্লায় ৮২ হাজার ৭০৬ পরিবারের বসতঘরের ক্ষতি হয়েছে। এর মধ্যে সম্পূর্ণ ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে ৮ হাজার ৬২৫টি ঘরবাড়ি। এবারের বন্যায় জেলার ১৪ উপজেলা বন্যা কবলিত হলেও সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে বুড়িচং উপজেলায়।

বিপৎসীমার কাছাকাছি নেত্রকোণার নদ-নদীর পানি
ভারি বর্ষণ আর উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে নেত্রকোণার সব কয়টি নদ-নদীর পানি বাড়লেও এখনো বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। জেলার সোমেশ্বরী, কংস, ধনুসহ সব কয়টি নদ-নদীর পানি স্থিতিশীল রয়েছে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।

বন্যার্তদের পাশে দাঁড়াতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচি
ভারত থেকে আসা উজানের নদীগুলোর বাঁধ খুলে দেয়ায় নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, কুমিল্লা, মৌলভীবাজার, সিলেট, খাগড়াছড়ি সহ দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় এলাকাগুলো পাহাড়ি ঢল ও বন্যার কবলে পড়েছে। একই সঙ্গে, দেশের উত্তরাঞ্চলেও বন্যার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সারাদেশে রেসকিউ অপারেশন এবং ত্রাণ বিতরণ কর্মসূচি চালু করতে যাচ্ছে। এই কার্যক্রম সফলভাবে পরিচালনার লক্ষ্যে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন একটি পাবলিক ফান্ড রাইজিং উদ্যোগ শুরু করছে।

বানের জলে ভাসছে ফেনীসহ কয়েকটি জেলার শতাধিক গ্রাম
স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যার কবলে ফেনী। এদিকে বৃষ্টি আর উজানের ঢলে প্লাবিত হচ্ছে নোয়াখালী, কুমিল্লা, মৌলভীবাজার, সাতক্ষীরা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, খাগড়াছড়িসহ বেশ কিছু এলাকা। এসব এলাকায় পানিবন্দি প্রায় ২৩ লাখ মানুষ। অন্যদিকে আগামী তিন দিনের মধ্যে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হবে বলে জানিয়েছে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র।

বন্যার পানিতে ভাসছে কুড়িগ্রামের বিস্তীর্ণ জনপদ
উজানের ঢলে ভরে ওঠা নদ-নদীর পানি ভাটির দিকে নেমে যায় ব্রহ্মপুত্র নদ দিয়ে। সেই নদে পানি কমছে ধীরে ধীরে। মাঝখানে কুড়িগ্রামের বিস্তীর্ণ জনপদ বন্যার পানিতে ভাসছে। কমছে না দুর্ভোগ। বাড়িঘর, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বা ফসলের খেত সবই পানিতে নিমজ্জিত। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে কৃষি ও মাছ চাষ।