রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ক্রমেই রূপ নিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার বাণিজ্য যুদ্ধে। সেই দ্বন্দ্ব উসকে দিচ্ছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলো। রাশিয়ার ওপর যুক্তরাষ্ট্রের ১০০ শতাংশ সেকেন্ডারি শুল্ক আরোপের পর, এবার দেশটির ওপর নিষেধাজ্ঞা দিতে উঠে পড়ে লেগেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। রাশিয়াকে বাণিজ্যকভাবে চ্যালেঞ্জ জানাতেই মূলত পশ্চিমাদের এই কার্যক্রম।
যদিও রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপে এবার ব্যর্থ হয়েছে ইইউ। বুধবার স্লোভাকিয়া ও মাল্টার ভেটোতে আটকে যায় রাশিয়ার ওপর ইউরোপীয় কমিশনের ১৮তম নিষেধাজ্ঞা। যেখানে নর্ড স্ট্রিম পাইপলাইন দিয়ে রাশিয়ার গ্যাস সরবরাহের জন্য আর্থিক লেনদেনে নিষেধাজ্ঞা দেয়ার প্রস্তাব ছিলো। রাশিয়ার গ্যাসের ওপর স্লোভাকিয়ার অধিক নির্ভরশীলতার কারণে আগামী ২০২৭ সালের আগে তারা এ প্রস্তাবে সম্মত হবে না বলে সাফ জানিয়ে দেয় ইউকে।
অবশ্য ইউক্রেনের জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাজেটে ১১৫ বিলিয়ন ডলারের ফান্ড তৈরির প্রস্তাব করেছে সংস্থাটি। ইইউ বাজেট কমিশনার জানান, যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনের দীর্ঘমেয়াদী পুনর্গঠনের জন্য ব্যবহার করা হবে এই অর্থ। এছাড়াও লন্ডনে বৃহস্পতিবার রাতে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্তম্বের সঙ্গে ইউক্রেন ইস্যুতে আলোচনায় বসার কথা রয়েছে জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রেডরিখ মার্জের। তাদের এ বৈঠক থেকে ইউক্রেনের জন্য আসতে পারে সুখবর।
ইউক্রেন-রাশিয়া নিয়ে কূটনৈতিক আলোচনার মধ্যেও থেমে নেই দুপক্ষের হামলা-পাল্টা হামলা। বুধবার ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় ডোব্রপিলিয়া শহরের একটি মার্কেটে রুশ হামলায় দেশটির কয়েকজন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে বলে দাবি কিয়েভের। এ ঘটনায় আহত হন অনেকে।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, ‘ডোপ্রপিলিয়াতে রাশিয়া ড্রোন হামলা করেছে। অনেক দোকান পুড়ে গেছে। নিহতের সংখ্যা এখনও স্পষ্ট নয়। নিহতের পরিবারের প্রতি সহমর্মিতা জানাচ্ছি।’
একইদিন রাশিয়ার দোনেস্কের আরও দুটি অঞ্চল দখলে নেয়ার দাবি করে মস্কো। এছাড়াও সুমি ও খারকিভ অঞ্চলেও একাধিক হামলা চালায় তারা। সেসময় ১২টি আর্টিলারি সেল, ১১টি ইলেকট্রনিক ওয়ারফায়ার স্টেশন ধংসের দাবি করে ক্রেমলিন।
রাশিয়ার আক্রমণ ঠেকাতে পশ্চিমাদের অস্ত্র সহায়তার পাশাপাশি নিজেদের অস্ত্র উৎপাদনের সক্ষমতাকে বৃদ্ধি করতে চান ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট। আগামী ৬ মাসের মধ্যে দেশেই চাহিদার প্রায় ৫০ শতাংশ অস্ত্র উৎপাদন করতে চান তিনি।
ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে, আগামী ৬ মাসের মধ্যে প্রয়োজনের ৫০ শতাংশ সমরাস্ত্র ইউক্রেনেই তৈরি করার। যদিও বিষয়টি সহজ নয়, তবুও এ লক্ষ্য অর্জনের বিষয়ে আশাবাদী।’
রাশিয়াকে প্রতিহত করতে এরইমধ্যে সরকারে ব্যাপক রদবদল শুরু করেছেন ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি।