চট্টগ্রামের লালদিয়া কনটেইনার টার্মিনাল প্রকল্প এবং ঢাকার কাছে পানগাঁও অভ্যন্তরীণ কনটেইনার টার্মিনাল পরিচালনার দায়িত্ব দুটি বিদেশি প্রতিষ্ঠানকে দেওয়ার বিষয়টি সামনে আসার পর এ নিয়ে চলছে নানা ধরনের আলোচনা । দীর্ঘ মেয়াদী এ চুক্তি করার ক্ষেত্রে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার তাড়াহুড়ো করলো কিনা এমন প্রশ্নও সামনে আসছে।
গত ১৭ নভেম্বর চট্টগ্রাম বন্দরের লালদিয়া কনটেইনার টার্মিনালটি ৩০ বছরের জন্য পরিচালনার দায়িত্ব পেয়েছে ডেনমার্কভিত্তিক প্রতিষ্ঠান এপি মোলার। আর বুড়িগঙ্গার পাড়ে পানগাঁও কনটেইনার টার্মিনালকে ২২ বছরের জন্য সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান মেডলগের দায়িত্বে দিতে চুক্তি স্বাক্ষর করেছে সরকার। তবে সবকিছু ছাপিয়ে এখন শুরু হয়েছে লাভ ক্ষতির হিসাব।
এ দিকে চুক্তির শর্তগুলো অপ্রকাশিত রেখে বন্দরের দায়িত্ব বিদেশিদের তুলে দেয়া হলে জাতীয় নিরাপত্তায় হুমকি বলে মনে করেন, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি।
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘এভাবে ইজারা দেয়ার কথা জনগণের সামনে না আনা, চুক্তিগুলো প্রকাশ্যে না আনা, জনগণের সঙ্গে আলাপ আলোচনা না করা, স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে আলোচনা না হওয়া এসবগুলো বিষয়ের দিক থেকে নানা ধরনের প্রশ্ন উঠেছে। সে কারণে আমরা বলেছি যে অবশ্যই এরকম একটি বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হলে স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে রাজনৈতিকদলগুলোর সঙ্গে খোলামেলা আলোচনা করতে হবে।’
তবে বন্দর ব্যবহার কর্তৃপক্ষ এবং ব্যবসায়ী নেতারা বলছেন, বিদেশিদের তত্ত্বাবধানে বন্দর পরিচালিত হলে বাড়বে দেশিয় শ্রমিকদের কর্মদক্ষতা এবং সেই সঙ্গে বন্ধ হবে চাঁদাবাজি। এতে করে ব্যয় কমবে রপ্তানি কারকদের।
আরও পড়ুন:
পোর্ট ইউজার ফোরাম কনভেনার আমীর হুমায়ূন মাহমুদ বলেন, ‘ইকুইপমেন্ট যদি ভালো থাকে তাহলে পোর্ট হ্যান্ডেলিং ইজি হয়ে যাবে। ম্যানপাওয়ারগুলো ট্রেন্ড হবে। ইকুইপমেন্ট ভালো আসলে আমার এফিসিয়েন্সি বাড়বে। এখান থেকে যদি ডাইরেক্ট চলে যেতে পারি আমার খরচ অনেক কমবে। আমার সময় অনেক বাঁচবে।’
এফ বি সি সি আই সংস্কার পরিষদ চেয়ারম্যান আতিকুর রহমান বলেন, ‘মেশিন না থাকার কারণে, আধুনিক টেকনলজি না থাকার কারণে আমরা সঠিক সময়ে মাল খালাস করতে পারি না। এখানে বিভিন্ন রকম কনটেইনার জট হচ্ছে। শ্রমিকদের দিয়ে বিভিন্ন রকম প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হচ্ছে। কাস্টমসের একটি নেগলিজেন্সি থাকে। বড় বড় আধুনিক বন্দর যারা পরিচালনা করছে তাদের যদি এখানে না নিয়ে আসা হয় তাহলে কখনোই হবে না।’
বিশ্বের প্রতিষ্ঠিত এবং অন্যতম বন্দর পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠানগুলো বাংলাদেশের বন্দরগুলো পরিচালনা করলে বিশ্বাসযোগ্যতার পাশাপাশি বাড়বে বৈদেশিক মুদ্রার আয়। উন্নত হবে বন্দরের অবকাঠামো এতে করে বাঁচবে সময় এমনটাই দাবি করলেন মেডলগ বাংলাদেশের ম্যানেজিং ডিরেক্টর।
মেডলগ বাংলাদেশের ম্যানেজিং ডিরেক্টর এটিএম আনিসুল মিল্লাত বলেন, ‘লার্জেস্ট শিপিং কোম্পানি, ফ্যাক্টারি থেকে যাওয়ার সময় মাঝে কিছু কার্গো লস হয়। সেটিকে সিকিউর করতে হবে। এতে টোটাল লিড টাইম কমে আসবে কার্বন নির্গমন কম হবে। টোটাল ইমপ্যাক্ট পড়বে আমাদের দেশের অর্থনীতিতে।’
তবে দেশের উন্নয়ন এবং শ্রমিক দক্ষতা বাড়ানোর নামে যেন দেশ বিরোধী কোনো চুক্তি না হয় এমন প্রত্যাশা বিশেষজ্ঞদের।





