দেশের বড় অংশের জীবন-জীবিকার মাধ্যম কৃষি। মূলত বীজ, সার, কীটনাশক কেনা, সেচব্যবস্থা স্থাপন এবং অন্যান্য কৃষি বিষয়ক সরঞ্জামাদি কেনার জন্য ঋণ নেন কৃষক ও উদ্যোক্তারা। সময়ের সাথে সাথে এ খাতে নতুন উদ্যোক্তা তৈরি হওয়ায় বাড়ছে ঋণের চাহিদা। যদিও কৃষিঋণ বিতরণে অনীহা বেড়েছে ব্যাংকগুলোর। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সবশেষ হালনাগাদে দেখা যায়, গত এক মাসের ব্যবধানে কৃষিঋণ বিতরণ সামান্য বাড়লেও অর্থবছরের ব্যবধানে কৃষিঋণ বিতরণ কমেছে এক হাজার কোটি টাকার বেশি।
আজ (মঙ্গলবার, ১২ আগস্ট) নতুন অর্থবছরের কৃষিঋণ বিতরণের নীতিমালা ঘোষণা করে বাংলাদেশ ব্যাংক। যেখানে বলা হয়, কৃষি ঋণ বিতরণ ও তদারকিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে আরও বেশি জোর দেওয়া হচ্ছে। সেইসাথে ব্যাংকগুলোকে স্বেচ্ছায় খাতটিতে গুরুত্ব দিতে বলা হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘আমাদের এমপ্লয়মেন্ট এখনো ৪০ শতাংশের মতো। এটা আমাদের একটা ব্যর্থতা। কারণ আমরা এখনো গ্রাম থেকে জনগোষ্ঠীকে ইন্ডাস্ট্রিয়ালাইজেশন বা সার্ভিস ওরিয়েন্টেড সেক্টর ইত্যাদিতে নিতে পারিনি।’
সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বন্যা ও বৃষ্টির কারণে কৃষকরা ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হলেও ঋণ পরিশোধ অব্যাহত রেখেছেন। এতে ঋণ বিতরণ কমলেও বেড়েছে আদায়। গভর্নর বলেন, ‘প্রকৃত কৃষক বা উদ্যোক্তা ইচ্ছাকৃত খেলাপি হয় না। এক্ষেত্রে কৃষি ঋণ বিতরণ ও তদারকিতে বাংলাদেশ ব্যাংক আরও জোর দিচ্ছে।’
ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘এগ্রিকালচার প্রাইজ স্ট্যাবিলিটি খুব দরকার। ৪০ শতাংশ যেটা আমরা বলছি তার একটা বড় অংশ নন ফার্ম এক্টিভিটির সাথে জড়িত।’
আরও পড়ুন:
চলতি অর্থবছরে কম সুদে কৃষকদের হাতে ঋণ পৌঁছাতে ক্ষুদ্র ঋণদাতা সংস্থা- এমএফআই ওপর বেসরকারি ব্যাংকের নির্ভরশীলতা আরও কমিয়ে আনা হচ্ছে। আর এ জন্য ব্যাংকের নিজস্ব নেটওয়ার্কের মাধ্যমে অন্তত ৫০ শতাংশ কৃষিঋণ বিতরণ বাধ্যতামূলক করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক, যা এতদিন ছিল ৩০ শতাংশ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘স্ট্যান্ডার্ড ল্যান্ডিং প্রসেসের সাথে মেলানো যাবে না। একটা ক্রপ যদি আমার মিনিমাম ৪ মাস লাগে ১২০ দিনের নিচে কোনো ধান আসবে না। ক্রপ সাইকেল যদি ৪ মাস হয় তাহলে সাথে বিক্রি করার জন্য আরও দুই মাস ময় দিতে হবে। তাহলে ৬ মাসে একটা ক্রপ সাইকেল আমি করতে পারি।’
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী, ব্যাংকগুলোকে মোট ঋণের মধ্যে নূন্যতম ২ শতাংশ কৃষিঋণ বিতরণ করতে হয়। কোনো ব্যাংক লক্ষ্য পূরণে ব্যর্থ হলে ওই ব্যাংককে জরিমানা গুনতে হয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর জানান, দেশের ইনস্যুরেন্স কোম্পানিগুলোর এ নিয়ে কাজ করার সক্ষমতা নেই।