লন্ডন থেকে ওয়াশিংটন। ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে যুক্তরাষ্ট্রের শান্তি পরিকল্পনা নিয়ে একদিকে ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে আলোচনায় ব্যস্ত দেশটির প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি। অন্যদিকে কিয়েভের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের দফায় দফায় বৈঠক। সবশেষ শনিবার ফ্লোরিডায় তিনদিনের আলোচনা শেষ হওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে জানানো হয়, যুদ্ধ বন্ধের খুব কাছাকাছি।
রাশিয়া-ইউক্রেন সংকট নিরসনে আমেরিকার শান্তি পরিকল্পনা ইউক্রেনের আলোচক দল পছন্দ করলেও, প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি তা পড়েও দেখেননি বলে মন্তব্য করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। শান্তি আলোচনায় জেলেনস্কির অবস্থান নিয়ে ট্রাম্প হতাশ বলেও জানান তিনি। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি এখনও প্রস্তুত নন বলে কটাক্ষ করেন ট্রাম্প।
গেল শনিবার, ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকভ ও জামাতা জ্যারেড কুশনার এবং ইউক্রেনের সিনিয়র আলোচক রুস্তেম উমেরভের মধ্যে তিন দিনের বৈঠক কোনও রকম আশানুরূপ ফলাফল ছাড়াই শেষ হয়। এরপর এমন মন্তব্য করেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘আমি কিছুটা হতাশ, প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি প্রস্তাবটি এখনও পড়েননি। তার প্রতিনিধিরা এটি পছন্দ করেলেও, তিনি করেননি। তবে, আমার মনে হয় রাশিয়া এটি পছন্দ করেছে।’
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে আলোচনা গঠনমূলক হলেও তা সহজ হয়নি বলে জানিয়েছেন ইউক্রেন প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি।
আরও পড়ুন:
ইউক্রেন প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, ‘আমরা আলোচনা চালিয়ে যাবো। কিছু বিষয় কেবল ব্যক্তিগতভাবে আলোচনা করেই সমাধান সম্ভব। আমি ইউরোপীয় নেতাদের সাথে কথা বলবো। লন্ডনের পাশাপাশি ব্রাসেলসেও আমাদের বৈঠকের পরিকল্পনা আছে।’
শান্তি আলোচনার প্রস্তাব গ্রহণের জন্য কিয়েভের প্রতি মার্কিন চলমান চাপের প্রতিক্রিয়া জানাতে সোমবার ইউরোপীয় নেতাদের সাথে বসবেন প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি। যুক্তরাজ্য প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টার্মার ছাড়াও বৈঠকে থাকবেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রন, এবং জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রেড্রিক মার্য।
মার্কিন মধ্যস্থতা এবং পর্যায়ক্রমিক উচ্চ-স্তরের যোগাযোগ সত্ত্বেও, শান্তি আলোচনার অগ্রগতি ধীর গতিতেই চলছে। কিয়েভের নিরাপত্তা নিশ্চয়তা এবং রাশিয়া-অধিকৃত অঞ্চল নিয়ে বিরোধ এখনও অমীমাংসিত।
এদিকে এরই মাঝে ইউক্রেনে হামলা অব্যাহত রেখেছে রাশিয়া। আজ ইউক্রেনের সুমি অঞ্চলের ওখতিরকার একটি অ্যাপার্টমেন্ট ব্লকে ড্রোন হামলায় কমপক্ষে সাতজন আহত হয়েছেন। এর আগে রোববার, ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনী অবরূদ্ধ করে রাখার দাবি করেছে রাশিয়া। তবে প্রতিরক্ষা সীমানা এখনও তাদের নিয়ন্ত্রণে বলে পালটা দাবি করেছে ইউক্রেন।
রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, রুশ বাহিনী খারকভ এবং দোনেৎস্ক অঞ্চলে আরও দুটি বসতির নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। রবিবার ভোরে, রুশ সেনাবাহিনী কিনঝাল ক্ষেপণস্ত্র এবং ড্রোনসহ নির্ভুল-নির্দেশিত অস্ত্র ব্যবহার করে ইউক্রেনের পরিবহন অবকাঠামোতে হামলা চালিয়েছে। এছাড়া সামরিক বিমান ঘাটি এবং জ্বালানি ডিপোও বাদ যায় নি রুশ হামলা থেকে।
একই দিন, ইউক্রেনীয় পূর্ব অপারেশনাল কমান্ড জানায়, তাদের বাহিনী পোকরোভস্ক এবং মিরনোগ্রাদে অতিরিক্ত লজিস্টিক করিডোর স্থাপন করেছে। ইউক্রেনের জাতীয় সংবাদ সংস্থা জানায়, রবিবার খারকিভ অঞ্চলের পেচেনিহ জলাধার বাঁধে রাশিয়ান বাহিনী হামলা চালায়, যার ফলে বাঁধের পাশে রাস্তাঘাটে যান চলাচল ব্যাহত হয়।





