কোথাও লেগে আছে রক্তের দাগ, কোথাও পড়ে আছে ভাঙা দেয়ালের খণ্ডাংশ। ডানে বামে তাকালেই চোখে পড়ে অ্যাম্বুলেন্স, প্রাইভেটকার আর বাসের ক্ষতচিহ্ন। সবমিলিয়ে যেন এক ধ্বংসস্তূপ। বাদ যায়নি আশপাশের ভবনের জানালা কিংবা থাই গ্লাস।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রংপুর-সৈয়দপুর মহাসড়কের মেসার্স সিও বাজার এলপিজি স্টেশনে রিজার্ভার মেরামতের সময় বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে। এতে ঘটনাস্থলে নিহত হন সেখানে কর্মরত এক প্রকৌশলী। ক্ষতিগ্রস্ত হয় ফিলিং স্টেশনে পার্কিংয়ে থাকা অন্তত বিশটি গাড়ি। বিকট শব্দে আশপাশের ভবনে ফাঁটল ছাড়াও উড়ে যায় কয়েকটি টিনের ঘর।
একজন জানান, কয়েকদিন ধরে এ স্টেশন বন্ধ ছিল। হয়তো ইঞ্জিনিয়ার কাজ করছিলেন। সে থাকা অবস্থায়ই এ দুর্ঘটনা ঘটে। আরেক অধিবাসী জানান, কোনো খানে কোনো লিকেজ আছে নাকি হাওয়া দিয়ে সেটি পরীক্ষার সময় হয়তো হাওয়ার গতি বেশি ছিল, যে কারণে বিস্ফোরণ হয়েছে।
এসময় ঘটনাস্থলের পাশের সড়কে চলমান ঢাকাগামী একটি কোচও ক্ষতির শিকার হয়। উৎসুক জনতার ভিড় সামাল দিতে মোতায়েন করা হয় বিপুল সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করে ফায়ার সার্ভিসের চারটি ইউনিট। আবাসিক এলাকায় এমন ঝুঁকিপূর্ণ কাজ মেরামতে মালিক পক্ষের উদাসীনতায় ক্ষোভ জানান এলাকাবাসী।
আরেকজন জাননা, এসি থেকে শুরু করে গাড়ির বডিও সব কিছু উড়ে গেছে। এসময় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স কর্মকর্তারা জানান, বায়ুর অতিরিক্ত চাপ থেকে এ দুর্ঘটনা ঘটে থাকতে পারে।
রংপুর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপপরিচালক বাদশা আলম বলেন, ‘মেরামতের কারণে ভেতরে চাপ তৈরি হয়েছে। কেননা ভেতরে গ্যাসের প্রচুর চাপ থাকে। চাপের কারণে বিস্ফোরণ ঘটেছে। রাস্তায় যে গাড়ি ছিল সেগুলোর গ্লাস ভেঙেছে। আশেপাশের বিল্ডিংয়ের সবগুলো গ্লাস ভেঙেছে। অনেক বাড়ির টিনের চাল উড়ে গেছে। তদন্ত ছাড়া এগুলোর ক্ষতি নিরুপণ করা সম্ভব না।’
দুর্ঘটনায় আহত আরও ১২ থেকে ১৫ জনকে তাৎক্ষণিক রংপুর মেডিকেলে ভর্তি করা হয়। এর মধ্যে গুরুত্বর আহত অন্তত ৪ জন। দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান এলাকাবাসীর।