চট্টগ্রামে ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি; চলছে ভোটকেন্দ্র মেরামত

চট্টগ্রামের দুইটি ভোটকেন্দ্র | ছবি: এখন টিভি
0

ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে সারাদেশের নির্বাচন কার্যালয়। ভোটকেন্দ্রের তালিকা তৈরি, নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও অবকাঠামোগত সংস্কারের তালিকা তৈরিসহ চলছে নানা তোড়জোড়। চট্টগ্রামে ২৭৭টি ভোটকেন্দ্র মেরামতে বরাদ্দ চেয়ে চিঠি গেছে মন্ত্রণালয়ে। এছাড়াও একইসঙ্গে চলছে নির্বাচনী এলাকার সীমানা নির্ধারণ, ভোটার তালিকা হালনাগাদসহ নানা আনুষঙ্গিক প্রস্তুতি।

সম্প্রতি লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠকের পর থেকেই দেশে বইতে শুরু করেছে নির্বাচনী হাওয়া। ফেব্রুয়ারিতে ভোটের সম্ভাব্য সময় ধরে নিয়ে, ঢাকার পাশাপাশি নির্বাচনী উত্তাপের আঁচ লেগেছে দেশের তৃণমূল নির্বাচন কমিশনগুলোতেও। শুরু হয়েছে ভোট আয়োজনের তোড়জোড়, চলছে প্রস্তুতি।

এরইমধ্যে নির্বাচন কেন্দ্র পরিদর্শন, অবকাঠামো পরিস্থিতি, কেন্দ্রের নিরাপত্তা ব্যবস্থাসহ নানা বিষয়ে প্রতিবেদন তৈরি করেছে জেলা নির্বাচন কমিশন। একইসঙ্গে চলছে রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন, নির্বাচনী এলাকার সীমানা নির্ধারণ, ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রমও।

চট্টগ্রামে গুরুত্ব পাচ্ছে ভোটকেন্দ্র সংস্কারের কাজ। এরইমধ্যে চট্টগ্রাম আঞ্চলিক নির্বাচন কার্যালয় থেকে ২৭৭টি ভোট কেন্দ্রের তালিকা প্রণয়ন করা হয়েছে, যেগুলো জরুরি ভিত্তিতে সংস্কার প্রয়োজন। এসব কেন্দ্রের কোনটির সীমানা প্রাচীর নির্মাণ, কোনটির দরজা-জানালাসহ নানা ধরনের অবকাঠামোগত মেরামত প্রয়োজন জানিয়ে চিঠি দেয়া হয়েছে জাতীয় নির্বাচন কমিশনকে।

চট্টগ্রাম আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনার প্রেক্ষিতে আমরা সম্ভাব্য ঝুঁকিপূর্ণ, মেরামতযোগ্য কেন্দ্রগুলোকে একটা তালিকা পাঠিয়েছি। আমি যতটুকু জানতে পেরেছি, বিভিন্ন বিভাগে আমাদের কর্তৃপক্ষ সে তালিকাটা দিয়েছে যেন প্রয়োজনীয় মেরামতের ব্যবস্থা গ্রহণ করেন।’

জেলা নির্বাচন কমিশন বলছে, নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোতে চিঠি পাঠানো হয়েছে। একইসঙ্গে অর্থ বরাদ্দ চেয়ে করা হয়েছে আবেদনও। তবে, এখনও এ সংক্রান্ত কোনো নির্দেশনা পায়নি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো।

চট্টগ্রাম শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের সহকারী নির্বাহী প্রকৌশলী বাবুল আহমেদ বলেন, ‘বেশিরভাগ ভোটকেন্দ্রই প্রাথমিক বিদ্যালয়ে হয়। আর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কাজগুলো কিন্তু দেখে এলজিইডি। মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে যেসব ভোটকেন্দ্রগুলো হবে, ওইগুলোর প্রাক্কলন করে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। ভোটকেন্দ্র সংস্কারের জন্য আসলে বেশি সময় লাগে না। ওখানে তো আর মেজর মেরামত হয় না।’

রিডার্স স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ মো. আব্দুল্লাহ ওমর ফারুক বলেন, ‘নির্বাচন উপলক্ষে আমাদের কাছে এখনও কোনো প্রজ্ঞাপন বা ওখান থেকে আমাদের কোনো তথ্য চাওয়া বা কিছু বলা হয়নি। তবে আশা করছি দ্রুতই হয়তো পাবো। আর আমাদের প্রতিষ্ঠান নিজস্ব গতিতে যে সংস্কারগুলো রয়েছে, সেটা করবে। আর কিছু অতিরিক্ত সংস্কার প্রয়োজন হলে আমরা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে যেভাবে করার সেভাবে করবো।’

এবার ভোট পদ্ধতিতে আসতে পারে বড় পরিবর্তন, যা নিয়ে ভাবছে কমিশন কর্মকর্তারা। আগে সিটি করপোরেশন ও জাতীয় নির্বাচনে ইভিএম প্রাধান্য পেলেও এবার ভোট হতে পারে শুধু ব্যালটে। এজন্য ব্যালট পেপার, সিল, ব্যালট বাক্সের পরিমাণেও আসতে পারে পরিবর্তন।

চট্টগ্রামের সিনিয়র জেলা নির্বাচন অফিসার মোহাম্মদ বশির আহমেদ বলেন, ‘কমিশন যখন যে নির্দেশনা দেবে আমরা সেই নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করছি। যেমন এখন আমরা ভোটার তালিকা নিয়ে আর ভোটকেন্দ্র নিয়ে কাজ করছি। বিভিন্নভাবে আমরা ভোটারদের জানাচ্ছি, কীভাবে ভোট প্রদান করবে, বিভিন্ন বিষয়ে আমরা ভোটার এডুকেশনের মাধ্যমে অবহিত করবো।’

কমিশন কর্মকর্তারা জানান, চট্টগ্রামের ১৬টি আসনে নতুন ভোটার অন্তর্ভুক্তির কাজ অনেকটাই অগ্রগতি হয়েছে। গেল দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে চট্টগ্রামের ১৬ আসনে ভোটার ছিল ৬৫ লাখ ১৫ হাজার। আর ভোটকেন্দ্র ছিল দুই হাজার ২০টি।

এসএস