টানা বৃষ্টি-উজানের ঢলে ফেনীর বন্যা পরিস্থিতির অবনতি, শতাধিক গ্রাম প্লাবিত

ফেনীর বন্যা পরিস্থিতি
ফেনীর বন্যা পরিস্থিতি | ছবি: এখন টিভি
0

গত তিন দিনের টানা বৃষ্টি ও ভারতীয় উজানের ঢলে ফেনীর বন্যা পরিস্থিতি প্রকট আকার ধারণ করেছে। মুহুরী, কহুয়া, সিলোনীয়া নদী তীরের ২২ স্থানে প্লাবিত হয়েছে শতাধিক গ্রাম। পানিবন্দী হয়ে আছে দেড় লক্ষাধিক মানুষ।

কোথাও বুক পানি আবার কোথাও কোমর বা হাঁটুপানি। বানের জল আর ভারী বৃষ্টিতে বন্যার ভোগান্তি প্রকট আকার ধারণ করেছে ফেনীর উত্তরের তিন উপজেলা— ফুলগাজী, পরশুরাম ও ছাগলনাইয়ায়।

নতুন করে ডুবতে শুরু করেছে ফেনী সদর, দাতনভূঞাঁ ও সোনাগাজীর বিস্তীর্ণ অঞ্চল। ঘরবাড়ি ছেড়ে অনেকেই আশ্রয় নিয়েছেন উঁচু স্থান ও আশ্রয় কেন্দ্রে।

স্থানীয়রা জানান, ঘরবাড়ি ডুবে যাওয়ায় আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছেন হাজার হাজার মানুষ। বর্তমানে নিরাপদ আশ্রয়ে থাকলেও পানি আরও বাড়লে এ আশ্রয়ও থাকবে না বলে আশঙ্কা করছেন অনেকে।

সর্বশেষ বৃহস্পতিবার রাতের তথ্যমতে, ফেনীর তিন উপজেলায় শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন দেড় লাখেরও বেশি মানুষ, প্রস্তুত রাখা হয়েছে ১৩৯টি আশ্রয় কেন্দ্র।

জেলা প্রশাসনের হিসেব মতে, ৪৯টি কেন্দ্রে ৮ হাজারের বেশি মানুষ আশ্রয় কেন্দ্রে এসেছেন। দেয়া হচ্ছে খাদ্য সহায়তা একই সঙ্গে চলছে উদ্ধারের কাজ।

ফেনীর জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘সাম্প্রতিক পাহাড়ি ঢল এবং অতি বৃষ্টির কারণে যে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে, তা মোকাবিলার জন্য জেলা প্রশাসন যথেষ্ট উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। প্রশাসন সবাইকে নিয়ে সম্মিলিতভাবে কাজ করছে।’

এদিকে বন্যা পরিস্থিতি অবনতি হওয়ায় বন্যা দুর্গতদের মাঝে সহায়তা, ত্রাণ বিতরণ কাজে অংশ নিয়েছে সেনাবাহিনী, বিজিবি, বাংলাদেশ পুলিশ, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলসহ স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলো।

ফেনীর পুলিশ সুপার হাবিবুর রহমান বলেন, ‘পানিবন্দী থাকা মানুষ ও যারা খাদ্যাভাবে ভুগছে তাদেরকে আমরা আমাদের সামর্থ্য অনুযায়ী সহায়তা দেয়ার চেষ্টা করছি।’

ফেনী-৪ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘আমরা আমাদের মহাপরিচালকের নির্দেশনা অনুযায়ী দুর্গতদের বিভিন্নভাবে সহায়তা করার চেষ্টা করছি।’

পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে, বৃষ্টি কমলে বানের পানিও কমার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে পানি না কমা পর্যন্ত নদীর ভেঙে যাওয়া বাঁধ মেরামত সম্ভব নয়।

এসএইচ