বাংলাদেশের পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কের পরিমাণ ছিল ১৫ শতাংশ। তবে নতুন করে ৩৫ শতাংশ আরোপে তা দাঁড়িয়েছে ৫০ শতাংশে। এমন বাস্তবতায় সবচেয়ে বড় ধাক্কা খেতে যাচ্ছে দেশের পোশাক খাত। কেননা যুক্তরাষ্ট্রই বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ক্রেতা।
যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি হওয়া প্রধান পণ্য পোশাক। বৃহৎ এ রপ্তানি পণ্যে কী প্রভাব পরতে পারে, তা নিয়ে চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ।
যুক্তরাষ্ট্রের পোশাকের বাজারে বাংলাদেশের অন্যতম প্রতিপক্ষ ভিয়েতনাম মার্কিন শুল্কহার কমিয়ে এনেছে ২০ শতাংশে, যা বাংলাদেশের চেয়ে ১৫ শতাংশ কম। ফলে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশের চেয়ে সুবিধাজনক অবস্থানে ভিয়েতনামে। তাই স্বভাবতই প্রশ্ন উঠছে, বড় শুল্ক ব্যবধান নিয়ে বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা টিকে থাকতে পারবেন কি না।
এমন বাস্তবতায় যুক্তরাষ্ট্রের নতুন শুল্কহারে দেশটির বাজারে পোশাকের দাম বৃদ্ধি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমদানি চাহিদা কমে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা।
বিজিএমইএ নেতারা বলছেন, নতুন শুল্কনীতি রপ্তানি খাতে চাপ বাড়াবে। এ পরিস্থিতি মোকাবিলায় যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে রাজনৈতিকভাবে সমঝোতার ওপর জোর দেন তারা।
বিজিএমইএ’র সহ-সভাপতি আসিফ আশরাফ বলেন, ‘সরকার থেকে নেগোসিয়েশন করা হতো, ব্যবসায়ীরা এর সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন না। ব্যবসায়ীরা বড় স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকা উচিত ছিল। আমেরিকার সঙ্গে রাজনৈতিকভাবে নেগোসিয়েশন করতে হবে।’
যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কনীতির আঘাত দেশের অর্থনীতির জন্য উদ্বেগজনক বলছেন অর্থনীতি বিশ্লেষকরা। শুল্কের প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে না থেকে দুই দেশের বাণিজ্য বৈঠকে সমন্বয়ের তাগিদ দেন তারা।
সিপিডির সম্মানীয় ফেলো ড. গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, ‘যারা একটি পণ্যের ওপর নির্ভরশীল, তারা কিন্তু তাদের পণ্যের ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতা সক্ষমতা নাও ধরে রাখতে পারে। সেক্ষেত্রে তাদের ব্যবসা সংকুচিত হওয়ার একটা আশঙ্কা রয়েছে। স্টেকহোল্ডার বা রিসার্চারদের প্রতিনিধিরাও সরকারের সঙ্গে থাকেন এবং সরকারকে টেকনিক্যাল উপদেশ দেন। তবে এরকম কিছু আমরা এক্ষেত্রে দেখছি না।’
এদিকে মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধির সঙ্গে বাংলাদেশের দ্বিতীয় দফার বৈঠকে শুল্কনীতি নিয়ে এখন পর্যন্ত আসেনি কোনো ইতিবাচক সিদ্ধান্ত।