২০২৩ এর অক্টোবরে হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে গাজায় প্রায় ৬২ হাজারেরও বেশি মানুষকে হত্যার করেছে ইসরাইলি সেনারা। কোনো কোনো মানবাধিকার সংস্থার হিসাবে সংখ্যাটি ১ লাখ ছাড়িয়েছে। আইডিএফের তাণ্ডবে সহায় সম্বল হারিয়েছেন ২০ লাখেরও বেশি মানুষ।
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে, ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে দিনের পর দিন আটকে রাখা হয়েছে ত্রাণ। আবার নামেমাত্র ত্রাণ সচল করে সেখানেও নির্বিচারে মানুষ হত্যা করেছে ইসরাইল।
কখনও বুলেট, কখনও ক্ষুধা- গাজাবাসীর জন্যে অস্ত্রের অভাব হয়নি নেতানিয়াহু বাহিনীর। যে কোনো সংকটে সবসময় ইসরাইলের পাশে ছিল যুক্তরাষ্ট্র। এমনকি নিজ দেশে সরকার বিরোধীদের দমন ও জোট সরকারের অংশীজনদের চাপে রেখে নিজের খুশিতেই হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছেন ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু প্রায় ২২ মাস ধরে অভিযানের পর এখনও পর্যন্ত হামাসের বিরুদ্ধে ইসরাইলকে বিজয়ী ঘোষণা করতে পারেননি নেতানিয়াহু।
আরও পড়ুন:
বিশ্লেষকরা বলছেন, চলমান এই অভিযানে গাজায় হামাসকে কতটুকু নিষ্ক্রিয় করতে পেরেছেন- এ নিয়েও কোনো ব্যাখ্যা দিতে পারেননি নেতানিয়াহু। তাই যুদ্ধের ২ বছর পূর্ণ হতে যাওয়ার আগ মুহূর্তে সম্পূর্ণ গাজা দখলের পরিকল্পনা হাজির করেছেন বিশ্ববাসীর সামনে।
আনতর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক মারওয়ান বিশারা বলেন, ‘নেতানিয়াহু হেরে গেছেন। একেবারেই হেরে গেছেন। যদিও তিনি যুদ্ধে জিততে অভ্যস্ত । কিন্তু যখন গাজা যুদ্ধের প্রসঙ্গ আসে, তিনি ৬০ থেকে ১ লাখ মানুষকে হত্যা করেছেন। ২০ লাখ মানুষকে বাস্তুচ্যুত করেছেন। উপত্যকাটির ৯০ শতাংশ অঞ্চল ধ্বংস করেছেন । অথচ নিজেদেরকে বিজয়ী ঘোষণা করতে পারছেন না।’
বিশ্লেষকরা আরও মনে করেন, জিম্মিদের ফিরিয়ে আনায় গুরুত্ব দেয়ার কথা মুখে বললেও, খোদ ইসরাইলিরা বিশ্বাস করেন নেতানিয়াহুর উদ্দেশ্য ক্ষমতায় টিকে থাকা। গাজা দখলের পরিকল্পনা নেতানিয়াহুর ব্যর্থতার আরেকটি উদাহরণ, বলছেন বিশ্লেষকরা।
কয়েক মাস আগে থেকেই গাজা উপত্যকার বিশাল অংশের ওপর সামরিক নিয়ন্ত্রণ রাখার দাবি করে আসছে ইসরায়েল। জাতিসংঘের অনুমান, গাজার ৮৭ শতাংশ এলাকাই স্বীকৃত সামরিক নিয়ন্ত্রণে অথবা উচ্ছেদের নোটিশের আওতায় আছে। কাজেই শাসকগোষ্ঠী হিসেবে গাজায় না থাকলেও নিয়ন্ত্রণের প্রশ্নে আর নতুন করে কী কী দখলের প্রয়োজন আছে নেতানিয়াহুর এমন প্রশ্নও তুলছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম।