গাজা যুদ্ধ বন্ধে যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবিত শান্তি পরিকল্পনার প্রথম ধাপ পুরোপুরি সফল হয়নি। এরইমধ্যে দ্বিতীয় ধাপ বাস্তবায়ন নিয়ে দৌড়ঝাঁপ শুরু হয়েছে। ট্রাম্পের নেতৃত্বে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দিলেও ইসরাইল তা লঙ্ঘন করে হামলা অব্যাহত রেখেছে গাজা উপত্যকায়। জিম্মিদের মুক্তির বিনিময়ে গাজার কিছু অংশ থেকে ইসরাইলি সেনা প্রত্যাহার করেছে। তবে গাজা উপত্যকায় অবাধে মানবিক সহায়তা প্রবেশের শর্ত থাকলেও, ইসরাইল তা মানেনি।
এমন অবস্থায় দ্বিতীয় ধাপের আলোচনার উল্লেখযোগ্য বিষয় গাজায় অন্তর্বর্তী প্রশাসন গঠন ও আন্তর্জাতিক বাহিনী মোতায়েন। যুদ্ধ অবসানে ট্রাম্পের প্রস্তাবিত শান্তি পরিকল্পনার দ্বিতীয় ধাপ দ্রুতই শুরু হতে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু। তবে মূল ইস্যুগুলোর বিষয়ে এখনো সমাধান আসেনি বলেও মন্তব্য করেন তিনি। এ বিষয়ে ট্রাম্পের সঙ্গে আলোচনা করবেন নেতানিয়াহু।
ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় জানিয়েছে, আগামী ২৯ ডিসেম্বর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন নেতানিয়াহু। আন্তর্জাতিক বাহিনী মোতায়েনসহ দ্বিতীয় ধাপের অগ্রগতি নিয়ে আলোচনা হবে দুই নেতার মধ্যে।
আরও পড়ুন:
এদিকে, ট্রাম্পের শান্তি পরিকল্পনা এগিয়ে নিতে আলোচনার জন্য প্রস্তুত ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। হামাসের এক শীর্ষ কর্মকর্তা জানান, স্বাধীন ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র গঠনের নিশ্চয়তা না পাওয়া পর্যন্ত তারা অস্ত্র সমর্পণের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে না। তাদের প্রতিরোধের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। ইসরাইলের প্রতিশ্রুতি রক্ষার বিষয়েও সন্দিহান হামাস। অন্যদিকে ইসরাইলও হামাসের কথায় আশ্বস্ত হতে পারছে না। যুদ্ধবিরতি চলাকালীন তা লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলেছে দুই পক্ষই।
এদিকে, অধিকৃত পূর্ব জেরুজালেমে জাতিসংঘের ত্রাণ সহায়তা দপ্তরে ইসরায়েলি বাহিনী অভিযান চালিয়ে জিনিসপত্র জব্দ করে। পরে জাতিসংঘের পতাকা নামিয়ে ইসরাইলি পতাকা উত্তোলন করা হয়। এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। জাতিসংঘের সম্পদ, অফিস, স্থাপনার বিরুদ্ধে যেকোনো পদক্ষেপ নেয়া থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি।
এদিকে অবশিষ্ট জিম্মিদের মরদেহ অনুসন্ধানে গাজায় অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে হামাস ও আন্তর্জাতিক রেড ক্রস কমিটি। এক ইসরাইলি পুলিশের মরদেহ এখনো হস্তান্তর করেনি হামাস। এটি ফেরত দিলেই আংশিক রাফা ক্রসিং খুলে দেয়ার শর্ত দিয়েছে ইসরাইল।
এদিকে, উপত্যকার বিভিন্ন জায়গা থেকে ফিলিস্তিনিদের মরদেহ উদ্ধার করে নির্দিষ্ট একটি জায়গায় সমাহিত করা হচ্ছে। আল শিফা হাসপাতালে সমাহিত দেড় শতাধিক মরদেহ উদ্ধার করে অন্য জায়গায় কবর দেয়া হয়েছে। ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়া মরদেহগুলো দাফনের ব্যবস্থা করছেন ফিলিস্তিনিরা।
ইসরাইলি হামলায় যুদ্ধে আহত শিশুসহ ফিলিস্তিনিদের চিকিৎসার জন্য ইতালিতে নেয়া হচ্ছে। এই ধাপে নেয়া হচ্ছে ১৭ জন ফিলিস্তিনিকে। তাদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা প্রদান করবে ইতালি সরকার।





