২০২১ সালের আগস্টে বগুড়া-জামালপুরের নৌপথে ফেরি চলাচল উদ্বোধন হয়। কালীতলা-জামথল নৌরুটে সি-ট্রাক চলেনি এক মাসও। নদী খননের অজুহাতে সাময়িকভাবে ফেরি বন্ধ হলেও তা চালু হয়নি এখনও পর্যন্ত।
যমুনা নদীর দুই পাড়ের বাসিন্দাদের দীর্ঘদিনের দাবি পূরণ না হওয়ায় এখনো ঝুঁকি নিয়েই চলতে হচ্ছে তাদের। বর্ষায় উত্তাল যমুনায় ঝুঁকি আরও বাড়ে। ছোট ছোট যানবাহনসহ যাত্রী, গবাদিপশু ও কৃষিপণ্য আনা-নেয়া করতে হয় শ্যালো-মেশিনচালিত নৌকায়।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, ‘ট্রলারে নিরাপদ না। উপরে ছাউনি নেই। সামনে বৃষ্টির দিনে অনেক সমস্যা। বৃষ্টির সময় দেখা যায় ঝড় আসছে এমন সময় আমাদের জীবনের হুমকি নিয়ে যাতায়াত করতে হয়। নিরাপদ যাতায়াত ব্যবস্থার জন্য আমি সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।’
এই পথে উত্তর জনপদের সাথে রাজধানীর দূরত্ব কমে প্রায় ৭০ কিলোমিটার। ফেরি চলাচল শুরু হলে বাড়বে যাত্রী পারাপার। সেই সাথে কৃষিপণ্য আনা নেয়া ও কেনাবেচায় সুবিধা হবে নদী পাড়ের মানুষের।
যাত্রীরা বলেন, ‘অতিরিক্ত যাত্রী এবং মালামাল বহন করা সম্ভব নয়। গরু, মহিষ, শস্য পণ্য আনতে কৃষকদের অনেক কষ্ট হয়।’
সারিয়াকন্দি বণিক সমবায় সমিতির সভাপতি সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘ফেরি চলাচল শুরু হলে জামালাপুরের ব্যবসায়ীগণ সারিয়াকন্দিতে আসবে। এখানের ধান, চাল, গম নির্বিঘ্নে গন্তব্যে পৌঁছে দিতে পারবে। এবং সারিয়াকান্দির ব্যবসায়ীগণ জামালপুর থেকে মাল আনা নেয়া করতে পারবে। দুই পাড়ের জন্যই সুবিধা হবে।’
বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার কালীতলা ঘাট থেকে প্রতিদিন সকাল ৯টা, বেলা ১১টা, দুপুর ২টা ও বিকেল ৪টায় গাদাগাদি করে যাত্রী নিয়ে শ্যালো মেশিন চালিত নৌকা ছেড়ে যায় জামথল ঘাটের উদ্দেশ্যে। দ্রুত ফেরি চালুর আশ্বাস এই কর্মকর্তার।
সারিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহরিয়ার রহমান বলেন, ‘নৌ পরিবহন থেকে একটা টিম এসে আমাদের সরেজমিনে ভিজিট করে গেছেন।তারা ইতিবাচক আছেন। একসময় যেহেতু বন্ধ হয়ে গিয়েছিলো, আশা করা যায় এখন যে গতিতে কাজ আগাচ্ছে তাতে ভবিষ্যতে এখানে অতি দ্রুতই ফেরি ঘাট বা বিআইডব্লিউটিএর একটা জামথল ঘাট এবং কালীতলা ঘাটে একটা নৌ পারাপারের ব্যবস্থা তারা করবে।’
অপরিকল্পিতভাবে অবৈধ বালু উত্তোলনে পরিবর্তন হয় নদীর গতিপথ। সে কারণেই বর্ষা ছাড়া বছরের বাকি সময় বিঘ্নিত হয় নদীপথের যোগাযোগ। কালীতলা-জামথল ঘাট হয়ে চলাচল করা যাত্রী ও ব্যবসায়ীদের দাবি—নদী খনন করে ফেরি চলাচলের মাধ্যমে উন্নত করা হোক বগুড়া ও জামালপুরের যোগাযোগ ব্যবস্থা।