চাঁদাবাজির সময় আটককৃতদের ছিনিয়ে নিতে অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের ওপর হামলা

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেন
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেন | ছবি: সংগৃহীত
0

নরসিংদী পৌর শহরের আরশিনগর মোড়ে অটোরিকশা চালকদের কাছ থেকে টোল আদায়ের সময় পুলিশ সদস্যরা দু'জনকে হাতেনাতে আটক করলে পুলিশের ওপর হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা। হামলাকারীরা আটককৃত চাঁদাবাজদের ছিনিয়ে নিতে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. আনোয়ার হোসেনের ওপর মারধর চালায় এবং আটককৃত ২ জনকে ছিনিয়ে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ পুলিশের।

আজ (শনিবার, ৪ অক্টোবর) দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ভুক্তভোগী অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আনোয়ার হোসেন। এর আগে, বেলা ১১ টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। তবে হামলাকারীদের নাম, পরিচয় এখনো জানা যায়নি।

পুলিশের দাবি, স্ট্যান্ড থেকে টাকা আদায় অবৈধ। স্ট্যান্ডের ইজারাদারের লোকজনই এ হামলা চালিয়েছে। অপরদিকে, ইজারাদারের দাবী, প্রায় ২৭ লাখ টাকা খরচ করে তিনি স্ট্যান্ড ইজারা নিয়েছেন এবং এখানে কোন হামলার ঘটনা ঘটেনি ।

আরশিনগর স্ট্যান্ডের ইজারাদার আলমগীর হোসাইন দাবি করেন, মারধরের ঘটনাটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। ওনি (এএসপি) নিজেই পড়ে গিয়ে ব্যথা পেয়েছেন। মারধরের কোন ঘটনাই ঘটেনি। এছাড়া আমাদের ইজারা বৈধ। আমার কাছে সব কিছুর ডকুমেন্ট আছে।

আরও পড়ুন:

পুলিশের অভিযোগ , শনিবার সকালে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেনের নেতৃত্বে আটজন পুলিশ সদস্য নরসিংদী সদর উপজেলার বীরপুর এলাকায় একটি লাশ উদ্ধারের ঘটনায় পরিদর্শনে যান। সেখান থেকে ফেরার পথে আরশিনগর মোড়ে তারা দেখতে পান, কয়েকজন ব্যক্তি অটোরিকশা ও সিএনজি চালকদের কাছ থেকে একটি রিসিটের বিনিময়ে টাকা আদায় করছে। এ সময় পুলিশ দুইজনকে হাতেনাতে আটক করলে পেছন থেকে অন্য চাঁদাবাজরা হামলা চালায়। হামলাকারীরা আনোয়ার হোসেনের ঘাড়, পা ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে এবং আটক দুজনকে ছিনিয়ে নিয়ে যায়।এ ঘটনায় আরও কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হন। স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে নরসিংদী সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন।

নরসিংদী সদর হাসপাতালের আবাসিক কর্মকর্তা ডা. ফরিদা গুলশানা কবির জানান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেন হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নেন। তার ঘাড় ও পায়ে আঘাতজনিত রক্ত জমাট বেঁধেছে। প্রয়োজনীয় পরীক্ষা শেষে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘বীরপুর এলাকা থেকে ফেরার পথে দেখি কয়েকজন চলন্ত গাড়ি থেকে চাঁদা তুলছে। জিজ্ঞাসা করতেই তারা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। মুহূর্তের মধ্যে ৪০ থেকে ৫০ জন মিলে মব তৈরি করে আমার ওপর হামলা চালায়। আমি অজ্ঞান হয়ে পড়েছিলাম। আমি পড়ে গেলে লাথি, কিল ও ঘুষি মারে। পরে স্থানীয়রা উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে।’

হামলায় কারা জড়িত—এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আরশিনগর মোড়ের পাশে সিএনজি স্টেশনের ইজারাদার দাবী করা লোকজনই হামলা চালিয়েছে এবং আটককৃত দুজনকে ছিনিয়ে নিয়েছে। হাইকোর্ট থেকে রাস্তায় চাঁদাবাজি করতে নিষেধাজ্ঞাও রয়েছে।’

ইএ