অনেকেই ড্রাইভিং লাইসেন্স করার প্রক্রিয়া নিয়ে বিভ্রান্তিতে ভোগেন। ঘরে বসে ড্রাইভিং লাইসেন্সের আবেদন এখন আরও সহজ।আজকের এই প্রতিবেদনে ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়ার সম্পূর্ণ প্রক্রিয়া, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র এবং আনুমানিক খরচ ধাপে ধাপে তুলে ধরা হলো:
আরও পড়ুন:
ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়ার যোগ্যতা (Eligibility for Driving License)
ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রাপ্তির জন্য আবেদনকারীকে নিম্নলিখিত সাধারণ এবং বিশেষ শর্তাবলী পূরণ করতে হবে:
- শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ (Physically and Mentally Fit) থাকতে হবে।
- আবেদনকারীর ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা অষ্টম শ্রেণি পাস (Minimum Class VIII Pass) হতে হবে।
- লার্নার বা শিক্ষানবিস ড্রাইভিং লাইসেন্স (Learner/Provisional License) সংগ্রহ করতে হবে।
- অপেশাদার লাইসেন্স পেতে হলে বয়স ১৮ বছর হতে হবে।
- পেশাদার লাইসেন্সের ক্ষেত্রে ২১ বছর বয়স হওয়া বাধ্যতামূলক।
আরও পড়ুন:
ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়ার প্রক্রিয়া (Step-by-Step Process):
বৈধ ড্রাইভিং লাইসেন্স পেতে প্রধানত তিনটি ধাপ পার হতে হয়:
ধাপ ১: লার্নার লাইসেন্স (Learner's License) সংগ্রহ
প্রথমে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ বা বিআরটিএ (BRTA)-এর নির্ধারিত ফরমে আবেদন করে আপনাকে একটি শিক্ষানবিস বা লার্নার ড্রাইভিং লাইসেন্স নিতে হবে। এই লাইসেন্স দিয়ে আপনি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য গাড়ি চালানো শিখতে পারবেন।
ধাপ ২: লিখিত, মৌখিক ও ব্যবহারিক পরীক্ষা
লার্নার লাইসেন্স পাওয়ার নির্দিষ্ট সময় পর আপনাকে লিখিত, মৌখিক এবং ব্যবহারিক (ফিল্ড টেস্ট) পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হবে। দক্ষতা, ট্রাফিক আইন জ্ঞান এবং সড়কে সচেতনতা যাচাই করাই এই পরীক্ষার মূল লক্ষ্য। এই পরীক্ষাগুলোতে উত্তীর্ণ হলেই কেবল স্মার্ট কার্ডের জন্য আবেদন করা যায়।
আরও পড়ুন:
ধাপ ৩: স্মার্ট কার্ডের জন্য আবেদন ও বায়োমেট্রিক
পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর নির্ধারিত ফি জমা দিতে হবে এবং বিআরটিএ অফিসে গিয়ে আপনার আঙুলের ছাপ, ছবি ও ডিজিটাল স্বাক্ষর (Biometrics) দিতে হবে। বায়োমেট্রিক সম্পন্ন হওয়ার পর একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে আপনার স্মার্ট ড্রাইভিং লাইসেন্স কার্ড (Smart Driving License Card) আপনার ঠিকানায় পাঠিয়ে দেওয়া হবে বা বিআরটিএ থেকে সংগ্রহ করতে বলা হবে।
পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স: যোগ্যতা ও বয়সসীমার নতুন নির্দেশনা, ধাপে ধাপে হেভি লাইসেন্স পাওয়ার নিয়ম
বাংলাদেশে বাণিজ্যিক বা ভাড়ায় চালিত মোটরযান চালানোর জন্য পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স (Professional Driving License) প্রাপ্তির ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট নিয়ম ও শর্তাবলী রয়েছে। সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে মোটরযানের ওজন এবং চালকের অভিজ্ঞতার ওপর ভিত্তি করে লাইসেন্সকে তিনটি ধাপে ভাগ করা হয়েছে।
১. হালকা মোটরযান (Light Motor Vehicle)
পেশাদার লাইসেন্সের প্রথম ধাপ হলো হালকা মোটরযান লাইসেন্স। এই লাইসেন্স ২৫০০ কেজি বা তার নিচের ওজনের মোটরযান চালানোর অনুমতি দেয়। এই লাইসেন্সের জন্য আবেদন করতে চালকের বয়স কমপক্ষে ২০ বছর হতে হবে। এটিই একমাত্র পেশাদার লাইসেন্স, যার জন্য কোনো পূর্ব অভিজ্ঞতার প্রয়োজন হয় না।
আরও পড়ুন:
২. মধ্যম মোটরযান (Medium Motor Vehicle)
হালকা লাইসেন্স পাওয়ার পর অভিজ্ঞতা অর্জনের মাধ্যমে চালকরা মধ্যম লাইসেন্সের জন্য আবেদন করতে পারেন। ২৫০০ কেজি থেকে ৬৫০০ কেজি ওজনের মোটরযান চালানোর জন্য এই লাইসেন্স আবশ্যক। আবেদনকারীর বয়স কমপক্ষে ২৩ বছর হতে হবে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ শর্ত হলো, আবেদনকারীর কাছে কমপক্ষে ৩ বছরের হালকা মোটরযানের পেশাদার লাইসেন্সের পূর্ব অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
৩. ভারী মোটরযান (Heavy Motor Vehicle)
বাণিজ্যিক পরিবহনের সর্বোচ্চ ধাপ হলো ভারী মোটরযান লাইসেন্স। ওজন সীমা: ৬৫০০ কেজির বেশি ওজনের সব ধরনের ভারী যানবাহন (যেমন বড় ট্রাক, বাস ইত্যাদি) চালানোর জন্য এটি প্রয়োজন। এই লাইসেন্সের জন্য আবেদনকারীর বয়স কমপক্ষে ২৬ বছর হতে হবে। এবং তাকে অবশ্যই কমপক্ষে ৩ বছরের মধ্যম মোটরযানের পেশাদার লাইসেন্সধারী হতে হবে।
এই কঠোর নিয়মগুলো ধাপে ধাপে অভিজ্ঞতা অর্জনের মাধ্যমে সড়কে চালকের দক্ষতা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্যই আরোপ করা হয়েছে। এক ধাপ থেকে অন্য ধাপে যেতে হলে চালককে অবশ্যই সফলভাবে ব্যবহারিক ও অন্যান্য পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হয়।
ঘরে বসে লার্নার ড্রাইভিং লাইসেন্স আবেদন: কী কী কাগজপত্র লাগবে? (Required Documents for Online Learner's License)
ড্রাইভিং লাইসেন্সের প্রথম ধাপ লার্নার বা শিক্ষানবিশ ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য এখন খুব সহজেই অনলাইনে আবেদন করা যায়। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)-এর ওয়েবসাইটে এই আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার আগে আবেদনকারীদের অবশ্যই কিছু গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্টসের স্ক্যান কপি প্রস্তুত রাখতে হবে। যেহেতু আবেদনটি সম্পূর্ণ অনলাইনে হয়, তাই প্রতিটি ফাইলের সাইজ ও ফরম্যাট (File Size and Format) নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে থাকতে হবে। অনলাইন আবেদনের জন্য প্রয়োজনীয় ডিজিটাল ডকুমেন্টসের তালিকা:
আরও পড়ুন:
লার্নার লাইসেন্সের জন্য আবেদন করতে আপনাকে নিম্নলিখিত ৪টি স্ক্যান কপি আপলোড করতে হবে:
১. প্রার্থীর ছবি (Photograph): ৩০০ x ৩০০ পিক্সেল (Pixels) সাইজের ছবি হতে হবে। ছবির ফাইলের আকার সর্বোচ্চ ১৫০ কিলোবাইট (KB) হতে পারবে।
২. মেডিকেল সার্টিফিকেট (Medical Certificate): রেজিস্টার্ড ডাক্তার কর্তৃক সই করা এবং পূরণকৃত মেডিকেল সার্টিফিকেট ফর্মের স্ক্যান কপি। এই স্ক্যান কপিটির আকার ৬০০ কিলোবাইটের (KB) বেশি হতে পারবে না।
৩. পরিচয়পত্র (Identity Proof): জাতীয় পরিচয়পত্র (NID) অথবা জন্ম নিবন্ধন সনদ (Birth Certificate) বা পাসপোর্ট-এর স্ক্যান কপি। এই ফাইলটিও সর্বোচ্চ ৬০০ কিলোবাইটের (KB) মধ্যে থাকতে হবে।
৪. ঠিকানার প্রমাণ (Proof of Address): আবেদনকারীর বর্তমান ঠিকানার প্রমাণ হিসেবে গ্যাস, বিদ্যুৎ বা পানির বিলের স্ক্যান কপি। এই ফাইলটিও সর্বোচ্চ ৬০০ কিলোবাইটের (KB) মধ্যে থাকতে হবে।
আরও পড়ুন:
অনলাইনে আবেদন করার আগে ফাইলগুলো নির্দিষ্ট আকারের মধ্যে সঠিকভাবে প্রস্তুত রাখা হলে প্রক্রিয়াটি দ্রুত ও সফলভাবে সম্পন্ন করা সম্ভব।
লার্নার ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য অনলাইনে আবেদন প্রক্রিয়া (Online Application Process for Learner's License)
ড্রাইভিং লাইসেন্স (Driving License) প্রাপ্তির প্রথম ধাপ অর্থাৎ লার্নার বা শিক্ষানবিস লাইসেন্সের জন্য এখন বিআরটিএ-এর (BRTA) অনলাইন প্ল্যাটফর্মে খুব সহজে আবেদন করা যায়। ঘরে বসেই এই প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করার ধাপগুলো নিচে তুলে ধরা হলো:
১. নিবন্ধন (Registration): প্রথমেই আপনাকে বিআরটিএ সেবা বাতায়ন (BRTA Seba Batayon) নামক অফিশিয়াল পোর্টালে প্রবেশ করতে হবে(https://bsp.brta.gov.bd/register)। সেখানে আপনার জাতীয় পরিচয়পত্র (NID) নম্বর ব্যবহার করে নিবন্ধন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে।
আরও পড়ুন:
২. আবেদন ফরম পূরণ (Filling out the Application Form): ফলভাবে নিবন্ধন করার পর আবেদন ফরমটি পূরণ করতে হবে। এই ফরমে আপনাকে আপনার এনআইডি-এর অনুরূপ (matching NID details) ব্যক্তিগত তথ্যগুলো সরবরাহ করতে হবে। এর আগে প্রস্তুত রাখা সমস্ত স্ক্যান করা কাগজপত্র (Scanned Documents), যেমন—ছবি, মেডিকেল সার্টিফিকেট এবং ঠিকানার প্রমাণপত্র আপলোড করতে হবে।
৩. পরীক্ষার স্থান ও সময় নির্ধারণ (Selecting Exam Location and Time): আবেদন ফরমে আপনাকে আপনার সুবিধামত পরীক্ষার স্থান (Exam Location) নির্বাচন করতে হবে। স্থান নির্বাচন করার সঙ্গে সঙ্গেই, সিস্টেম দ্বারা স্বয়ংক্রিয়ভাবে (Automatically) আপনার লিখিত, মৌখিক ও ব্যবহারিক পরীক্ষার তারিখ ও সময় নির্ধারিত হয়ে যাবে।
৪. ফি জমা ও লাইসেন্স তৈরি (Fee Submission and License Generation): নির্ধারিত পদ্ধতিতে (অনলাইন বা ব্যাংক) লাইসেন্স ফি (License Fee) সফলভাবে জমা হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই আপনার লার্নার বা শিক্ষানবিস ড্রাইভিং লাইসেন্সটি তৈরি হয়ে যাবে। এই লার্নার লাইসেন্সটি ডাউনলোড করে প্রিন্ট করে নিতে পারবেন এবং ড্রাইভিং লাইসেন্স পরীক্ষার সময় (During Driving License Exam) এটিই মূল অনুমতিপত্র হিসেবে ব্যবহার করা যাবে।
স্মার্টকার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য আবেদন প্রক্রিয়া: বায়োমেট্রিক ও কার্ড প্রাপ্তি (Smart Card DL Application Process)
লার্নার (শিক্ষানবিস) লাইসেন্স পাওয়ার পর এবং ড্রাইভিং লাইসেন্স পরীক্ষার গুরুত্বপূর্ণ তিনটি ধাপ—লিখিত, মৌখিক ও ফিল্ড টেস্টে (ব্যবহারিক) সফলভাবে উত্তীর্ণ হওয়ার পরই একজন প্রার্থী চূড়ান্ত স্মার্টকার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্স (Smart Card Driving License)-এর জন্য আবেদন করতে পারেন। স্মার্টকার্ডের জন্য আবেদনের ধাপসমূহ:
১. লাইসেন্স নম্বর প্রাপ্তি: পরীক্ষার তিনটি ধাপে (লিখিত, মৌখিক ও ফিল্ড টেস্ট) উত্তীর্ণ হওয়ার পর আবেদনকারীকে তার লার্নার বা শিক্ষানবিশ ড্রাইভিং লাইসেন্স নম্বর প্রদান করা হবে।
২. অনলাইন আবেদন: এই লাইসেন্স নম্বর ব্যবহার করে প্রার্থীকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও নির্ধারিত ফি জমা দিয়ে স্মার্টকার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য অনলাইনে আবেদন করতে হবে।
আরও পড়ুন:
৩. বায়োমেট্রিক অ্যাপয়েন্টমেন্ট: অনলাইন আবেদনের সময় প্রার্থী তার ছবি (Photograph), ডিজিটাল স্বাক্ষর (Digital Signature) এবং আঙুলের ছাপ (Fingerprints) দেওয়ার জন্য একটি সুবিধাজনক তারিখ (Convenient Date) নির্বাচন করতে পারবেন। এই প্রক্রিয়াটিই হলো বায়োমেট্রিক পদ্ধতি (Biometric Procedure), যা স্মার্টকার্ড তৈরির জন্য আবশ্যক।
৪. কার্ড প্রাপ্তি: বায়োমেট্রিক পদ্ধতি সফলভাবে সম্পন্ন হওয়ার পর, যখন স্মার্টকার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্সটি তৈরি হয়ে যাবে, তখন প্রার্থীকে এসএমএস-এর মাধ্যমে (Via SMS) তা সংগ্রহ করার জন্য সময় জানিয়ে দেওয়া হবে।
এই ধাপে ধাপে প্রক্রিয়া অনুসরণ করার মাধ্যমে একজন প্রার্থী তার দক্ষতা প্রমাণের পর অবশেষে একটি বৈধ ও আধুনিক স্মার্টকার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্স হাতে পান।
দেশের বাইরে গাড়ি চালানোর অনুমতি: আন্তর্জাতিক ড্রাইভিং লাইসেন্স (আইডিএল) আবেদনের নিয়ম (International Driving Permit - IDP Application)
যদি আপনি দেশের বাইরে গাড়ি চালানোর পরিকল্পনা করেন, তবে আপনার প্রয়োজন হবে আন্তর্জাতিক ড্রাইভিং লাইসেন্স (International Driving License - IDL), যা আন্তর্জাতিক ড্রাইভিং পারমিট বা আইডিপি (IDP) নামেও পরিচিত। এটি মনে রাখা জরুরি যে, এই লাইসেন্স সরাসরি বিআরটিএ (BRTA) ইস্যু করে না। বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক ড্রাইভিং লাইসেন্স ইস্যু করার একমাত্র কর্তৃপক্ষ হলো অটোমোবাইল এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (Automobile Association of Bangladesh)। আন্তর্জাতিক ড্রাইভিং লাইসেন্স -এর জন্য আবেদন করতে হলে আপনাকে নিম্নলিখিত ধাপগুলো অনুসরণ করতে হবে:
১. স্মার্ট কার্ড লাইসেন্স আবশ্যক: আন্তর্জাতিক লাইসেন্সের জন্য আবেদন করার আগে আপনাকে অবশ্যই স্মার্ট কার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্স (Smart Card Driving License) সংগ্রহ করতে হবে। এটি হলো আইডিএল পাওয়ার প্রথম ও প্রধান শর্ত।
আরও পড়ুন:
২. আবেদন ফর্ম সংগ্রহ ও পূরণ: প্রথমে অটোমোবাইল এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ-এর মাধ্যমে বা তাদের নির্দেশিত পদ্ধতিতে আবেদন ফর্ম সংগ্রহ করতে হবে। আবেদন ফর্ম সংগ্রহ করার পর তা পূরণ করতে হবে। ফর্মটি পূরণের সময় অবশ্যই আপনার স্মার্টকার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্সে দেওয়া তথ্যের সঙ্গে সম্পূর্ণ সামঞ্জস্য (Matching Smart Card DL Information) বজায় রাখতে হবে।
৩. প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টেশন: আবেদন ফর্মের সাথে স্মার্ট কার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্সের কপি, পাসপোর্ট, ছবি এবং অন্যান্য নির্ধারিত ফি ও কাগজপত্র জমা দিতে হবে।
আন্তর্জাতিক ড্রাইভিং লাইসেন্স (IDL) আবেদনের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও প্রক্রিয়া (Documents for IDL Application)
অটোমোবাইল এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (Automobile Association of Bangladesh) থেকে আন্তর্জাতিক ড্রাইভিং লাইসেন্স (IDL) বা পারমিটের জন্য আবেদন করতে হলে আবেদনকারীকে সুনির্দিষ্ট কিছু কাগজপত্র প্রস্তুত রাখতে হবে এবং তা নির্ধারিত অফিসে জমা দিতে হবে। আবেদন ফর্ম পূরণের পর নিম্নলিখিত ডকুমেন্টগুলো সংযুক্ত করে জমা দিতে হবে:
১. স্মার্টকার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্স: সত্যায়িত ফটোকপি (Attested Photocopy) জমা দিতে হবে। এটি নিশ্চিত করে যে আপনার দেশীয় লাইসেন্স বৈধ এবং কার্যকর আছে।
২. ছবি: এক কপি পাসপোর্ট সাইজ এবং চার কপি স্ট্যাম্প সাইজ ছবি জমা দিতে হবে।
৩. পাসপোর্ট: পাসপোর্টের ১ থেকে ৪ নং পাতার ফটোকপি (Photocopy) জমা দিতে হবে। এই পাতাগুলোতে সাধারণত ব্যক্তিগত তথ্য, ছবি এবং পাসপোর্ট ইস্যুর তথ্য দেওয়া থাকে।
আরও পড়ুন:
আবেদন জমা এবং লাইসেন্স সংগ্রহ প্রক্রিয়া:
১. জমা দেওয়া: পূরণকৃত আবেদন ফর্ম এবং উপরে উল্লিখিত সমস্ত কাগজপত্রসহ নির্ধারিত লাইসেন্স ফি সরাসরি অটোমোবাইল এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (Automobile Association of Bangladesh)-এর অফিসে জমা দিতে হবে।
২. লাইসেন্স সংগ্রহ: ফি জমা দেওয়ার পর যে রশিদ দেওয়া হবে, তাতে লাইসেন্স সংগ্রহের তারিখ (Collection Date) উল্লেখ থাকবে। * সেই নির্ধারিত সময়ে অফিসে গিয়ে আবেদনকারীকে তার আন্তর্জাতিক ড্রাইভিং লাইসেন্সটি সংগ্রহ করতে হবে।
এই প্রক্রিয়া সফলভাবে সম্পন্ন হলে আপনি বৈধভাবে আন্তর্জাতিক ড্রাইভিং লাইসেন্সটি হাতে পাবেন।
ড্রাইভিং লাইসেন্সের খরচ: লার্নার থেকে আন্তর্জাতিক লাইসেন্স পর্যন্ত কত ফি লাগে? (Driving License Fees Breakdown)
ড্রাইভিং লাইসেন্স (Driving License) সংগ্রহ, নবায়ন এবং আন্তর্জাতিক লাইসেন্সের জন্য বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নির্ধারিত ফি ভিন্ন ভিন্ন ধাপে প্রযোজ্য হয়।
১. লার্নার লাইসেন্স:
- মোটরসাইকেল/হালকা যান: ৩৪৫ টাকা
- মোটরসাইকেল + হালকা যান একসাথে: ৫১৮ টাকা
এই ফিতে পরীক্ষা ফি, ফর্ম ফি ও ব্যান্ড রশিদ ফি অন্তর্ভুক্ত।
২. স্মার্টকার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্স ফি (পরীক্ষা পাশের পর):
- অপেশাদার লাইসেন্স (১০ বছর): ২৫৪২ টাকা
- পেশাদার লাইসেন্স (৫ বছর): ১৬৮০ টাকা
৩. আন্তর্জাতিক লাইসেন্স ফি: ২৫০০ টাকা
পুনঃনবায়ন ফি (লাইসেন্স মেয়াদ শেষ হলে):
- অপেশাদার (১০ বছর): ২৫৪২ টাকা
- পেশাদার (৫ বছর): ১৬৮০ টাকা
জরিমানাসহ বিলম্ব ফি (মেয়াদোত্তীর্ণ হলে): মেয়াদ শেষ হওয়ার ১ বছর পর পুনঃনবায়নে অতিরিক্ত ৩০০–৫০০ টাকা পর্যন্ত জরিমানা দিতে হতে পারে।
আরও পড়ুন:
ড্রাইভিং লাইসেন্সের ফি পরিশোধ পদ্ধতি: অনলাইনে মোবাইল ব্যাংকিং ও কার্ড ব্যবহারের সুযোগ (Driving License Fee Payment Method)
ড্রাইভিং লাইসেন্স (Driving License) সংক্রান্ত ফি পরিশোধের প্রক্রিয়া এখন বেশ সরল করা হয়েছে। আবেদনকারী যদি অনলাইনে লাইসেন্সের জন্য আবেদন করেন, তবে তিনি সহজে ফি জমা দিতে পারবেন।
অনলাইন পরিশোধ (Online Payment): অনলাইনে আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার সময় আবেদনকারী মোবাইল ব্যাংকিং (Mobile Banking) সার্ভিস (যেমন: বিকাশ, নগদ ইত্যাদি) অথবা ডেবিট/ক্রেডিট কার্ডের (Debit/Credit Card) মাধ্যমে সরাসরি ফি জমা দেওয়ার সুযোগ পাবেন।
ফি-এর পরিবর্তন: এটি মনে রাখা অত্যন্ত জরুরি যে, ড্রাইভিং লাইসেন্সের ফি নির্ধারিত সরকারি হারে পরিবর্তন হতে পারে (Subject to change by government rates)।
অতএব, ফি-এর কোনো পরিবর্তিত হার বা এই সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্যের জন্য আবেদনকারীকে সবসময় বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) সেবা বাতায়ন ওয়েবসাইট (BRTA Seba Batayon Website) নিয়মিত অনুসরণ করার পরামর্শ দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন:





