ব্রিটিশ কর্মকর্তার ভুলে ফাঁস ১৯ হাজার আফগানদের ব্যক্তিগত তথ্য; ৯ মাস পর পুনর্বাসন কর্মসূচি

ব্রিটিশ কর্মকর্তার ভুলে ফাঁস ১৯ হাজার আফগানদের ব্যক্তিগত তথ্য, ৯ মাস পর পুনর্বাসন কর্মসূচি
ব্রিটিশ কর্মকর্তার ভুলে ফাঁস ১৯ হাজার আফগানদের ব্যক্তিগত তথ্য, ৯ মাস পর পুনর্বাসন কর্মসূচি | ছবি: সংগৃহীত
0

২০২৩ সালে যুক্তরাজ্যের এক সরকারি কর্মকর্তার ভুলে ফাঁস হয় ১৯ হাজার আফগান আশ্রয়প্রত্যাশীর ব্যক্তিগত তথ্য। এর ৯ মাস পর তালেবানের প্রতিশোধের ঝুঁকিতে থাকা এসব ব্যক্তির জন্য শুরু হয় কয়েক কোটি ডলারের গোপন পুনর্বাসন কর্মসূচি ‘আফগান রেসপন্স রুট’। মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) আদালতের নথির মাধ্যমে উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর এ ঘটনা। সরকারের পক্ষ থেকে তথ্য ফাঁসের বিষয়ে ক্ষমা চাওয়া হলেও অভিযুক্তের বিচার নিশ্চিত করা নিয়ে রয়েছে ধোঁয়াশা।

২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে আফগানিস্তানের ক্ষমতা পুনরুদ্ধার করে তালেবান। সে সময় যেসব আফগান যুক্তরাজ্যে আশ্রয় আবেদন করেছিলেন, তাদের ভেতর থেকে ফাঁস হয় ১৯ হাজার নাগরিকের ব্যক্তিগত তথ্য। তালেবানের প্রতিশোধ এড়াতে এর প্রায় ৯ মাস পর চালু হয় গোপন পুনর্বাসন প্রকল্প। যার আওতায় এরই মধ্যে যুক্তরাজ্যে এসে পৌঁছেছেন সাড়ে ৪ হাজার আফগান। মঙ্গলবার আদালতের নথিতে এ তথ্য উঠে আসার পর থেকেই যুক্তরাজ্যজুড়ে শুরু হয়েছে হইচই।

বিবিসির প্রতিবেদন বলছে, যুক্তরাজ্যের এক সরকারি কর্মকর্তা ভুলবশত এ তথ্য ফাঁস করেন। আশ্রয়প্রার্থীদের সুরক্ষা নিশ্চিতে আফগানদের স্থানান্তরের বিষয়টি গোপন রাখে ব্রিটিশ সরকার। জনসম্মুখে বিষয়টি প্রকাশ ঠেকাতে জারি করা হয় বিশেষ আইন সুপার ইনজাংকশন। মঙ্গলবার হাইকোর্টের এক বিচারক এ নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার আদেশ দিলে পুরো ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসে।

ব্রিটিশ প্রতিরক্ষামন্ত্রীর দাবি, আফগান রেসপন্স রুট পুনর্বাসন কর্মসূচিতে এ পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে প্রায় ৫৪ কোটি ডলার। যদিও বর্তমানে কর্মসূচিটি বন্ধের পথে। তথ্য ফাঁসের কারণে তালেবানের প্রতিশোধের ঝুঁকিতে রয়েছেন ৬০০ আফগান সেনা ও তাদের পরিবারের ১ হাজার ৮০০ সদস্য। এ ঘটনায় সংশ্লিষ্টদের পরিবারের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী।

যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষামন্ত্রী জন হিলি বলেন, ‘এ ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধ করা প্রয়োজন। তিন বছর আগে, তৎকালীন কনজারভেটিভ সরকারের আমলে তথ্য ফাঁস হয়েছে। যারা নিরাপত্তা ঝুঁকির মুখে পড়েছে, তাদের সবার কাছে ব্রিটিশ সরকারের পক্ষ থেকে ক্ষমা চাইছি।’

তথ্য ফাঁসের জন্য দায়ী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে কি না তা নিশ্চিত করেনি প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর। 

এরই মধ্যে তথ্য ফাঁসের ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিরা মামলা করেছেন যুক্তরাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে। মামলা পরিচালনাকারী আইনজীবীর দাবি, এমন ভুল ক্ষমার অযোগ্য।

বাদী পক্ষের আইনজীবী সিন হাম্বার বলেন, ‘এটি তথ্য ফাঁসের গুরুতর ঘটনা। কারণ ফাঁস করা তথ্যগুলো সংবেদনশীল ছিল। আমার মক্কেলের জীবন এখন শঙ্কার মুখে। ১৮ হাজারের বেশি মানুষ নিরাপত্তা ঝুঁকিতে। বিষয়টির গুরুত্ব বোঝাতে সম্ভবত এর চেয়ে বেশি ব্যাখ্যার প্রয়োজন নেই।

ব্রিটিশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আশ্রয় আবেদনকারী আফগানদের তালিকা ভুলবশত সরকারি সিস্টেমের বাইরে ইমেইল করা হয়। যদিও বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ মনে না হওয়ায় সেসময় তদন্ত করেনি মেট্রোপলিটন পুলিশ।

এসএইচ