যুক্তরাষ্ট্রের চালানো হামলার আগে নাতাঞ্জ ও ইসফাহানে হামলা চালিয়েছে ইসরাইল। এখন প্রশ্ন হলো এই তিনটি পারমাণবিক স্থাপনাকেই কেনো টার্গেট করলো যুক্তরাষ্ট্র। কী আছে ইরানের এসব পারমাণবিক কেন্দ্রে, যার কারণে ইসরাইলের সঙ্গে যোগ দিয়ে সরাসরি হামলা চালিয়েছে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
নাতাঞ্জ
রাজধানী তেহরানের প্রায় ২৫০ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত নাতাঞ্জ পারমাণবিক স্থাপনা। এটিকে ইরানের বৃহত্তম ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ স্থাপনা হিসেবে বিবেচনা করা হয়। অলাভজনক নিউক্লিয়ার থ্রেট ইনিশিয়েটিভের মতে, নাতাঞ্জের মাটির উপরে ছয়টি ভবন এবং ভূগর্ভে আরও তিনটি কাঠামো রয়েছে। যেখানে ৫০ হাজার ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ যন্ত্র সেন্ট্রিফিউজ ধারণে সক্ষম।
আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা-আইএইএ’র তথ্য অনুসারে, নাতাঞ্জে ২০০৩ সাল থেকে কাজ চলছে। যেখানে ৬০ শতাংশ বিশুদ্ধ ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করার কাজ চলে। তবে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরিতে ৯০ শতাংশ বিশুদ্ধ ইউরেনিয়াম প্রয়োজন হয়। যা থেকে যুক্তরাষ্ট্র-ইসরাইল দাবি করে আসছে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির খুব কাছাকাছি রয়েছে ইরান।
ফোর্দো
তেহরান থেকে প্রায় ১৪০ কিলোমিটার দক্ষিণে কওম শহরে অবস্থিত ফোর্দো পারমাণবিক স্থাপনা। পাহাড়ের গভীরে অবস্থিত গোপন ও কড়া সুরক্ষা বলয়ে থাকা এই পারমাণবিক স্থাপনা নিয়ে এখনও অনেক কিছু অজানা। ইসরাইলি গোয়েন্দা সংস্থা কর্তৃক বহু বছর আগে চুরি করা ইরানি নথিপত্রের তথ্য বরাতে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের তথ্য বলছে, ফোর্দো আনুমানিক প্রায় ৩ শ’ ফুট গভীরে। যার কারণে আকাশ থেকে হামলা চালিয়ে স্থাপনাটি ধ্বংস করা খুব কঠিন। যুক্তরাষ্ট্রের হামলার পর ফোর্দো পারমাণবিক স্থাপনা তেমন ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি বলে দাবিও করছে ইরান।
নিরপেক্ষ বিজ্ঞান ও আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা ইন্সটিটিউটের তথ্য অনুসারে, ফোর্দো পারমাণবিক জ্বালানি সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্রের সক্ষমতা অনেক। সেখানে চাইলে ৬০ শতাংশ সমৃদ্ধ ইউরেনিয়ামকে তিন সপ্তাহের মধ্যে ২৩৩ কেজি পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির গ্রেডে রূপান্তর করা সম্ভব। যা নয়টি পারমাণবিক অস্ত্রের জন্য যথেষ্ট।
ইসফাহান
এখন আসা যাক, ইরানের মধ্যাঞ্চলে অবস্থিত পারমাণবিক স্থাপনা ইসফাহান। এখানে রয়ছে দেশের বৃহত্তম পারমাণবিক গবেষণা কমপ্লেক্সও। এনটিআইয়ের তথ্য অনুযায়ী, এই স্থাপনাটি চীনের সহায়তায় নির্মাণ করা হয়েছিলো। আর এটি চালু হয় ১৯৮৪ সালে। যেখানে প্রায় তিন হাজার বিজ্ঞানী কাজ করেন। একে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির ‘কেন্দ্রস্থল’ বলে ধারণা করা হয়। রয়েছে চীনের সরবরাহ করা তিনটি ছোট গবেষণা চুল্লিও।