১০ লাখ ডলার পুরস্কারের ঘোষণা দিয়ে তোপের মুখে ইলন মাস্ক

0

মার্কিন নির্বাচনের ঠিক আগ মুহূর্তে সুইং স্টেটের ভোটারদের নিয়ে লটারি আর র‌্যাফেল ড্র শুরু করে ডেমোক্র্যাটদের চক্ষুশূল হয়ে উঠেছেন ধনকুবের ইলন মাস্ক। ভোটার টানতে লটারি করে ১০ লাখ ডলার পুরস্কার দিচ্ছেন রিপাবলিকান দলের অর্থদাতা মাস্ক। তার এই কাজের আইনি বৈধতা নিয়ে সোচ্চার নীল শিবির, যদিও আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ব্যবস্থা নেয়ার সুযোগ নেই।

যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের প্রথম ও দ্বিতীয় সংশোধনীতে নাগরিকদের বাক স্বাধীনতা ও আগ্নেয়াস্ত্র রাখার অধিকারের কথা বলা আছে। এই দুই সংশোধনীর বহাল রাখতে সম্প্রতি একটি অনলাইন পিটিশন শুরু করেন টেসলার প্রধান নির্বাহী ইলন মাস্ক। এই পিটিশনে যারা স্বাক্ষর করছেন, প্রতিদিন তাদের মধ্যে থেকে একজনকে ১০ লাখ মার্কিন ডলার পুরস্কার দিচ্ছেন টেসলার প্রধান নির্বাহী। অ্যারিজোনা, জর্জিয়া, মিশিগান, নেভাডা, নর্থ ক্যারোলাইনা, পেনসিলভেনিয়া ও উইসকনসিনের মতো সুইং স্টেটের নিবন্ধিত ভোটারদের সমর্থন আদায়ে মাস্কের এই কীর্তি নিয়ে শুরু হয়েছে গুঞ্জন। চলছে আইনি বিতর্কও।

ডেমোক্র্যাট ও প্রগতিশীলরা এটিকে ভোট কেনাবেচার সাথে তুলনা করলেও আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইলন মাস্কের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়ার সুযোগ নেই। নতুন ভোটার রেজিস্ট্রেশন করানো কিংবা কোনো যৌক্তিক পিটিশনে ভোটারদের স্বাক্ষর করতে আহ্বান করা বেআইনি নয়।

ক্যাপিটল ইউনিভার্সিটি ল স্কুলের অধ্যাপক ব্র্যাড স্মিথ বলেন, ‘এটা সত্যি ইলন মাস্ক যা করছেন সেটাকে সরাসরি ঠিক বা ভুল বলার সুযোগ নেই। তিনি নতুন ভোটারদের নিবন্ধিত হতে উৎসাহ দিচ্ছেন। এবং এর জন্য মাস্ক আপনাকে অর্থও দিচ্ছেন। তিনি নিবন্ধিত ভোটারদের পিটিশনে অংশ নেয়ার সুযোগ দিচ্ছেন। কিন্তু এর মানে এই নয় মাস্ক আপনাকে অর্থ দিয়ে নিবন্ধন করতে বাধ্য করছেন।’

পেনসিলভেনিয়ার উদাহরণ দিয়ে বিশ্লেষকরা বলছেন, অঙ্গরাজ্যটিতে ৮০ শতাংশ ভোটারই নিবন্ধন করে ফেলেছেন। সেখানে এই পিটিশন ক্যাম্পেইন করে ইলন মাস্ক বা রিপাবলিকানদের কোনো বাড়তি সুবিধা হবে না। আর স্বাক্ষরকারীদের অর্থ দেয়া নিয়ে ডেমোক্র্যাটরা যে আইনভঙ্গের অভিযোগ তুলছেন সেটিও ভিত্তিহীন।

অধ্যাপক ব্র্যাড স্মিথ বলেন, ‘ডেমোক্র্যাটদের অভিযোগ শুনে অবাক হয়েছি। তাদের উচিত সমর্থকদের আরও উৎসাহ দেয়া। তাদের বলা উচিত, আপনারা যান, ট্রাম্প ও মাস্কের কাছ থেকে যত বেশি সম্ভব অর্থ নিয়ে আসুন। এটা তো সত্যিই যে কিছু ভোটার এই অর্থের লোভে নিবন্ধন করতেও পারেন। কিন্তু নিবন্ধনের জন্য অর্থ পুরস্কার দেয়া কোনোভাবেই বেআইনি নয়।’

তবে, শুধু ভোটারদের নিবন্ধন করাতেই ইলন মাস্ক এমন উদ্যোগ নিয়েছেন এমন ধারণা সমর্থন করছেন না বিশ্লেষকরা। তারা বলছেন, এতে করে মাস্ক একটি তালিকা বানাতে পারেন, যেখান থেকে বোঝা যাবে কতজন ভোটার তার পিটিশনের পক্ষে আছেন। এদিকে নির্বাচনে জিতলে ইলন মাস্ককে ফেডারেল এফিশিয়েন্সি কমিশনের প্রধান বানাবেন বলেও প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তাই মার্কিন রাজনীতিতে ইলন মাস্কের নাম আরও ব্যাপকভাবে আলোচিত হবে- এমনটাই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

সেজু