চোরাচালানের রুটে রূপ নিচ্ছে সীমান্ত, তৎপর চক্র

বান্দরবানের সীমান্ত
বান্দরবানের সীমান্ত | ছবি: এখন টিভি
0

প্রশাসনের নানামুখী পদক্ষেপও বান্দরবান-মিয়ানমার সীমান্তে থামানো যাচ্ছে না চোরাচালান। দুর্গম অঞ্চল ও যোগাযোগ ব্যবস্থার সুযোগে দিন দিন বেপরোয়া হয়ে উঠছে চক্রের সদস্যরা। অবৈধ পথে ঢুকছে গবাদিপশু ও মাদকসহ বিভিন্ন পণ্য। এপাড় থেকেও যাচ্ছে বিভিন্ন পণ্য। শক্তিশালী চোরাচালান চক্র ও হুন্ডির মাধ্যমে অবাধে হাজার কোটি টাকা পাচার হয়ে গেলেও, জনসচেতনতাকেই গুরুত্ব দিচ্ছে স্থানীয় প্রশাসন।

পাহাড়ে ঘন সবুজের সমারোহ, উঁচু-নিচু পথ চলে গেছে গভীর থেকে গভীরে। বান্দরবানের ঘন সবুজের হাতছানি দিয়ে ডাকে, বাঁধতে চায় মায়াজালে। তবে এ সৌন্দর্যের আড়ালে পার্বত্য এ জেলায় দুর্গম যোগাযোগ ব্যবস্থার সুযোগে গড়ে উঠেছে শক্তিশালী চোরাচালান চক্র।

বাংলাদেশের সাথে মিয়ানমারের সীমান্তের দৈর্ঘ্য ২৭১ কিলোমিটার। এরমধ্যে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তের ফুলতলী, চাকডালা, তুমব্রু, ঘুমধুম ও লেমুছড়ি পয়েন্ট চোরাচালানের স্বর্গরাজ্য। প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর নজরদারির পরও সীমান্ত দিয়ে থামছে না চোরাচালান। এদিকে দুর্গম অঞ্চলের সুযোগ নিয়ে আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে চোরাচালান চক্র। অবাধে ঢুকছে গবাদি পশু ও মাদকসহ বিভিন্ন পণ্য। তবে মিয়ানমার ও পার্বত্য এলাকার বিভিন্ন বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র সংগঠন তাদের অর্থের যোগান নিশ্চিতে চোরাকারবারিতে সহায়তা করছে বলে দাবি স্থানীয়দের।

স্থানীয়দের মধ্যে একজন বলেন, ‘চোরাচালানের মাধ্যমে যেটা আসতেছে, গরু, ইয়াবা সরবরাহ করে টাকা করে ওরা অস্ত্র চোরাচালান করে।’

অন্য একজন বলেন, ‘মুনাফার জন্য নিম্নআয়ের মানুষজন বিশেষ করে নিজের জীবনের চিন্তা না করে অর্থের পেছনে ছুটছে।যে কারণে তারা মাইন বিস্ফোরিত হচ্ছে।’

সীমান্তের চোরাচালান পরিস্থিতির অবনতির বড় প্রমাণ মেলে গর্জনিয়া বাজারের চড়া মূল্যের ইজারা। গত বছর আড়াই কোটি টাকায় ইজারা হলেও এবার ইজারা হয়েছে ২৬ কোটি টাকায়। বাজারটি কক্সবাজারের রামু উপজেলার মধ্যে হলেও নাইক্ষ্যংছড়ির কাছে এবং আইনশৃঙ্খলার বিষয়টি দেখভাল করা হয় নাইক্ষ্যংছড়ি থেকেই। এ বাজারের রশিদে বৈধতা দেয়া হয় চোরাই গরুর। পাশাপাশি এ রুট ব্যবহার করে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশেও জড়িত শক্তিশালী চক্রটি। অবৈধ কাজে হুন্ডি ও মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে পাচার হচ্ছে হাজার কোটি টাকা।

স্থানীয়দের মধ্যে একজন বলেন, ‘বাংলাদেশ থেকেও অহরহ পণ্য ওইদিকে পাচার হচ্ছে। এ টাকাগুলো হুন্ডিার মাধ্যমে, বিভিন্ন ব্যাংকের মাধ্যমে পাচার হচ্ছে।’

তবে এ বিষয়ে পুলিশ ও বিজিবির কেউ ক্যামেরার সামনে কথা বলতে রাজি হননি। আর স্থানীয় প্রশাসন জানায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতার পাশাপাশি স্থানীয়দের সচেতনতার মাধ্যমে চোরাচালান প্রতিরোধ করা সম্ভব।

বান্দরবান নাইক্ষ্যংছড়ির উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাজহারুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা শুধু জনসচেতনতা নিয়েই কাজ করতে পারি। প্রতিরোধ বা ওদের চ্যালেঞ্জ করা বিজিবির কাজ। উনাদের দায়িত্ব উনারা পালন করছেন।’

চোরাচালান দমন ও নিরাপত্তা বিবেচনায় সীমান্ত এলাকার বাজারে নজরদারি বাড়ানো এবং যৌথ অভিযানিক দল গঠনের দাবি সীমান্তবাসীর।

এসএস