সোয়া ২ ঘণ্টা পর ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের অবরোধ প্রত্যাহার, যান চলাচলে ধীরগতি

এলাকাবাসীর বিক্ষোভ ও অবরোধ, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে জ্যাম
এলাকাবাসীর বিক্ষোভ ও অবরোধ, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে জ্যাম | ছবি: এখন টিভি
0

সোয়া ২ ঘণ্টা পর ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক থেকে অবরোধ প্রত্যাহার করে নিয়েছেন এলাকাবাসী। আজ (বুধবার, ২০ আগস্ট) বেলা পৌনে ১১টার দিকে বিজয়নগর উপজেলার চান্দুরা বাস স্ট্যান্ড এলাকায় সর্বদলীয় সংগ্রাম পরিষদের ব্যানারে অবরোধ এ কর্মসূচি শুরু হয়।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ (সদর ও বিজয়নগর) আসনের অন্তর্ভুক্ত বিজয়নগর উপজেলার তিনটি ইউনিয়নকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল ও আশুগঞ্জ) আসনে যুক্ত করে নির্বাচন কমিশন। এর প্রতিবাদে আজ ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করে সোয়া দুই ঘণ্টা বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

এর ফলে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের দুইপাশে অন্তত ২০ কিলোমিটার এলাকায় তীব্র যানজট তৈরি হয়। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েন দূর-দূরান্তের যাত্রীরা। পরে প্রশাসনের আশ্বাসে দুপুর ১টায় অবরোধ তুলে নেন আন্দোলনকারীরা। তবে দীর্ঘ সময় যানজটের কারণে গাড়ির চাপ বেড়ে যান চলাচলে ধীরগতি দেখা দিয়েছে।

এর আগে গত ৩০ জুলাই নির্বাচন কমিশন আসন সীমানা পুনর্বিন্যাসের মাধ্যমে বিজয়নগর উপজেলার চান্দুরা, হরষপুর ও বুধন্তি ইউনিয়নকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ (সদর ও বিজয়নগর) থেকে পৃথক করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল ও আশুগঞ্জ) আসনের সঙ্গে যুক্ত করে। এর প্রতিবাদে গেল কয়েকদিন ধরেই আন্দোলন কর্মসূচি পালন করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এ আন্দোলনে যুক্ত হয়েছেন স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাকর্মীরাও।

অবরোধ চলাকালে বক্তব্য রাখেন সর্বদলীয় সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক ইমাম হোসেন, যুগ্ম আহ্বায়ক মাওলানা আফজাল হোসেন ও ডা. রফিকুল ইসলাম প্রমুখ।

এ সময় বক্তারা বলেন, ‘আসন সীমানা পুনর্বিন্যাসের মাধ্যমে ষড়যন্ত্র চলছে। এরইমধ্যে পৃথক করা তিন ইউনিয়নকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ (সদর ও বিজয়নগর) আসনের সঙ্গে পুনর্বহালের জন্য নির্বাচন কমিশনে আবেদন করা হয়েছে। এ দাবি মানা না হলে পরবর্তীতে রেলপথ অবরোধসহ কঠোর কর্মসূচি দেয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন বক্তারা।

এদিকে, সোয়া দুই ঘণ্টা অবরোধের ফলে সৃষ্ট তীব্র যানজটের কারণে চরম ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রীরা। যানজট পার্শ্ববর্তী হবিগঞ্জের মাধবপুর বাস স্ট্যান্ড ছাড়িয়ে যায়। এ অবস্থায় তীব্র গরমে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েন যাত্রীরা।

সিলেট থেকে আসা ঢাকাগামী বিলাশ পরিবহনের যাত্রী আশিকুর রহমান জানান, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে চলমান উন্নয়ন প্রকল্পের কারণে ব্রাহ্মণবাড়িয়া এমনিতেই ধীরগতিতে চলে যানবাহন। যানজটের কারণে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিশ্বরোড মোড় থেকে আশুগঞ্জ গোল চত্বর যেতে কয়েক ঘণ্টা লেগে যায়। এর মধ্যে দাবি আদায়ের নামে দীর্ঘ সময় মহাসড়ক অবরোধ করে সাধারণ মানুষকে কষ্ট দেয়া কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।

সর্বদলীয় সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক ইমাম হোসেন বলেন, ‘বিজয়নগরের তিন ইউনিয়নকে পৃথক করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল ও বিজয়নগর) আসনে যুক্ত করার কারণে এখানকার বাসিন্দারা উন্নয়ন বঞ্চিত হওয়ার পাশাপাশি প্রশাসনিক ও অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। এটি কোনোভাবেই মানা যায় না। অতীতেও বিজয়নগরের এ তিন ইউনিয়ন নিয়ে ষড়যন্ত্র হয়েছে।’ অবিলম্বে তিন ইউনিয়নকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনে অন্তর্ভুক্ত না করলে আরও কঠোর আন্দোলনে কর্মসূচি দেয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন তিনি।

বিজয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শহীদুল ইসলাম জানান, আন্দোলনকারীদের দাবির বিষয়ে আগামী ২৪ আগস্ট নির্বাচন কমিশনে শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। শুনানির মাধ্যমে দাবির বিষয়ে সুষ্ঠু সমাধানের আশ্বাস পেয়ে অবরোধ তুলে নিলে মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।

এএইচ