চুয়াডাঙ্গায় ইজিবাইকে ট্যাংকলরির চাপা; তিনজনের মৃত্যু, শিশুসহ আহত ৫

ট্যাংকলরি ও ইজিবাইক
ট্যাংকলরি ও ইজিবাইক | ছবি: এখন টিভি
1

চুয়াডাঙ্গায় ইজিবাইকে ট্যাংকলরির (তেলবাহী ট্যাংকার) চাপায় দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে নারীসহ তিনজন নিহত হয়েছেন। একই দুর্ঘটনায় নারী ও শিশুসহ আরো পাঁচজন গুরুতর আহত হয়েছেন। শুক্রবার (৪ জুলাই) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে সদর উপজেলার জাফরপুর বিজিবি ক্যাম্প ও বনবিভাগ অফিসের কাছে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

দুর্ঘটনাস্থলেই নিহত হন দু'জন। তাদের মধ্যে একজনের পরিচয় পাওয়া যায়নি। অন্যজন হলেন সদর উপজেলার নেহালপুর ইউনিয়নের হিজলগাড়ী গ্রামের আসকার আলীর মেয়ে মাছুরা খাতুন (৫৯)। অপরদিকে সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত পৌঁনে নয়টার দিকে মারা যান ইজিবাইকের চালক আরিফুল ইসলাম (৩৫)। নিহত ইজিবাইক চালক আরিফুল ইসলাম দামুড়হুদার জয়রামপুর গ্রামের নূর মোহাম্মদের ছেলে।

আহতরা হলেন- ইজিবাইকের যাত্রী সরোজগঞ্জ সিপি ফ্যাক্টরিতে কর্মরত দেলোয়ার হোসেন সাইম (২৮), দামুড়হুদার দুধপাতিলা গ্রামের জিল্লুর রহমানের ছেলে আল আমিন (২২), চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার পদ্মবিলা ইউনিয়নের হায়দারপুর গ্রামের মৃত সোনা মিয়ার ছেলে ফাহাদ আহম্মেদ (২২), তার স্ত্রী রিয়া খাতুন (২০)  ও তাদের শিশু সন্তান ইয়াসিন (১)।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, চুয়াডাঙ্গা থেকে একটি তেলবাহী ট্যাংকার ঝিনাইদহের দিকে যাচ্ছিলো। বন বিভাগের সামনে পৌঁছালে রাস্তায় ভেঙে পড়া একটি গাছের ডাল থেকে বাঁক নিতে গেলে চুয়াডাঙ্গামুখি একটি ইজিবাইকের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ইজিবাইকের দুই যাত্রী ঘটনাস্থলেই মারা যান। আহত হয় ইজিবাইকের চালক, নারী ও শিশুসহ আরো পাঁচজন। পরে স্থানীয়রা তাদেরকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নিয়ে আসি।

ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে ইজিবাইকের এক যাত্রী সরোজগঞ্জ সিপি ফ্যাক্টরিতে কর্মরত দেলোয়ার হোসেন সাইম বলেন, 'আমি ও চালকসহ ইজিবাইকে মোট ৭ জন যাত্রী ছিলাম। সবাই চুয়াডাঙ্গার উদ্দেশে যাচ্ছিলেন। পথে হঠাৎ একটি জ্বালানি তেলবাহী ব্যারেল ট্যাংকারের সঙ্গে ইজিবাইকের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই দু'জনের মৃত্যু হয়। আমি ইজিবাইকের ভেতরে সিটে বসে ছিলেন, কিছু বুঝে ওঠার আগেই দুর্ঘটনা ঘটে যায়।'

হাসপাতালের জরুরি বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসক ডা. আল ইমরান জুয়েল বলেন, 'সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত একই দুর্ঘটনায় জখম পাঁচজনকে জরুরি বিভাগে আনা হয়। দায়িত্বরত চিকিৎসক তাদেরকে তাৎক্ষণিক চিকিৎসা দিয়ে অবজারভেশনে রাখেন। তাদের মধ্যে দুইজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক ছিলো। উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়েছিলো। তবে রাজশাহী নেয়ার আগেই পুরুষ সার্জারি বিভাগে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ৯টার দিকে আরিফুল ইসলাম নামের একজনের মৃত্যু হয়। এছাড়া দুর্ঘটনায় দু'জনকে মৃত অবস্থায় জরুরি বিভাগে আনা হয়েছিলো।

এ বিষয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ওসি খালেদুর রহমান বলেন, 'ঘটনা সম্পর্কে জেনেছি, ঘটনাস্থলে দুজন ও চিকিৎসাধীন একজনসহ তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। দুই জনের পরিচয় পাওয়া গেলেও অন্য একজনের পরিচয় পাওয়া যায়নি। ট্যাংকার ও ইজিবাইক জব্দ করা হয়েছে। তবে ট্যাংকারের চালককে পাওয়া যায়নি। তাকে খুঁজতে অনুসন্ধান চলছে।'

আসু