গত বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) দুপুরে গ্রামের একদম সাধারণ দিনের মতোই সময় কাটাচ্ছিলেন গোবিন্দের পরিবার। শিশুটির দাদি মতিসারি দেবী জানান, ওর মা তখন বাড়ির পেছনে চুলার কাঠ গোছাচ্ছিল। পাশেই খেলছিল গোবিন্দ। হঠাৎ করেই কোবরা সাপটা (স্থানীয় ভাষায় গেহুঁওন সাপ) বেরিয়ে আসে। গোবিন্দ সেটা ধরে মুখে কামড় বসিয়ে দেয়। কিছুক্ষণের মধ্যেই সাপটা নিস্তেজ হয়ে পড়ে।
সাপকে কামড় দেয়ার পরই গোবিন্দ অচেতন হয়ে পড়ে। সঙ্গে সঙ্গে তাকে মঞ্ঝোলিয়া প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়, সেখান থেকে পাঠানো হয় বেতিয়া সরকারি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। শিশুটির চিকিৎসক ডা. কুমার সৌরভ জানান, ভর্তির সময় শিশুটির মুখের চারপাশ ফুলে ছিল। পরিবারের সদস্যরা জানান, গোবিন্দ সাপের মুখে কামড় দিয়েছে এবং সম্ভবত দেহের কিছু অংশ গিলেও ফেলেছে।
তিনি আরও বলেন, ‘একই সময়ে আমার কাছে দু’জন শিশুর চিকিৎসা চলছিল—একজন সাপের কামড়ে আহত, আরেকজন সাপকেই কামড়ে দিয়েছে! তবে আশার কথা, দু’জনই এখন সুস্থ।’

চিকিৎসক জানান, কোবরা সাপের বিষ মানুষের রক্তে প্রবেশ করলে নিউরোটক্সিসিটি তৈরি করে, যা স্নায়ুতন্ত্রে আঘাত হানে এবং মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। কিন্তু সাপকে কামড়ে দিলে তার বিষ মুখ দিয়ে হজমনালীতে প্রবেশ করে এবং মানবদেহের পচনতন্ত্র তা নিষ্ক্রিয় করে দেয়। তবে কারও মুখগহ্বরে আলসার বা রক্তক্ষরণ থাকলে বিষ শরীরে মিশে গুরুতর জটিলতা তৈরি করতে পারে।
স্থানীয় সাংবাদিক নেয়াজ জানান, এমন ঘটনা এই এলাকায় আগে কখনও শোনা যায়নি। শ্রাবণ মাসে সাপ বের হওয়া সাধারণ ঘটনা, কিন্তু সাপের মৃত্যু শিশুর কামড়ে—এটা একেবারে নতুন অভিজ্ঞতা।
ঘটনার পর শনিবার (২৬ জুলাই) সন্ধ্যায় গোবিন্দ বাড়ি ফিরে আসে। পরিবার ও গ্রামবাসীদের মধ্যে এখন শুধু বিস্ময় আর আলোচনার ঝড়।—বিবিসি