রাজধানীতে পণ্য পরিবহনে চাঁদাবাজি, ক্রেতার ওপরই অতিরিক্ত ব্যয়ের ভার

কারওয়ানবাজারে আসা সবজি বোঝাই ট্রাক
কারওয়ানবাজারে আসা সবজি বোঝাই ট্রাক | ছবি: এখন টিভি
0

রাজধানীতে পণ্য পরিবহনে থামছেই না চাঁদাবাজি। পথে পথে চাঁদা দিতে গিয়ে বাড়তি অর্থ গুণতে হচ্ছে ব্যবসায়ীদের। অতিরিক্ত ব্যয়ের বোঝা এসে পড়ছে সাধারণ ক্রেতার ওপর। এছাড়া চাঁদাবাজির কারণে পণ্য পরিবহনেও লাগছে বাড়তি সময়। বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, শুধু চাঁদাবাজি বন্ধ হলেই পণ্যের দাম অন্তত ২৫ শতাংশ পর্যন্ত কমানো সম্ভব।

ট্রাক চালক বাবুল মিয়া, নড়াইল থেকে ১৭০ কি.মি পথ পাড়ি দিয়ে মাঝরাতে রাজধানীর একটি কাঁচাবাজারে জামসেদ ব্যাপারীর পটল আর শসা এনেছেন। এ জন্য ইজারার নামে পথে তাকে গুনতে হয়েছে বাড়তি টাকা।

তিনি জানান, সেখানে ৫০ টাকা চাঁদা দিতে হয়েছে। এতে করে বেড়ে গেছে সড়ক পরিবহন খরচ। যে কারণে বাড়াতে হবে ভাড়া।

কিছুক্ষণ পর যোগাযোগ করা হলো ইজারাদারের সাথে, সব শুনে তিনি আদায় করা বাড়তি টাকা ফেরত দিতে রাজি হলেন। রাজধানীর অন্যান্য বাজারের চিত্রও অনেকটা একই। রাত বাড়লে আসতে থাকে শাকসবজি ফলমূল বহনকারী ট্রাকের সংখ্যা।

চালকরা জানান, জেলাগুলো থেকে ঢাকার উদ্দেশ্য রওনা হবার পর থেকে নানা স্থানে ট্রাকের ওপর অসাধু ব্যক্তিদের খড়গ নেমে আসে। সেই সাথে সম্প্রতি মরার উপর খাঁড়ার ঘা হয়ে সামনে এসেছে সড়কে ডাকাতের উপদ্রব। বিক্রেতারা জানান, চাঁদাবাজির কারণে খরচ বাড়লে কমে লাভের পরিমাণ।

এ বিষয়ে কৃষি অর্থনীতিবিদ ড. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, নজরদারি না বাড়ালে ভোক্তার পকেট থেকেই ব্যয় হবে অতিরিক্ত টাকা। বলেন, চাঁদাবাজি বন্ধ হলে কমবে নিত্যপণ্যের দাম।

ফোনকলে তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন পলিটিক্যাল পার্টির ব্যানারে হয়। এবং যারা দায়িত্বে থাকে তাদের মাধ্যমেও কিছু চাঁদাবাজি হয়। চাঁদাবাজির কারণে প্রতি ইউনিট কস্ট বা খরচ বেড়ে যায়। পরিবহনের সঙ্গে চাঁদাবাজি যুক্ত হলে কেজিতে খরচ বেড়ে যায়। খরচ বাড়লে সেটা মূলত কনজিউমার বা ভোক্তার ওপরে গিয়ে পড়ে।’

সড়ক ও মহাসড়কে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে চাঁদাবাজ সিন্ডিকেট। শ্রমিক ইউনিয়নের নামে-বেনামে যানবাহন আটকে প্রতিদিনই তোলা হচ্ছে বিপুল টাকা। চাঁদা দিতে গিয়ে দীর্ঘক্ষণ পণ্যবাহী যান নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। চাঁদাবাজি বন্ধ হলে এর প্রভাবে ব্যবসার পরিচালন ব্যয় আর পণ্য পরিবহনের সময় কমে আসবে বলে আশা ব্যবসায়ীদের।

এএইচ