ইসরাইল-যুক্তরাষ্ট্রের হামলায় ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় কতটা ক্ষতি হয়েছে?

ফোর্দো
ফোর্দো | ছবি: রয়টার্স
0

ইসরাইল-যুক্তরাষ্ট্রের হামলায় ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর কতটা ক্ষতি হয়েছে, তা নিয়ে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ। তুলে ধরা হচ্ছে ক্ষতি ও সংস্কার কাজের দৃশ্য। খোদ ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইসমাইল বাঘাঈও ক্ষতির কথা স্বীকার করেছেন বলে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে উঠে এসেছে।

সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে ইরানের আলোচনা চলমান ছিল। কিন্তু এরইমাঝে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি অগ্রযাত্রা নিজেদের অস্তিত্বের জন্য হুমকি মনে করে ১৩ জুন রাতে আচমকা আক্রমণ করে বসে ইসরাইল। হামলার পেছনে মার্কিন ইন্ধন রয়েছে অভিযোগ তুলে, ওই দিনই ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে ইসরাইলে পাল্টা হামলা করে ইরান।

প্রায় ২০০০ কিলোমিটার দূর থেকে ছোড়া ইরানের ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয় দখলকৃত ইসরাইলি ভূখণ্ডের বিমানবন্দর, পারমাণবিক গবেষণাকেন্দ্রসহ গুরুত্বপূর্ণ সব স্থাপনা।

তবে এ হামলায় যুক্তরাষ্ট্র জড়াবে কি-না, দুই সপ্তাহ সময় নিয়ে মাত্র দু-দিন পরই ২১ জুন লড়াই দৃশ্যপটে সরাসরি যুক্ত হয় যুক্তরাষ্ট্র। বি-২ বোমারু বিমান থেকে বাংকার-বাস্টার বোমা ফেলে নাতাঞ্জ, ইস্পাহান ও ফোর্দো পারমাণবিক স্থাপনা সম্পূর্ণ ধ্বংসের দাবি করেন ট্রাম্প। এর জবাবেও কাতার ও ইরাকে মার্কিন ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে তেহরান, পরদিন সকালেই ট্রাম্পের পক্ষ থেকে আসে যুদ্ধবিরতির ঘোষণা।

আরো পড়ুন:

এখন বিশ্ববাসীর কৌতূহল আসলেই কতটুকু ক্ষতি সম্মুখীন হলো ইরানের সুরক্ষিত তিনটি পরমাণু কেন্দ্র। এনিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ। স্যাটেলাইল চিত্র নিয়ে বিশ্লেষণ শুরু করেছে বিবিসি। প্রমাণ হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে ক্ষতির চিত্র ও বর্তমান সংস্কার কাজের দৃশ্য।

যুক্তরাষ্ট্রের হামলার পর নাতাঞ্জে ২২ জুন তোলা ছবিতে বেশকিছু ক্ষতচিহ্ন ও একাধিক পোড়া দাগ তুলে ধরা হয়। আর ২৪ জুন তোলা নতুন ছবিতে দেখা যায়, দু'দিন আগে দেখা গর্তগুলো ঢেকে দেয়া হয়েছে। যা ইঙ্গিত দেয়, ক্ষয়ক্ষতির পর শুরু হয়েছে সংস্কার কাজ। ভবিষ্যৎ হামলার শঙ্কায় প্রতিরোধ ব্যবস্থা আরো জোরালো করা হতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

ইউরেনিয়াম রূপান্তর কেন্দ্র ইস্পাহানের তোলা স্যাটেলাইল চিত্রে দেখা যাচ্ছে, মাটির নিচে থাকা স্থাপনাটির উপরে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে ও পোড়া দাগ রয়েছে। এছাড়াও উত্তর প্রান্তে একটি টানেলের প্রবেশপথে ক্ষতির চিত্র স্পষ্ট। গোয়েন্দা বিশ্লেষণ তথ্য বলছে- কাঠামোটির মাঝারি ক্ষতি হয়েছে।

২ থেকে ৩শ' ফুটের বেশি মাটির নিচে হওয়ায় সুরক্ষার কারণে আন্তর্জাতিক মহলে বিশেষভাবে আলোচিত ফোর্দো পারমাণবিক কেন্দ্র। তবে স্যাটেলাইটের ছবিতে দেখা যায়, হামলায় স্থাপনাটির উত্তরে থাকা একটি ইনস্টলেশন সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে। তবে মূল স্থাপনার কিছুই হয়নি। বিশ্লেষকদের মতে, মূলত, প্রবেশপথ ও সংযোগ সড়ক ধ্বংসের মাধ্যমে মেরামত বা পুনর্গঠন প্রচেষ্টাকে দীর্ঘস্থায়ীভাবে ব্যাহত করার কৌশল নিয়ে হামলা চালিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র-ইসরাইল।

এদিকে, ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইসমাইল বাঘাই-এর বরাত দিয়ে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোর খবর বলছে- মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলো। তবে ইসমাইল বাঘাই এর বেশিকিছু আর কিছুই জানাননি বলে জানা গেছে।

সেজু