ধ্রুবজিতের বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা এবং তার ফেলে যাওয়া অগণিত স্মৃতিচারণে গভীর শোক নেমে আসে শিক্ষার্থীদের মাঝে। রাত সাড় ৭টায় মোমবাতি জ্বালিয়ে স্মরণ করে ময়মনসিংহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের শিক্ষার্থীরা।
ধ্রুবজিৎ এর বন্ধু কামরুল ইসলাম বলেন, ‘আজ আমরা গভীর শোক ও শ্রদ্ধার সঙ্গে আমাদের সহপাঠী, প্রিয় বন্ধু ধ্রুবজিৎ এর অকাল মৃত্যুতে মোমবাতি প্রজ্বলন করেছি। একটি প্রাণ, একটি স্বপ্ন, একটি সম্ভাবনার নির্মম অবসান আমাদের ব্যথিত ও শোকাভিভূত করেছে। এই আয়োজন কোনো আনুষ্ঠানিকতা নয়, এটি আমাদের অন্তরের ব্যথার বহিঃপ্রকাশ
অন্য একজন বলেন, ‘আমরা ধ্রুবজিতের বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করি এবং তার পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাই। একজন মেধাবী শিক্ষার্থীকে হারিয়ে আমরা শুধু একজন সহপাঠীকেই হারাইনি, বরং হারিয়েছি একটি উজ্জ্বল ভবিষ্যৎকে। আমরা দাবি জানাই, যে আমাদের এই চলমান পরীক্ষা সিস্টেম আমার বন্ধুর মৃত্যুর জন্য দায়ী, অতিদ্রুত এই সিস্টেম আমরা বাতিল চাই।’
আজকের এই প্রজ্বলিত মোমবাতির আলো যেন বিবেককে জাগ্রত করে এবং ধ্রুবজিতের স্মৃতি মানবিক মূল্যবোধকে আরও দৃঢ় করে এবং ধ্রুব সকল শিক্ষার্থীর মাঝে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকে যেন ধ্রুবতারার মতোই এমনটাই প্রত্যাশা করে সকল শিক্ষার্থী।
গত রোববার (১৮ মে) সুইসাইড নোট লিখে আত্মহত্যা করেন ময়মনসিংহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের শিক্ষার্থী ধ্রুবজিৎ কর্মকার। কম্পিউটার স্যায়েন্স এন্ড ইন্জিনিয়ারিং বিভাগের তৃতীয় বর্ষের দ্বিতীয় সেমিস্টারের শিক্ষার্থী ছিলেন তিনি। পরীক্ষার হলে নিয়মবহির্ভূতভাবে প্রশ্নপত্রের পেছনে লিখে নিয়ে যাওয়ায় দায়িত্বরত শিক্ষক তার খাতা এবং এডমিট কার্ড নিয়ে তাকে হল থেকে বের করে দেন।
পরে এক পর্যায়ে পরীক্ষার হল থেকে বেড়িয়ে রুমে ঢুকে আত্মহত্যা করেন ধ্রুব। এসময় সুইসাইড নোটে তার মৃত্যুর জন্য দায়ী করেন ‘বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থাকে’।
এদিকে ময়মনসিংহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের শিক্ষার্থী ধ্রুবজিৎ কর্মকারের আত্মহত্যার কারণে চলমান পরিস্থিতি ও শিক্ষার্থীর বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনাসহ শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড টেকনোলজি অনুষদের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ বা ইনস্টিটিউট কেন্দ্রে চলতি সপ্তাহে ২০ মে, ২১ মে ও ২২ মে অনুষ্ঠেয় সকল পরীক্ষা স্থগিত করা করেছে। আগামী সপ্তাহের চলমান পরীক্ষাসমূহ পূর্বঘোষিত সময়সূচি অনুযায়ী যথারীতি অনুষ্ঠিত হবে বলে এক চিঠিতে জানানো হয়।