আজ (রোববার, ২৭ জুলাই) দুপুরে ভোলার তজুমদ্দিন উপজেলা বিএনপির ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘যে গণতন্ত্রের জন্য শহিদ আবু সাঈদ জীবন দিয়েছেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার এসে সেই গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনবে— এমনটাই আশা করেছিলাম। কিন্তু এখন নির্বাচন দিতে গড়িমসি করা হচ্ছে। বাংলাদেশে এক ধরনের রাজনৈতিক দল গড়ে উঠেছে, যাদের দলে হাতে গোনা দুই-তিনজন নেতাকর্মী। তারা এসে শুধু সংস্কারের কথা বলে। আর কিছু উপদেষ্টা ভাবছেন, ক্ষমতায় থেকে আরামে থাকা যায়, এমনকি সুযোগ পেলে অর্থও উপার্জন করা যায়।’
মেজর হাফিজ বলেন, ‘ছাত্ররা অনেক সংগ্রাম করলেও দুর্নীতির কাছে তারা দ্রুত আত্মসমর্পণ করেছে। তারা আমাদের নাতি-ছেলের বয়সী। আমরা চাই তারা রাজনীতিতে ধীরে ধীরে সাবালক হয়ে উঠুক। একসময় তারা সরকার গঠন করুক— তাদের জন্য শুভকামনা রইলো। তবে এত তাড়াতাড়ি বিএনপির সিনিয়র নেতাদের নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করা অনুচিত। এনসিপি আমাদের ছেলেদের মতো, তাদের সঙ্গে বিএনপির কোনো বিরোধ নেই।’
আওয়ামী লীগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশেই দেশে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা চালু হয়েছিল। তার কন্যা শেখ হাসিনা এখন গণতন্ত্র হত্যা করছেন। সংসদে শেখ পরিবারেরই ৩৪ জন সদস্য ছিলেন। এরা দেশের টাকা লুট করে বিদেশে পাহাড় গড়েছে। আওয়ামী লীগের সঙ্গে আর কোনো দোস্তি নয়— ১৭ বছর ধরে তারা আমাদের উপর অন্যায়-অত্যাচার করেছে। বিএনপি ক্ষমতায় এলে এর বিচার হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘দলের নেতাকর্মীরা যদি ঐক্যবদ্ধ থাকে, তাহলে শহিদ জিয়াউর রহমানের স্বপ্ন— একটি স্বাধীন ও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ে তোলা সম্ভব।’
তজুমদ্দিন উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে প্রধান বক্তা ছিলেন বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আ ক ম কুদ্দুসুর রহমান। সম্মেলনের উদ্বোধন করেন কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাছের রহমত উল্যাহ। বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক গোলাম নবী আলমগীর, যুগ্ম আহ্বায়ক শফিউর রহমান কিরণ ও সদস্যসচিব রাইসুল আলম।
সম্মেলনের সভাপতিত্ব করেন উপজেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক গোলাম মোস্তফা মিন্টু। সম্মেলনের প্রথম অধিবেশনে সাবেক ও বর্তমান নেতারা বক্তব্য দেন। দ্বিতীয় অধিবেশনে কাউন্সিলরদের ঐকমত্যে গোলাম মোস্তফা মিন্টুকে সভাপতি ও ওমর আসাদ মিন্টুকে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নতুন কমিটি গঠন করা হয়।
বৈরী আবহাওয়া উপেক্ষা করে ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায় থেকে হাজারো নেতাকর্মী মিছিল নিয়ে সম্মেলনে যোগ দেন। ঝড়-বৃষ্টিতে ভিজেও স্লোগানে মুখর ছিল তজুমদ্দিন উপজেলা সদরের চারপাশ।