চট্টগ্রাম বন্দর থেকে প্রায় ৪৫ নটিক্যাল মাইল দূরে পর্যটন নগরী কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার দুর্গম দ্বীপ মাতারবাড়ি। এই বন্দর ঘিরে আশার আলো দেখছেন অবহেলিত বাসিন্দারা। বন্দরের জন্য জায়গা-জমি ও বসতভিটা ছেড়ে দিতে হয়েছে তাদের। তবুও এনিয়ে তাদের দুঃখ নেই- বন্দর ঘিরে নতুন অর্থনৈতিক কর্মচাঞ্চল্য ও কর্মসংস্থানের আশায় আছেন স্থানীয়রা।
স্থানীয়রা বলছেন, এই অঞ্চলের মানুষের মূলত জেলেকেন্দ্রিক জীবনযাপন- আমরা এই বন্দর নির্মাণের জন্য বসতভিটা পর্যন্ত ছেড়ে দিয়েছি। যে যার মতো জায়গা-জমি দিয়েছে একমাত্র কাজের আশায়।
চ্যানেল উদ্বোধন অনুষ্ঠান উপলক্ষে বন্দরের সার্বিক প্রস্তুতি কার্যক্রম পরিদর্শন করেন নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। বলেন, বছরে দুই থেকে আড়াই বিলিয়ন ডলার রাজস্বের জোগান দিতে পারবে নতুন এই বন্দর। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর ব্যবসা-বাণিজ্যের আঞ্চলিক হাব হিসেবে ব্যবহারের জন্য সড়ক, রেল ও নৌপথের বহুমাত্রিক সংযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলা হবে। আর জানুয়ারিতে টার্মিনাল ও সংযোগ সড়কের নির্মাণ শুরু হবে। সবমিলিয়ে শুধু ব্যবসা-বাণিজ্য নয় এই অঞ্চলের জনজীবন পাল্টে দেবে এই বন্দর।
মাতারবাড়ি বন্দরের টার্মিনাল নির্মাণের সব প্রক্রিয়া চূড়ান্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ সোহায়েল। আরও বলেন, ট্রান্সশিপমেন্ট বন্দরের উপর নির্ভরতা কমাবে মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দর। একইসঙ্গে রপ্তানিপণ্য সরাসরি ইউরোপ-আমেরিকার বন্দরে পৌঁছে যাবে। আগে পণ্য পাঠাতে ৪ সপ্তাহ সময় লাগতো এখন তা অর্ধেকে নেমে আসবে। সেই সঙ্গে পণ্য খালাস ও পরিবহন খরচ ১৫ থেকে ২০ শতাংশ কমবে।
প্রথম টার্মিনালে থাকবে ৪৬০ মিটার দৈর্ঘ্যের একটি কনটেইনার জেটি ও ৩৩০ মিটার দৈর্ঘ্যের একটি মাল্টিপারপাস জেটি। দু’টি টার্মিনাল নির্মিত হলে বছরে ৪ মিলিয়ন টিইইউএস কনটেইনার ও ১১ মিলিয়ন টন সাধারণ পণ্য হ্যান্ডলিং করবে মাতারবাড়ি বন্দর।