মাইক্রো প্লাস্টিক থেকে শুরু করে প্লাস্টিকে আচ্ছাদিত সৈকত-দীর্ঘদিন ধরেই বৈশ্বিক সংকটে পরিণত হয়েছে প্লাস্টিক দূষণ। প্রশান্ত মহাসাগরের তলদেশ থেকে হিমালয় পর্বতের চূড়া, পৃথিবীর প্রতিটি প্রান্তেই মিলছে প্লাস্টিকের অস্তিত্ব।
এমন পরিস্থিতিতে ধরিত্রী রক্ষায় বৈশ্বিক প্লাস্টিক চুক্তি নিয়ে ষষ্ঠ দফার আলোচনায় জাতিসংঘের উদ্যোগে ১০ দিনের কনফারেন্সে ১৭০টিরও বেশি দেশ। যুক্তরাজ্য, কানাডা, ফ্রান্স ও জার্মানির মতো দেশগুলো প্লাস্টিকের উৎপাদন কমানোর পাশাপাশি বর্জ্য ব্যবস্থাপনার দিকে জোর দিচ্ছে। তবে সৌদি আরব, কাতার, ইরান ও রাশিয়ার মতো জ্বালানি তেল উৎপাদক দেশগুলো কেবল প্লাস্টিকের বর্জ্য কমানোর পক্ষে।
আরও পড়ুন:
ব্রিটিশ গণমাধ্যম গার্ডিয়ানের প্রতিবেদন বলছে, ৯৮ শতাংশের বেশি প্লাস্টিক তৈরিতে ব্যবহার হয় তেল, গ্যাস ও কয়লার মতো জীবাশ্ম জ্বালানি। তাই প্লাস্টিক উৎপাদন কমলে দেশগুলোর অর্থনীতিতে নেমে আসবে বিপর্যয়। বিশ্লেষকরা বলছেন, শেষ মুহূর্তে ঐকমত্য সম্ভব হলেও প্লাস্টিক দূষণরোধে সম্ভাব্য চুক্তিটি তেমন কঠোর হবে না।
জাতিসংঘের পরিবেশ কর্মসূচির নির্বাহী পরিচালক ইনগার অ্যান্ডারসন বলেন, ‘১৯৩টি রাষ্ট্র জাতিসংঘের সদস্য। প্রতিটি দেশের প্রতিনিধির নিজস্ব দৃষ্টিকোণ রয়েছে। বিলম্ব করলেই কী ভালো চুক্তিতে পৌঁছানো সম্ভব? আমরা এমন চুক্তি চাই, যেখানে সামুদ্রিক পরিবেশের পাশাপাশি প্লাস্টিক দূষণের খুঁটিনাটি অন্তর্ভুক্ত থাকবে। কারণ এর প্রভাব বিপর্যয় ডেকে আনছে।’
প্লাস্টিক নিয়ে বিশ্ব যখন দুইভাগে বিভক্ত, তখন পরিবেশের পরিবর্তে বাণিজ্যের পক্ষে অবস্থান যুক্তরাষ্ট্রের। রয়টার্সকে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর জানিয়েছে, ওয়াশিংটন এমন চুক্তিকে সমর্থন করবে, যেখানে প্লাস্টিক উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে না। কারণ এতে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে মার্কিন প্রতিষ্ঠান ও অর্থনীতি।
প্লাস্টিক দূষণ রোধে চুক্তিতে পৌঁছাতে আলোচনা শুরু হয় ২০২২ সালে। সবশেষ গেলো বছর দক্ষিণ কোরিয়ার কনফারেন্স হলেও মতবিরোধের কারণে ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারেনি দেশগুলো। প্রথমবারের মতো বিশ্ববাসী প্লাস্টিক নিয়ে চুক্তিতে সম্মতি অর্জন সম্ভব কি-না, তা জানতে অপেক্ষা করতে হবে আগামী ১৪ আগস্ট পর্যন্ত।





