বিশ্বব্যাপী আমদানি পণ্যে সম্পূরক শুল্ক ঘোষণার এক সপ্তাহের মাথায় তা ৯০ দিনের জন্য স্থগিত করেছে যুক্তরাষ্ট্র। যদিও ১০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক কার্যকর হচ্ছে প্রতিটি দেশের ক্ষেত্রে। তবে পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে চীনের ওপর এই হার ১৪৫ শতাংশ। বিপরীতে ওয়াশিংটনের পণ্য আমদানিতে ১২৫ শতাংশ শুল্ক নিচ্ছে বেইজিং।
এমন পরিস্থিতিতে শি জিংপিং প্রশাসনের সঙ্গে সমঝোতার চেষ্টা করছে ট্রাম্প সরকার। এ লক্ষ্যে পাঠানো হয়েছে প্রস্তাব। যা মূল্যায়ন করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে চীন। শুক্রবার এক বিবৃতিতে দেশটির বাণিজ্য মন্ত্রণালয় জানায়, শুল্কের বিষয়ে সংলাপের আগ্রহ প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। আলোচনার দরজা সবসময় খোলা থাকলেও লড়াই চাইলে এর শেষ দেখে নেয়ার হুমকিও দিয়েছে বেইজিং।
তবে যুক্তরাষ্ট্র নয়, শুল্কের বিষয়ে আলোচনা চাইছে বেইজিং। ফক্স নিউজকে দেয়া সাক্ষাৎকারে এমনটাই জানিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। জানান, আলোচনা বিষয়ে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে বাণিজ্যমন্ত্রীকে, যার ফল আসতে পারে শিগগিরই। তবে চীনের সঙ্গে আলোচনার আগে এশিয়ার অন্যান্য দেশগুলোর বিষয়ে মনোনিবেশের কথা জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী।
যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট বলেন, ‘অন্যান্য দেশগুলোর সঙ্গে উত্তেজনা নিরসনের আগে আমরা কি চীনের সঙ্গে কোনো চুক্তি দেখতে পারি? সম্ভবত হতে পারে। তবে বাকি দেশগুলোর সঙ্গে ভালো আলোচনা হচ্ছে। আমি বর্তমানে এশিয়ার বাণিজ্য অংশীদারদের বিষয়ে মনোনিবেশ করেছি।’
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বলেন, ‘চীনারা আমাদের কাছে আসছেন। তারা আমাদের সঙ্গে দেখা করার পাশাপাশি আলোচনা করতে চাইছেন। আমাদের বাণিজ্যমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট গোটা বিষয়টি সামলাচ্ছেন। আশা করছি, শিগরিগই দু’পক্ষের মধ্যে আলোচনা অনুষ্ঠিত হতে পারে।’
সম্পূরক শুল্কারোপের কারণে জাপানের গাড়ি নির্মাতাদের প্রতি ঘণ্টায় ১০ লাখ ডলার লোকসান গুণতে হচ্ছে। তাই ওয়াশিংটনের সঙ্গে বাণিজ্যের পাশাপাশি অর্থনৈতিক সুরক্ষা সহযোগিতা বাড়ানোর আলোচনা করছে টোকিও। অন্যদিকে বাণিজ্য ভারসাম্য রক্ষায় ট্রাম্পের সঙ্গে গঠনমূলক ফোনালাপ হয়েছে বলে জানিয়েছেন মেক্সিকান প্রেসিডেন্ট।
মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট ক্লদিয়া শেনবম বলেন, ‘গঠনমূলক ও ভালো আলোচনা হয়েছে। যদিও নির্দিষ্ট কোনো বিষয়ে সম্মতি হয়নি। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো মেক্সিকোর পাশাপাশি বাণিজ্যের বিষয়ে ভালো চুক্তিতে পৌঁছাতে চাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রও।’
জাপানের অর্থনৈতিক পুনর্জাগরণ মন্ত্রী রিওসি আকাসাওয়া বলেন, ‘জাপানের গাড়ি নির্মাতারা প্রতি ঘণ্টায় ১০ লাখ ডলার লোকসান গুণছেন। এমন পরিস্থিতিতে আমরা জাতীয় স্বার্থকে প্রাধান্য দিচ্ছি। আলোচনায় গুরুত্ব পেয়েছে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য বৃদ্ধি, শুল্ক হ্রাস ও অর্থনৈতিক সুরক্ষা নিশ্চিতের প্রসঙ্গ।’
এদিকে শুল্কারোপের কারণে অপূরণীয় ক্ষতির মুখে পড়তে পারে যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষুদ্র ব্যবসা। এমন শঙ্কা প্রকাশ করে হোয়াইট হাউজের কাছে চিঠি পাঠিয়েছে মার্কিন চেম্বার অফ কমার্স। চিঠিতে অবিলম্বে শুল্ক ছাড়ের আবেদন জানানো হয়েছে।