তিনি বলেন, ‘হরিরামপুর উপজেলার ধুলসুরা ও হারুকান্দি ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রাম এবং সদর উপজেলার হাটিপাড়া ইউনিয়নের নদীতে কুমিরটি কয়েকবার দেখা গিয়েছিল। শুক্রবার রাতে স্থানীয়রা সেটি চৌকিঘাটা এলাকা থেকে আটক করেছে বলে খবর পেয়েছি। স্থানীয় গ্রাম পুলিশ সেখানে অবস্থান করছেন। আজ আমরা ঢাকার বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞ দলের সঙ্গে ঘটনাস্থলে যাবো।’
প্রায় এক মাস ধরে কুমিরটি নদীপাড়ের মানুষের মনে আতঙ্কের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। প্রথমে হরিরামপুর উপজেলার বোয়ালী, আইলকুন্ডি, খামারহাটি ও হারুকান্দি ইউনিয়নের তন্ত্রখোলা এলাকায় কুমিরটির দেখা মেলে। পরে সেটি পদ্মার স্রোতে ভেসে সদর উপজেলার হাটিপাড়া ইউনিয়নের চরবংখুড়ি ও চৌকিঘাটা এলাকায় চলে আসে।
স্থানীয়দের অনেকে জানান, গত কয়েক সপ্তাহে তারা একাধিকবার কুমিরটিকে পানির ওপর ভেসে উঠতে দেখেছেন। এতে আশপাশের গ্রামগুলোর মানুষ নদীতে গোসল, মাছ ধরা ও নৌকা চালানো বন্ধ করে দেন।
চরবংখুড়ি গ্রামের বাসিন্দা মো. রফিক বলেন, ‘আমরা নদীতে নামতে ভয় পেতাম। সকালে বা বিকেলে কেউ মাছ ধরতে যেত না। শুনেছি, বড় একটা কুমির ঘুরে বেড়ায় তাই সবাই আতঙ্কে ছিলাম।’
আরও পড়ুন:
কুমির ধরার কাজে অংশ নেয়া স্থানীয় যুবক রাহাত, অন্তর, রাকিব, আল আমিন, সুরুজ ও শাহিন জানান, তারা দীর্ঘদিন কুমিরটির গতিবিধি লক্ষ্য করছিলেন।
রাহাত বলেন, ‘আমরা একমাস ধরে লক্ষ্য করেছি কুমিরটা কোথায় থাকে, কখন ভেসে ওঠে। শুক্রবার সকালে আবার দেখতে পাই। তারপর রাত সাড়ে ৮টার দিকে চৌকিঘাটা এলাকায় পানির ওপর ভেসে উঠলে আমরা দড়ির ফাঁদ পেতে সেটিকে ধরতে সক্ষম হই।’
হরিরামপুর উপজেলা বনকর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘কুমিরটি সম্ভবত পদ্মার মূল ধারা থেকে খাবারের খোঁজে শাখা নদীতে প্রবেশ করে পথ হারিয়ে ফেলেছিল। আমরা কুমিরটির স্বাস্থ্য পরীক্ষা করবো। এটি সুস্থ থাকলে পরে উপযুক্ত স্থানে, সম্ভব হলে সুন্দরবনের সংরক্ষিত এলাকায় অবমুক্ত করা হবে।’
কুমিরটি ধরা পড়ার পর এলাকাবাসীর মধ্যে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেরে। এ খবর ছড়িয়ে পড়তেই আশপাশের কয়েকটি গ্রামের শত শত মানুষ ঘটনাস্থলে ভিড় করেন। কেউ মোবাইলে ভিডিও ধারণ করেন, কেউ আবার সেলফি তোলার চেষ্টা করেন।





