চিকিৎসা বিজ্ঞানের ব্যাপক উন্নতির ফলে পোলিও, হাম, বসন্তের মতো রোগগুলোর প্রাদুর্ভাব কাটিয়ে উঠতে পেরেছে বিশ্বের অনেক দেশ। কিন্তু এখনও রোগগুলো মাথাব্যাথার কারণ মধ্যপ্রাচ্যের যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ গাজা ও দীর্ঘদিন ধরে চলমান গৃহযুদ্ধে বিপর্যস্ত আফ্রিকার দেশগুলোর মানুষের কাছে।
সম্প্রতি আবুধাবিতে মোহাম্মদ বিন জায়েদ ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে শতভাগ পোলিও নির্মূলের লক্ষ্য নিয়ে একটি সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিশ্বব্যাপী টিকাদান কার্যক্রম এগিয়ে নিতে ধনকুবের বিল গেটসের দাতব্য প্রতিষ্ঠানসহ বেশ কয়েকটি মানবিক সংস্থা ১.৯ বিলিয়ন ডলারের প্রতিশ্রুতি দেয় । অনুদানের আওতায় প্রতি বছর প্রায় ৩৭ কোটি শিশুকে দেয়া হবে পোলিও টিকা। পাশাপাশি ভঙ্গুর অঞ্চলগুলো স্বাস্থ্যসেবা উন্নয়নেও নেয়া হবে উদ্যোগ।
এছাড়া , ২০২৯ সাল নাগাদ শতভাগ পোলিও নির্মূলের আশাবাদও ব্যক্ত করে দাতা সংস্থাগুলো। এর সার্বিক তত্ত্বাবধানে রয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ছাড়াও, গেটস ফাউন্ডেশন, রোটারি ইন্টারন্যাশনাল, সিডিসি, ইউনিসেফ ও ভ্যাকসিন জোট গ্যাভি।
আরও পড়ুন:
তবে আশার বিপরীতে রয়েছে অন্ধকারের কালো ছায়া। কেননা চলতি বছর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে বেরিয়ে এসেছে যুক্তরাষ্ট্র। পাশাপাশি গ্যাভির জন্যও তহবিল বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। আগামী বছর তহবিল কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে যুক্তরাজ্য ও জার্মানি। এছাড়া, আবুধাবিতে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে জানানো হয়, ২০২৯ সালের লক্ষ্যমাত্রা পূরণে এখনো বাজেট ঘাটতি রয়েছে ৪৪০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।
তাই উন্নত দেশগুলোর বড় আকারের বাজেট কর্তনের মধ্যে দাতব্য সংস্থাগুলো তাদের লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারবে কিনা তা নিয়ে রয়েছে সংশয়। এরইমধ্যে শতভাগ পোলিও নির্মূলে বিশ্বের সকল দেশের সহায়তা চেয়েছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক। জানান, সবার সহায়তা পেলে খুব দ্রুত রোগটি থেকে নির্মূল পাবে বিশ্বের লাখ লাখ শিশু।
বিশ্বের মারাত্মক রোগগুলোর একটি পোলিও। ছোঁয়াচে এ রোগটি স্নায়ুতন্ত্রকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। পাশাপাশি এর ফলে পঙ্গু হয়ে যাওয়া বা প্রাণহানির ঘটনাও ঘটে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানায়, বিশ্বব্যাপী পোলিও টিকা প্রচলনের আগে প্রতিবছর সাড়ে তিন লাখেরও বেশি শিশু এ রোগে আক্রান্ত হয়ে পঙ্গুত্ব বরণ করতো। তবে ১৯৮৮ সাল থেকে টিকাদান কর্মসূচি চালুর পর বিশ্বব্যাপী এ রোগের প্রাদুর্ভাব ৯৯ শতাংশ কমেছে।




