ইসরাইল অধিকৃত গোলান মালভূমির মাজদাল শামস শহর। সিরিয়ার সরকারি বাহিনী ও দ্রুজ গোষ্ঠীর মধ্যে যখন উত্তেজনা চরমে তখন ইসরাইলি সেনাদের সম্পৃক্ত হওয়ার খবরে উচ্ছ্বসিত গোষ্ঠীটির তরুণ সমর্থকরা। সীমান্তে ইসরাইলি সেনাদের উপস্থিতি দেখে কেউ হাত নেড়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করছেন, কেউ আবার ওড়াচ্ছেন দ্রুজের পতাকা।
মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) টানা দ্বিতীয় দিনের মতো সিরিয়ার দক্ষিণাঞ্চলে হামলা চালিয়েছে ইসরাইল। আইডিএফ প্রকাশিত একটি ভিডিওতে দাবি করা হচ্ছে, সিরীয় সরকারের যোদ্ধাদের ট্যাংক ও সামরিক যান লক্ষ্য করে এসব হামলা করা হচ্ছে যেন বেসামরিক এই অঞ্চল থেকে সরকারি বাহিনীকে হটানো যায়। এর আগে, সিরীয় বাহিনীর ওপর হামলা চালানো থেকে বিরত থাকতে নেতানিয়াহুকে সতর্ক করে ট্রাম্প প্রশাসন। যদিও ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বলছেন, সংখ্যালঘু দ্রুজ গোষ্ঠীর নিরাপত্তার স্বার্থে এ হামলার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু বলেন, ‘হ্যাঁ! আমরা সিরিয়ায়ও অভিযান শুরু করেছি। দেশটির দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় এলাকা ইসরাইল সীমান্তবর্তী এবং তা বেসামরিক একটি অঞ্চল। আমরা এমন পরিস্থিতি মেনে নেবো না, যেখানে সিরিয়া আরেকটি লেবাননে পরিণত হবে। সংখ্যালঘু দ্রুজ গোষ্ঠীর সমর্থক ও কর্মীদের রক্ষা করা আমাদের কর্তব্য।’
গত কয়েকদিন ধরে দ্রুজ অধ্যুষিত সুয়েদা শহরে বেদুইন যোদ্ধাদের সঙ্গে সংঘাত চলছে দ্রুজ বাহিনীর। দু'পক্ষের এই সংঘাত ঠেকাতে মঙ্গলবার সেখানে প্রবেশ করে সিরীয় সরকারের সশস্ত্র যোদ্ধারা। মোবাইলে ভিডিও ধারণ করে এক প্রকার উচ্ছ্বাসই প্রকাশ করতে দেখা যায় সরকারি বাহিনীকে।
সিরীয় সেনাদের সমরাস্ত্রের বহর দেখে নড়েচড়ে বসে ইসরাইল। দ্রুজ গোষ্ঠীটির পাশে দাঁড়াতে সিরীয় যোদ্ধাদের বহর লক্ষ্য করে সোমবার থেকে হামলা শুরু করে নেতানিয়াহু যোদ্ধারা।
ইসরাইলি সেনাবাহিনীর এই অভিযান আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন বলে দাবি করছে সিরীয় সরকার। প্রতিক্রিয়ায় দ্রুজ নেতারা বলছেন, অস্ত্র বিরতির ঘোষণা দিয়ে সিরীয় সরকারের যোদ্ধারা নিজেরাই তা অমান্য করছেন, বেসামরিক অঞ্চলে মোতায়েন করেছেন যোদ্ধা ও সাজোঁয়া যান। আর, ইসরাইলের প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রীর দাবি, দ্রুজ গোষ্ঠীর ওপর বর্বর হামলা চালানো হবে আর আইডিএফ নিষ্ক্রিয় থাকবে এমনটা প্রত্যাশা করাও ভুল।
সিরীয় গণমাধ্যমের এক প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, দ্রুজ যোদ্ধাদের সঙ্গে সিরীয় সরকারের মদদপুষ্ট বাহিনীর বেশ কয়েকজন সদস্যের প্রাণহানি হয়েছে। তবে সবচেয়ে বেশি হতাহত হয়েছেন দ্রুজ গোষ্ঠীর যোদ্ধা ও সমর্থকরা। দ্রুজ-বেদুইন দুই পক্ষের সংঘাতে অস্ত্র বিরতির ঘোষণা এলেও ইসরাইলি সেনারা এই দ্বন্দ্বে জড়িয়ে যাওয়ায় আদৌ সুয়েদায় শান্তি প্রতিষ্ঠার সম্ভাবনা কতখানি, তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।