উত্তাল পাহাড়ি জনপদে শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ১৯৯৭ সালে জনসংহতি সমিতি (জেএসএস) এর সাথে শান্তি চুক্তি করে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার। তখন খাগড়াছড়ি স্টেডিয়ামে অস্ত্র জমা দিয়ে সুপথে ফিরে আসে সন্তু বাহিনীর কয়েক হাজার সদস্য।
শান্তি প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি পিছিয়ে পড়া পার্বত্য অঞ্চলে শুরু হয় উন্নয়নের কাজ। গেল দুই যুগে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, যোগাযোগসহ প্রতিটি ক্ষেত্রে হয়েছে ব্যাপক পরিবর্তন। পার্বত্য অঞ্চলকে সুরক্ষিত করতে ও কৃষিক্ষেত্রে উন্নয়নের লক্ষ্যে দুর্গম সীমান্ত এলাকায় নির্মিত হচ্ছে সীমান্ত সড়কও। শুধু তাই নয়, অর্থনৈতিকভাবেও স্বাবলম্বী হয়েছে পাহাড়ের মানুষ। এছাড়াও, পিছিয়ে পড়া বিভিন্ন ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর মানুষের জীবনমানে এসেছে ব্যাপক পরিবর্তন। কিন্তু চুক্তির ২৭ বছরেও শান্তি ফেরেনি পাহাড়ি এ জনপদে।
আধিপত্য বিস্তারের জেরে সৃষ্টি হয়েছে নতুন নতুন দল। আর, এসব দলের সদস্যরা লিপ্ত হচ্ছে চাঁদাবাজি, গুম, খুন ও রক্তক্ষয়ী সংঘাতে। তাই পাহাড়ের সংঘাত বন্ধ ও শান্তি ফিরিয়ে আনতে শান্তিচুক্তির পূর্ণ বাস্তবায়নের দাবি জানান স্থানীয়রা।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, ‘আমাদের দুর্ভাগ্য দীর্ঘ ২৭ বছরেও চুক্তি বাস্তবায়ন হয়নি। যেহেতু চুক্তি বাস্তবায়ন হয়নি সেক্ষেত্রে তো শান্তির আশাও করা যায়না। সরকারের উদ্যোগকে আমরা সাধুবাদ জানাই। আমরা সকলে প্রত্যাশা করি পার্বত্য শান্তি চুক্তি বাস্তবায়ন হোক।’
পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদের সভাপতি কাজী মুজিবুর রহমান বলেন, ‘যে চুক্তি হয়েছে তা উইন উইন হয়নি। এতে এক পক্ষকে লাভবান করা হয়েছে বিধায় এ অঞ্চলে বাঙালীদের কোনো প্রতিনিধি ৯৭ সালের চুক্তিতে কোনো ডায়ালকে ছিলো না। এমনকি সেনাবাহিনীর উচ্চ পর্যায়ের কোনো প্রতিনিধি ছিলো না বিধায় এ চুক্তিতে শান্তি প্রতিষ্ঠা হয়নি।’
এদিকে পাহাড়ে পরিপূর্ণ শান্তি প্রতিষ্ঠায় অন্তর্বর্তী সরকার গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে বলে জানান পররাষ্ট্র উপদেষ্টা ড. তৌহিদ হোসেন।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা ড. তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘সরকার প্রকৃতঅর্থেই চায় এ অঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠিত হোক। বিপুল সম্ভাবনা আছে সেটাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার। সুযোগ ও তৈরি হবে।’