ঢাকার আহ্বানেও নীরব দিল্লি: শেখ হাসিনা ফেরাতে বাধা কোথায়?

শেখ হাসিনা
শেখ হাসিনা | ছবি: এখন টিভি
0

জুলাই গণহত্যা মামলার প্রথম রায়ে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের মৃত্যুদণ্ড ঘোষণার পর নতুন করে আলোচনায় তাদের দেশে ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া। রায়ের পরপরই দিল্লির কাছে প্রত্যর্পণের আহ্বান জানিয়েছে ঢাকা, তবে ভারত এ বিষয়ে এখনো নীরব। এমন অবস্থায় আইনজীবীরা বলছেন, ভারতে বন্দী না থাকায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত শেখ হাসিনাকে ফেরাতে জটিলতা আছে।

জুলাই গণহত্যা মামলার প্রথম রায়ে ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের মৃত্যুদণ্ডের রায়ের পর, এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে তাদের দেশে ফিরিয়ে আনার বিষয়টি। অনেকরেই প্রশ্ন কিভাবে শেখ হাসিনাকে দেশ এনে শাস্তি নিশ্চিত করা হবে?

রায় প্রকাশের পর পরেই পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে দেয়া এক বিজ্ঞপ্তিতে জুলাই অভ্যুত্থান ঘিরে হত্যাযজ্ঞ চালানোর মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালকে ফেরত পাঠাতে দিল্লির প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ঢাকা।

আর রায়ের তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে আনতে ভারতের কাছে আবারও চিঠি পাঠানো হবে বলে জানান আইন উপদেষ্টা এবং পররাষ্ট্র উপদেষ্টা।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, ‘তার প্রত্যর্পণের জন্য আমরা অলরেডি লিখেছি।’

আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেন, আমরা শেখ হাসিনাকে প্রত্যর্পণের জন্য ভারতের কাছে আবার চিঠি লিখবো। ভারত যদি এ গণহত্যাকারীকে আশ্রয় দেয়া অব্যাহত রাখে তাহলে ভারতকে বুঝতে হবে এটা বাংলাদেশ। এবং এটা বাংলাদেশের মানুষের বিরুদ্ধে একটা শত্রুতা, একটা নিন্দনীয় আচরণ।

রায়ের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ভারতও। বিষয়টি তাদের নজরে এসেছে জানালেও, কিছুই বলেনি শেখ হাসিনাকে দেশে পাঠানো প্রসঙ্গে।

আইনজীবী শিশির মনিরের মতে, ভারতে সঙ্গে বাংলাদেশের বন্দী প্রত্যর্পণ চুক্তি থাকলেও শেখ হাসিনা ভারতে বন্দী অবস্থায় না থাকায় তাকে ফিরিয়া আনায় রয়েছে জটিলতা।

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট শিশির মনির বলেন, ‘যদি বিনিময় করতে হয় তাহলে তার প্রধান শর্ত হচ্ছে বন্দী হতে হবে। বাংলাদেশে অনুপ চেঠিয়া বন্দী ছিল। এজন্য এখানে বন্দী বিনিময় চুক্তি অ্যাপ্লাই করা গেছে। ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশ এ চুক্তি ব্যবহার করতে চাইলে আগে বন্দী স্ট্যাটাস অর্জন করতে হবে। মাঠে ঘাটে বক্তৃতা দিয়ে তো আর বন্দী বিনিময় হবে না। বন্দী বিনিময় করতে গেলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে হবে। এর দুটো রাস্তা। একটা হলো হাইলি ইফিশিয়েন্ট ডিপলোম্যাটিক স্টেপ, আরেকটা হলো হায়ারড এফিশিয়েন্ট ল ফার্মকে এনগেজ করে আইনিফাইড।’

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর গাজী তামিম মনে করেন, ভারত যে কোন ব্যক্তি নয় বরং দেশের বন্ধু সেটি প্রমাণের এখনই সুযোগ।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের বন্ধু ভারত কোনো ব্যক্তির বন্ধু হতে পারে না। আমি মনে করি শেখ হাসিনাকে ফেরত দিয়ে ভারত সে বন্ধুত্বের প্রমাণ দিবে। যদি চুক্তি ভঙ্গ করে ভারতে ওনাকে ফেরত না দেয় তাহলে দুটো কাজ হবে। এক চুক্তিও ভঙ্গ হলো আর ভারত বাংলাদেশের নয় শেখ হাসিনার বন্ধু সেটি প্রমাণিত হলো।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে আনতে দু’দেশের পারস্পরিক সমঝোতার গুরুত্বও তুলে ধরেন আইনজীবীরা।

এএইচ