এমন পরিস্থিতিতে আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে আসতে শুরু করেছে ঝুঁকিপূর্ণ বাসিন্দারা। প্রয়োজনীয় ত্রাণ মজুদ ও জেলাশহর সহ জেলার ১০ উপজেলায় প্রস্তত রাখা হয়েছে ২৬৭টি অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত কাপ্তাই হ্রদে চলাচলকারী সব ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ ঘোষণা করেছে জেলা প্রশাসন।
আজ (শুক্রবার, ৩০ মে) দুপুরে ভারী বৃষ্টিপাতে রাঙামাটি সেনাজোনের সামনে একটি কৃঞ্চচুড়া গাছ উপড়ে পড়ায় রাঙামাটি-চট্টগ্রাম সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এসময় বিকল্প সড়কে চলছে যান চলাচল। পরে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা এসে গাছটি অপসারণ করলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
এছাড়া ভারী বৃষ্টিপাতে রাঙামাটি চট্টগ্রাম সড়কে বিভিন্ন স্থানে পাহাড়ধসের ঘটনা ঘটে। তবে সড়ক ও জনপথ বিভাগের কর্মীরা মাটি সরিয়ে নেয়। এর বাইরে ভারী বৃষ্টিপাতে শহরের ভেদভেদি, আনসার ক্যাম্প ও উলুছড়াসহ কয়েকটি স্থানে পাহাড় ধসে বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে এসব ঘটনায় কোন হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
রাঙামাটি পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডের ২৯টি ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা চিহ্নিত করা হয়েছে এবং ২০টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এসব এলাকায় ৫ হাজার পরিবারে অন্তত ২০ হাজার মানুষ রয়েছেন। জেলার সদরসহ ১০ উপজেলায় কতো সংখ্যক মানুষ পাহাড়ধসের ঝুঁকিতে রয়েছেন সে তথ্য পাওয়া যায়নি।
২৬ মে আবহাওয়া অধিদপ্তর রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি, বান্দরবান, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলার পাহাড়ি এলাকায় কোথাও কোথাও ভূমিধসের সতর্কবার্তায় জারি করে। এর পরেই মাঠে নামে রাঙামাটি জেলা প্রশাসন।
রাঙামাটি আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ক্যাচিংনু মারমা জানিয়েছে, রাঙামাটিতে টানা ভারী বৃষ্টিপাতে গত ২৪ ঘণ্টায় ১৪০.২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। ভারী বৃষ্টিপাত বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত পাহাড় ধসের আশঙ্কা রয়েছে।
রাঙামাটি জেলা প্রশাসক হাবিব উল্লাহ বলেন, 'দুর্যোগ পরিস্থিতিতে আমাদের প্রায়োরিটি হচ্ছে মানুষের জীবন বাঁচানো। পাহাড় ধস কিংবা প্রাকৃতিক দুর্যোগে আমাদের একটি মানুষেরও জীবনহানি না হয়। জীবন নিয়ে তারা সংশয়ে না পড়েন। আমাদের কর্মকর্তারা মাঠ পর্যায়ে সার্বক্ষণিক খোঁজখবর রাখছেন।'
আপদকালীন পরিস্থিতির জন্য জেলায় ২৬৭টি অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তত ও ১ হাজার ৩০০ মেট্রিক টন চাল এবং নগদ ১৫ লক্ষ টাকা মজুত রাখার কথা জানিয়েছে জেলা প্রশাসন।