নওগাঁয় চলতি মৌসুমে ভালো দাম পাওয়ার আশায় আলু চাষ করেন কৃষকরা। তবে ফলন ভালো হলেও হিমাগার স্বল্পতায় আলু সংরক্ষণ করতে পারেননি তারা। যদিও আলু সংরক্ষণে সরকারি অর্থায়নে ২০২২-২৩ অর্থবছরে অহিমায়িত মডেল ঘর বানানো হয়।
নওগাঁর আলু চাষি কৃষক সানোয়ার হোসেন। অহিমায়িত মডেল ঘর পেয়ে শুরু করেন আলু সংরক্ষণ। কিন্তু সংরক্ষণের তিন মাসের মধ্যে ১০০ মন আলু পচে নষ্ট হয়ে যায়।
কৃষক সানোয়ার হোসেন বলেন, ‘পোকা আর পচনে প্রায় একশ’ মণের মতো আলু নষ্ট হয়ে গেছে। ঘরটা আমরা পেয়েছিলাম কিছু লাভের আশায় কিন্তু আমাদের কোনো লাভই হলো না।’
এ বছর আলু চাষে বিঘাপ্রতি খরচ হয়েছে অন্তত ৩৫ হাজার টাকা। যা গেল বছরের তুলনায় পাঁচ থেকে ছয় হাজার টাকা বেশি। তার উপর অহিমায়িত ঘরে সংরক্ষণ করায় নষ্ট হয়েছে অনেক আলু।
কৃষকরা জানান, আলুর ডায়মন্ডটা পুরোটা নষ্ট হয়ে গেছে। কাটিলালটা কিছুটা ভালো আছে,আর কিছু অংশ নষ্ট হয়েছে। এ ঘরে আলু রেখে আলু নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এতে করে কৃষক আরও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
অপরিকল্পিতভাবে ঘরটি তৈরি করায় রয়েছে নিরাপত্তার অভাব। ফলে, বহু কৃষক সেখানে আলু রাখতে চান না। আবার নষ্ট হওয়ার শঙ্কা থেকেও আলু রাখতে চান না অনেকে। আর তাই মডেল ঘরগুলো তৈরি হওয়ার পর থেকেই অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে আছে বেশিরভাগ ঘর।
স্থানীয়রা জানান, এ ঘর আলু রাখার জন্য তৈরি হলেও এখানে আলু রাখা হয় না। এখানে যেকোনো সময় আলু চুরি হয়ে বা পচে যেতে পারে। এজন্য সাধারণত এখানে আলু রাখতে চায় না। লাখ টাকা খরচ করে ঘরটা বানালেও এটা কোনো কাজে লাগছে না।
তবে কৃষি কর্মকর্তা জানান, অহিমায়িত মডেল ঘরে আলু সংরক্ষণ করলে যেমন কম খরচ হয় তেমনি কৃষকরা তাদের সময়মতো আলু বিক্রি করতে পারেন।
নওগাঁ জেলার কৃষি বিপণন কর্মকর্তা সোহাগ সরকার বলেন, ‘প্রাকৃতিক উপায়ে আলু চার থেকে ছয় মাস সংরক্ষণ করতে পারে। এতে কোল্ড স্টোরেজের খরচ কমে। কৃষক আর্থিকভাবে লাভবান হয়। কৃষক তার সুবিধা মতো সময়ে আলু বিক্রি করতে পারে। কোল্ড স্টোরেজে রাখলে দেখা যায় নিজের সুবিধা মতো সময়ে আলু বিক্রি করতে পারে না।’
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, জেলায় সাতটি হিমাগারে ধারণক্ষমতা ৪৬ হাজার ৫৩০ টন। উৎপাদিত অতিরিক্ত আলু বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হয়।