টিকে থাকা ইতিহাস বাঁচাতে মরিয়া গাজাবাসী; নির্মাণসামগ্রীর দাম বড় বাধা

গাজায় ইসরাইলের হামলায় ধ্বংসপ্রাপ্ত একটি স্থানের ছবি
গাজায় ইসরাইলের হামলায় ধ্বংসপ্রাপ্ত একটি স্থানের ছবি | ছবি: সংগৃহীত
0

যুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্ত সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যগুলোকে সংরক্ষণের আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছে গাজাবাসী। টিকে থাকা মসজিদসহ ঐতিহাসিক স্থাপনার অবশিষ্টাংশ বাঁচিয়ে তুলতে চাইছে তারা। ফিলিস্তিনিদের আশা একদিন এই গাজা উপত্যকা আগের রূপে ফিরে আসবে। তবে নির্মাণ সামগ্রীর আকাশচুম্বী দামের কারণে পুননির্মাণও সম্ভব হচ্ছে না এসব স্থাপনা।

ইসরাইলি বোমা হামলায় গাজা উপত্যকা রূপ নিয়েছে ধ্বংসস্তূপে। প্রাণহানি ছাড়িয়েছে ৭০ হাজার। ঘরবাড়ি হারিয়ে বাস্তুচ্যুত কয়েক লাখ মানুষ। কাগজে-কলমে যুদ্ধ বন্ধ হলেও, থেমে নেই ইসরাইলিদের আগ্রাসন। চরম খাদ্য সংকটে ভুগছে ফিলিস্তিনিরা। ইসরাইলি বোমার আঘাতে মাটির সঙ্গে মিশে গেছে গাজার বহু শতাব্দীর ইতিহাস।

হামাস নির্মূলের নামে ইসরাইল যে ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে তা থেকে রক্ষা পায়নি গাজার মসজিদসহ ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক স্থাপনা। লুট হয়েছে প্রাগৈতিহাসিক যুগ থেকে শুরু করে ওসমানীয় আমল পর্যন্ত বিস্তৃত কয়েক হাজার বিরল প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন।

আরও পড়ুন:

গাজার ইতিহাসের সাক্ষ্য বহন করে আছে ঐতিহাসিক ওমারি মসজিদ। ফিলিস্তিনের তৃতীয় বৃহত্তম এই মসজিদটি প্রায় ১৪শ বছরের পুরনো। মসজিদটিতে ৩ হাজারের বেশি মুসল্লি একসঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারতেন। প্রাচীন স্থাপত্য, সুউচ্চ মিনার আর প্রার্থনার স্থানগুলো এখন মাটি চাপা পরেছে। বোমার আঘাতে গাজার আকাশচুম্বী মিনারগুলো হয়ে গেছে নিশ্চিহ্ন। এখন ধ্বংসস্তূপ থেকেই ভেসে আসে আজানের ধ্বনি।

ক্ষতিগ্রস্ত ওমারি মসজিদের টিকে থাকা শেষ চিহ্নটুকু এখন সংরক্ষণ করে রাখছে গাজাবাসী। ধ্বংসের মুখে টিকে থাকা অবশিষ্টাংশগুলো সংরক্ষণ করছেন তারা। ভবিষ্যতে স্থাপনাগুলোকে আবার আগের রূপে ফিরিয়ে আনার আশা তাদের।

এই মসজিদের নীচে হামাসের সুড়ঙ্গ ছিল, এমন অভিযোগ তুলে সেটিকে গুড়িয়ে দেয় ইসরাইলিরা। তবে স্থানীয়রা বলছেন, এই মসজিদে এক ওয়াক্ত নামায আদায় করতে বহু বিদেশি পর্যটক আসতো। ঐতিহাসিক এই স্থাপনাটি এখন ইট-পাথরের ধ্বংসস্তূপ।

ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে ১৩ শতকের একটি স্থাপনাও। সেখানে থাকা একটি জাদুঘরের সব সম্পদ নষ্ট হয়ে গেছে। ঐতিহাসিক স্থান ও নিদর্শনগুলো রক্ষায় প্রায় সাড়ে ১৩ কোটি ডলার ব্যয়ে পুনরুদ্ধারের পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ এবং ইউনেস্কো।

গাজার বাসিন্দারা ভুগছে তীব্র খাদ্য সংকটে। নিত্য পণ্য কেনার সামর্থ্য নেই তাদের। যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজায় নির্মাণ সামগ্রীর দাম আকাশছোঁয়া। নিজের ঘরবাড়িও ঠিক করতে পারছে না অনেকে। এরমধ্যে এসব ঐতিহাসিক স্থাপনা পুননির্মাণ তাদের কাছে বিলাসিতার শামিল।

ইএ