মেঘনা নদীর কোলঘেষা জনপদ নরসিংদীর সদর উপজেলার আলোকবালী ইউনিয়ন। ২৪ বর্গকিলোমিটারের এই ইউনিয়নের ৯ গ্রামে বসবাস প্রায় ৫০ হাজারেরও বেশি মানুষের। নদী ঘেরা এই চরাঞ্চল থেকে আশপাশের গ্রামে যাতায়াতের একমাত্র ভরসা নৌকা।
সদরের সাথে এই দুর্গম চরাঞ্চলের দূরত্ব ২০ কিলোমিটার। তবে সেতু না থাকায় আলোকবালী থেকে নৌকায় চড়ে সদরের শ্রীনগরে যেতে হয় স্থানীয়দের। এতে পণ্য পরিবহনে ভোগান্তিতে পড়তে হয় কৃষক ও জেলেদের।
তারা জানান, নদী থেকে নৌকায় নিতে হয়। নৌকা থেকে নরসিংদী যেতে হয়। সেখান থেকে আবার লেবার দিয়ে বাজারে তুলতে হয়। ২০ টাকা বা ৫০ টাকার কাজে ২০০ টাকা খরচ হয় এখন। এই এলাকার লোকেরা প্রচুর সবজি উৎপাদন করে। কিন্তু সময়মতো এগুলো তারা পৌঁছাতে পারে না। এজন্য তারা ন্যায্য দাম থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। যদি আলোকবালি থেকে পঞ্চবর্তী পর্যন্ত একটা ব্রিজ হতো তাহলে কৃষকদের অনেক সুবিধা হতো।
স্থানীয়রা জানান, এখানে ৩টি কমিউনিটি ক্লিনিক ও ১টি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থাকলেও নিয়মিত চিকিৎসক থাকেন না। এজন্য জরুরি সেবাপ্রত্যাশী রোগী নিয়ে মেঘনা নদী পাড়ি দিতে হয় তাদের। যাতায়াতে ২-৩ ঘণ্টা লাগায় অনেক সময় হয় দুর্ঘটনাও। এছাড়া সেতুর অভাবে ভোগান্তি নিয়েই বিদ্যালয়ে আসতে হয় আলোকবালী ইউনিয়নের বাইরে থেকে আসা শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের।
স্থানীয় এলাকাবাসী জানান, যখন ঝড় থাকে, বৃষ্টি থাকে তখন আর আমরা নরসিংদী পর্যন্ত এসে এরপর আর অফিসে আসতে পারি না। গর্ভবতী মায়েদের হাসপাতালে নিয়ে যেতে যেতে অনেকসময় রাস্তায় দুর্ঘটনা হয়।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর বলছে, এরইমধ্যে সেতু নির্মাণের সম্ভাব্যতা যাচাই করা হয়েছে। শিগগিরই প্রকল্পের অধীনে একটি সেতু নির্মাণ করা হবে বলে আশ্বাস দেন এলজিইডির কর্মকর্তারা।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ফুলকাম বাদশা বলেন, ‘আমাদের ইতোমধ্যে একটি প্রকল্প আছে। প্রকল্পের সার্ভে হয়ে গেছে, স্টাডিও হয়ে গেছে। যদি প্রকল্পটি আলোর মুখ দেখে তাহলে ব্রিজটি বাস্তবায়ন হবে শিগগিরই।’