তেহরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপে জোর দিচ্ছে ইউরোপ, পাল্টা হুঁশিয়ারি ইরানের

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি | ছবি : সংগৃহীত
0

সমুদ্র উপকূল থেকে যুক্তরাষ্ট্রের যেকোনো শহরে আঘাত হানতে পারে এমন ক্ষেপণাস্ত্র আছে ইরানের। শুধু তাই নয়, ইউরোপের দেশগুলোও তেহরানের এ ক্ষেপণাস্ত্রের আওতার বাইরে নয় বলে মন্তব্য করেছেন তেহরানের জাতীয় নিরাপত্তা ও পররাষ্ট্রনীতি কমিশনের এক আইনপ্রণেতা। যদিও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের দাবি, তেহরানের ওপর নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপে জোর দিচ্ছে ইউরোপের কয়েকটি দেশ। আর এ কারণেই এমন হুঁশিয়ারি দিচ্ছে ইরান।

মাত্র ৪০০টি মিসাইল লঞ্চার থাকার পরেও ইরানের কাছে এমন দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র আছে যা দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ব উপকূলে হামলা চালাতে পারে তেহরান। গেল ৪ জুলাই এমন বিস্ফোরক এক মন্তব্য করেন ইসরাইলি প্রতিরক্ষা বিভাগের এক কর্মকর্তা।

গেল জুনে ইরানের পরমাণু স্থাপনায় হামলার জবাবে তেল আবিবসহ ইসরাইলে বিভিন্ন অংশে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালায় ইরান। ক্ষয়ক্ষতির তথ্য গণমাধ্যমে প্রকাশ না করলেও তেহরানের কৌশলে নড়েচড়ে বসে ইসরাইলি সেনাবাহিনী। এর জেরেই ইরানের সক্ষমতা নিয়ে মুখ খোলে আইডিএফ।

এবার ইরানের পার্লামেন্টে জাতীয় নিরাপত্তা ও পররাষ্ট্রনীতি কমিশনের এক আইনপ্রণেতাও দাবি করেছেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের বিভিন্ন প্রান্তে নিজ ভূখণ্ড থেকেই ক্ষেপণাস্ত্র হামলা করার সক্ষমতা আছে তেহরানের।

গেল রোববার ইরানের ওপর নতুন করে জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিষয়ে মুখ খোলে যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও জার্মানি। এর প্রতিক্রিয়ায় দেশটির ফরেন পলিসি কমিশনের আইনপ্রণেতা আমির হাতায় মোকাদ্দাম মন্তব্য করেন, নিজস্ব যুদ্ধাস্ত্র দিয়ে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে গেল ২০ বছর ধরে কাজ করছে ইরানের ইসলামী বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর সদস্যরা।

আরও পড়ুন:

তেহরানের দাবি, তাদের জাহাজগুলো যুক্তরাষ্ট্রের ভূখণ্ডের ২ হাজার কিলোমিটারের মধ্যে স্থানান্তর করা গেলে ওয়াশিংটন নিউইয়র্কের মতো শহরে হামলা চালানো সম্ভব। বর্তমানে দেশটি ক্রুজ ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের মজুত বাড়ানোর চেষ্টা করছে। এরইমধ্যে ইরানের দূরপাল্লার হোভেইজ ক্ষেপণাস্ত্রটি ১ হাজার ৩৫০ কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সম্ভব।

এছাড়াও ইরানি নৌবাহিনী আবু মাহাদি ক্রুজ মিসাইলের পাল্লা ১ কিলোমিটার। তবে অন্তর্বর্তী কোনো ঘাঁটি বা স্ট্যান্ড অফ ক্ষমতা না থাকলে এই ক্ষেপণাস্ত্র ইরানের সমুদ্র উপকূল থেকে ২ হাজার কিলোমিটার দূরের মার্কিন পূর্ব উপকূলে পৌঁছাতে পারবে না- বলেছে জেরুজালেম পোস্ট।

তবে আদৌ ইরান তাদের যুদ্ধ জাহাজ আটলান্টিক মহাসাগরে পাঠাতে পারবে কী না সে প্রশ্ন থেকেই যায়। জেরুজালেম পোস্টের দাবি, ২০২১ সালে মারকান ও সাহান্দ নামে দুটি জাহাজ আটলান্টিকে পাঠায় তেহরান। যদিও গভীর সমুদ্রে অভিযানের জন্য এই জাহাজ যথেষ্ট পুরনো। কারণ, পরবর্তীতে ২০২৪ সালে এই সাহান্দ জাহাজটি বন্দর আব্বাসে পৌঁছানোর পরপর একাই ডুবে যায়।

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের দাবি, ইরানের ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রের পাল্লা এবং গভীর সমুদ্রে সীমিত ঘাঁটি ইঙ্গিত করে ২ হাজার কিলোমিটার দূরে অবস্থান নিয়ে মার্কিন ভূখণ্ডে আঘাত হানাটা সহজ হবে না। মূলত জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা নিয়ে আলোচনা শুরু হওয়ায় প্রতিরোধমূলক বার্তা দিতেই এমন মন্তব্য করেছেন দেশটির ফরেন পলিসি কমিশনের আইনপ্রণেতা।

ইএ